সংবাদ সংস্থা মুম্বই: গত সোমবার সাড়ে ছ'টা নাগাদ প্রয়াত হয়েছেন কিংবদন্তি পরিচালক শ্যাম বেনেগাল। সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিক ঘটক, মৃণাল সেনের পর ভারতীয় অন্যধারার ছবিতে সম্ভবত তাঁর-ই নাম সবচেয়ে বেশি আলোচিত। 'অঙ্কুর' থেকে শুরু করে 'মন্থন', 'নিশান্ত'-ভারতীয় সমান্তরাল ছবির মালায় একের পর এক বহুচর্চিত মুক্তো গেঁথে গিয়েছেন শ্যাম। তবে জানেন কি, এই তিনি-ই ভারি 'হিংসে' করতেন নিজের আত্মীয় তথা আরেক ভারতীয় কিংবদন্তি পরিচালক-অভিনেতা গুরু দত্তকে? এ কথা আর কেউ নয়, এক সাক্ষাৎকারে নিজেই কবুল করেছিলেন খোদ শ্যাম!

 

শ্যাম বেনেগালের ঠাকুমার আপন বোন ছিলেন গুরু দত্তের দিদা। সেই হিসাবে পরস্পরের তুতো ভাই ছিলেন গুরু-শ্যাম। যখন ছবি তৈরির স্বপ্ন নিয়ে মুম্বইয়ে পা রেখেছিলেন শ্যাম, তাঁর দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন 'পিয়াসা'র পরিচালক। গুরুর পরিচালনার আঙ্গিক যে তাঁর কাজকে প্রভাবিত করেছিল, সে কথা একাধিকবার নানা সাক্ষাৎকারে স্বীকার করেছেন শ্যাম। সেই সাক্ষাৎকারেও করেন। তবে পাশাপাশি নিজস্ব ছন্দে গুরু দত্তের প্রসঙ্গে বলে উঠেছিলেন, " আমি ওকে শ্রদ্ধা করতাম। আবার হিংসেও করতাম। হ্যাঁ হিংসে করতাম! কারণ পরিচালক হিসেবে ওঁর যা সাফল্য ছিল তা দেখে আমার হিংসে হত। একজন ছবি নির্মাতা হিসাবে ওঁর ছবি নিয়ে নানা কাটাছেঁড়া করতাম কিন্তু ওঁর যা সাফল্য, জনপ্রিয়তা ছিল তা দেখে সম্মান না করেও পারতাম না। খুব অস্থির ধরনের শিল্পী ছিল ও। ক্রমাগত কিছু না কিছু নতুনত্ব আনতে চাইত নিজের কাজে।"

 

এখানেই না থেমে গুরু দত্তের সমন্ধে শ্যাম আরও বলেন, " ছবিতে ওঁর নতুন কোনও এক্সপেরিমেন্ট আশা অনুযায়ী কাজ না করলেও হাল ছাড়ত না কখনও। এই নতুন কিছু করার প্রসঙ্গে উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, 'সাহেব বিবি গুলাম'-এর মতো যেমন দারুণ ছবি বানিয়েছিলেন গুরু, আবার ওঁরই তৈরি 'কাগজ কা ফুল' কিন্তু সাফল্যের মুখ দেখেনি"।

 

প্রসঙ্গত, ভারতকে অন্য চোখে দেখা, স্বাধীনতা পরবর্তী ভারতের নতুন করে গড়ে ওঠা, তার ওঠাপড়া, এবং প্রান্তীয় মানুষ থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্তরের মানুষের মধ্যেকার সম্পর্কের জটিলতা, সবই উঠে এসেছিল শ্যাম বেনেগালের বিভিন্ন ছবিতে।