আজকাল ওয়েবডেস্ক: চলতি বছরের মার্চ মাসে একটি বেসরকারি চ্যানেলের ভুয়ো নথি, স্ট্যাম্প, লোগো ব্যবহার করার অভিযোগে এফআইআর দায়ের করা হয় পরিচালক রাজর্ষি দে’র বিরুদ্ধে। ফেডারেশন অফ সিনে টেকনিশিয়ান্স এবং ওয়ার্কার্স অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়ার সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসের নামে টাকা তোলার অভিযোগও ওঠে পরিচালকের নামে। অভিযোগ ওঠে অভিনেত্রী নুসরত জাহানের সই নকল করার। সেই সময় এই সমস্ত অভিযোগ আনেন প্রযোজক অরিন্দম ঘোষ। 

 
সেই সময় অভিযোগ প্রসঙ্গে রাজর্ষি দে আজকাল ডট ইন-কে বলেন, “এত বছর টলিউডে কাজ করছি, আজ পর্যন্ত আমার বিরুদ্ধে কোনও জালিয়াতির অভিযোগ পাওয়া যায়নি। সিনেমা বানাতে গিয়ে টাকার অভাব থাকলে বাড়ির গয়না বেচেও টেকনিশিয়ানদের বকেয়া পারিশ্রমিক মিটিয়েছি। কিন্তু কোনওদিন কারওর দিকে অভিযোগের আঙুল তুলিনি। একটাই প্রশ্ন রয়েছে, অরিন্দমের দেওয়া ৭৩ লক্ষ টাকার চেক বাউন্স হয়েছে দু'বার। যার জেরে ছবির শুটিং আটকে। এদিকে, এই কথা প্রযোজককে জানানোর পর একটা মিটিং ডাকেন তাঁরা। যেখানে আমি থাকতে পারিনি ব্যক্তিগত কারণ বশত। বারবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনও উত্তর মেলেনি। এরপরেই আমার বিরুদ্ধে উল্টো অভিযোগ আসতে শুরু করেছে।”

 আরও পড়ুন: প্রজনন নিশ্চিত করতে দিনে ৪০ বার সঙ্গম! রাজা ক্লান্ত হলেও জোর করে বাধ্য করেন রানি, কোন রাজ্যের ঘটনা?
নুসরতের সই জাল করার অভিযোগ প্রসঙ্গে রাজর্ষি দে আরও বলেন, “আমার কাছে যে ডকুমেন্ট আছে, সেখানে লেখা রয়েছে, নুসরতের সঙ্গে ১০ লক্ষ টাকার চুক্তি হয়। ৯ লক্ষ টাকা তাঁকে দেওয়া হয়েছে। ১ লক্ষ দেওয়া হয়নি। আর এই ডকুমেন্ট ইম্পা এবং ফেডারেশনের কাছেও মেল মারফত পাঠানো হয়েছে। যে চুক্তির কথা আপনি বলছেন, সেটায় ১৫ লক্ষ টাকার বিষয়টি ভুল ছিল। এটা ইম্পাকেও জানানো হয়েছে।”


এবার সেই মামলার প্রসঙ্গে ফের বিবৃতি দিলেন পরিচালক। এদিন একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন রাজর্ষি। সেখানে তিনি লিখেছেন, “সম্প্রতি আমাদের আসন্ন চলচ্চিত্রকে কেন্দ্র করে শ্রী অরিন্দম ঘোষের দ্বারা একটি প্রথম সারির বাংলা বিনোদন চ্যানেলকে দেওয়া নথিপত্রের ভিত্তিতে যে মামলা দায়ের করা হয়েছিল, সেই সংক্রান্ত সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর পরিপ্রেক্ষিতে এই চিঠি।

পুলিশি তদন্তে পর এটি সুনিশ্চিতভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে, চ্যানেল এবং অন্যান্য কর্তৃপক্ষকে দেওয়া চুক্তির যে সমস্ত নথি আসল বলে দাবি করা হয়েছিল, সেগুলি আসল নয়। আমাদের ছবিতে অসাধারণ অভিনেতা অভিনেত্রী এবং কলাকুশলীরা কাজ করেছেন। ছবিটিকে জোর করে এমন অপ্রয়োজনীয় বিতর্কে জড়ানো অনভিপ্রেত এবং দুর্ভাগ্যজনক।

আমাদের মনে হয়, শ্রী ঘোষ ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন, সেকারণে সম্ভবত ইন্ডাস্ট্রিরই দুই-তিনজন বিশিষ্ট ব্যক্তির দ্বারা তিনি ভুল পথে চালিত হয়েছিলেন।

পাশাপাশি, এটাও মাথায় রাখবেন যে, এই বিতর্কে যাঁর নাম উঠে এসেছিল, সেই শুক্লা হাজরা কোনও বিষয়ের সঙ্গেই যুক্ত নন। তিনি এই প্রকল্পে কেবল একজন কার্যনির্বাহী প্রযোজক হিসেবে কাজ করেছেন।

আমি এও জোর দিয়ে বলতে চাই যে, আমার পূর্ববর্তী চলচ্চিত্র ‘সাদা রঙের পৃথিবী’, যেটি সম্পূর্ণ সততার সঙ্গে নির্মিত এবং সফলভাবে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি ছবি, সেটিকেও অযৌক্তিক ভাবে এই বিতর্কে টেনে আনা হয়েছে। প্রযোজকরাও এই বিষয়টি উল্লেখ করে চ্যানেল কর্তৃপক্ষকে মেল করেছেন।

এখন আমাদের একমাত্র লক্ষ্য ছবিটির কাজ শেষ করে সেটিকে মুক্তি দেওয়া এবং শ্রী ঘোষের থেকে আর কোনওরকম অর্থসাহায্য না নিয়েই তাঁর বিনিয়োগের টাকা ফেরত দেওয়া। আমার অজ্ঞাতসারে যদি অন্য কোনও মামলা থেকে থাকে, সেক্ষেত্রে আমার বিচার ব্যবস্থার উপর গভীর আস্থা রয়েছে এবং আমি নিশ্চিত যে সুবিচার হবেই।”

এর পর ‘কলকাতা পুলিশ, বিধাননগর পুলিশ,
ফেডারেশন অফ সিনে টেকনিশিয়ান্স অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া, EIMPA, ডিরেক্টরস অ্যাসোসিয়েশন, সংবাদমাধ্যম, ছবির কলাকুশলী, আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা, ফ্লিক্সবাগ-এর প্রতিষ্ঠাতা দেবপ্রিয় চক্রবর্তীকে’ তাঁদের আস্থা এবং সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন রাজর্ষি।