গত ২৪ নভেম্বর, মুম্বইয়ের নিজের বাসভবনে প্রয়াত হয়েছেন বর্ষীয়ান অভিনেতা ধর্মেন্দ্র। তাঁর ৯০তম জন্মদিনের ঠিক কয়েক সপ্তাহ আগে। ৩০০-রও বেশি ছবিতে অভিনয় করা এই কিংবদন্তি অভিনেতাকে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভর্তি করা হয়েছিল মুম্বইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতাল-এ। ১২ নভেম্বর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর প্রথম দিকে তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছিল বলেই মনে করেছিলেন পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু আচমকাই তাঁর অবস্থার অবনতি ঘটে এবং শেষ পর্যন্ত মৃত্যু হয় তাঁর।

 

ধর্মেন্দ্রর শেষকৃত্যর আয়োজন করা হয়েছিল অত্যন্ত ব্যক্তিগত পরিসরে। তবে বুধবার, ৩ ডিসেম্বর, উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বারের হর কি পৌড়ি ঘাটে গঙ্গায় সম্পন্ন হয় তাঁর অস্থি বিসর্জন। এই শ্রদ্ধা নিবেদন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তাঁর দুই পুত্র সানি দেওল ও ববি দেওল, সঙ্গে ঘনিষ্ঠ পরিবারের সদস্যরা।

 

এই অস্থি বিসর্জনের সময়ের একটি ভিডিও ঘিরেই এখন চরম বিতর্ক নেটপাড়ায় । ভাইরাল হওয়া সেই ভিডিওতে দেখা যায়, গোপনে ভিডিও করার অভিযোগে এক পাপারাজ্জির কাছে দৌড়ে যান ক্ষুব্ধ সানি দেওল। রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে তিনি ওই চিত্রগ্রাহকের দিকে এগিয়ে গিয়ে ক্যামেরা কেড়ে নেন এবং প্রশ্ন করেন। ভিডিওতে শোনা যাচ্ছে সানিকে বলতে,“টাকা চাই তো? কত টাকা চাই তোর?”

 

 

 

 

 

উল্লেখযোগ্যভাবে, পাপারাজ্জিদের বিরুদ্ধে সানির ক্ষোভ এই প্রথম নয়। এর আগেও বাবার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর তাঁর জুহুর বাড়ির সামনে ভিড় জমিয়ে ক্রমাগত ছবি ও ভিডিও তোলার ঘটনায় সাংবাদিকদের উপর রীতিমতো চটে গিয়েছিলেন তিনি। তখন খোলাখুলি ভাষায় তাঁদের ভর্ৎসনাও করেন অভিনেতা। সেই সময় সানি বলেছিলেন,“আপনারা কি নিজেদের বাড়িতে মা-বাবা, সন্তান নেই? এইভাবে ভিডিও করছেন, পাঠাচ্ছেন, লজ্জা হয় না?” সঙ্গে গালাগালিও দিয়েছিলেন! এই বাক্যগুলি তখনও যথেষ্ট বিতর্ক তৈরি করেছিল। তবে নেটপাড়ার অধিকাংশ বাসিন্দারাই সানির পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। 

 

ধর্মেন্দ্রর শেষকৃত্যে বলিউডের প্রায় গোটা ইন্ডাস্ট্রিই উপস্থিত ছিল। শেষযাত্রায় তাঁকে শেষ বিদায় জানাতে এসেছিলেন অমিতাভ বচ্চন, অগস্ত্য নন্দা, দীপিকা পাড়ুকোন, রণবীর সিং, অনিল কাপুর, জ্যাকি শ্রফ, সলমন খান, আমির খান, সেলিম খান,  শাহরুখ খান, সহ বহু তারকা।প্রয়াত অভিনেতার স্মৃতিতে দুটি প্রার্থনাসভা আয়োজন করা হয়। একটি তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী হেমা মালিনী আয়োজন করেন মুম্বইয়ের নিজের বাড়িতে, যেখানে ভজন ও ভগবদ্গীতার পাঠ হয়। অন্যটি আয়োজন করেন ছেলে সানি ও ববি দেওল, মুম্বইয়ের তাজ ল্যান্ডস এন্ড হোটেলে।

শ্রদ্ধা, শোক ও ব্যক্তিগত মুহূর্ত সব কিছুর মাঝেই পাপারাজ্জিদের ভূমিকা ঘিরে যে প্রশ্ন উঠেছে, তা শুধুই সানি দেওলের ক্ষোভ নয়, বরং তারকাদের ব্যক্তিগত পরিসরের সীমা নিয়েও নতুন করে বিতর্ক উস্কে দিল।


অন্যদিকে, জয়া বচ্চনের সঙ্গেও বিতর্কে জড়িয়েছেন মুম্বইয়ে পাপারাজ্জিরা। তাঁদের নিয়ে জয়ার করা একটি মন্তব্যে বেজায় চটেছে পাপারাজ্জির দল। একটি অনুষ্ঠানে কথোপকথনের সময় জয়ার কাছে প্রশ্ন রাখা হয় পাপারাজ্জিদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে। উত্তরে তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, তাঁর সঙ্গে পাপারাজ্জিদের সম্পর্ক “শূন্য”। জয়া বলেন, “আমি মিডিয়ারই তৈরি।  আমি তো মিডিয়া থেকেই এসেছি। আমার বাবা ছিলেন সাংবাদিক। এমন মানুষের প্রতি আমার অগাধ শ্রদ্ধা রয়েছে। আর এরা কারা? এরা কি এই দেশের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করার মতো প্রশিক্ষিত? এদের আপনি মিডিয়া বলেন?”কিন্তু এই বক্তব্যের পরেই জয়া যা বলেন, তা নিয়েই শুরু হয় তীব্র বিতর্ক। তিনি বলেন,“কিন্তু বাইরে যারা ড্রেনপাইপ টাইট, নোংরা প্যান্ট পরে, হাতে মোবাইল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে, তারা ভাবে হাতে শুধু মোবাইল থাকলেই যে কারও ছবি তুলতে পারে, যা খুশি বলতে পারে। কী ধরনের মন্তব্য করে এরা! এরা কারা? কোথা থেকে আসে? কী শিক্ষা? কোন পরিবেশ থেকে উঠে আসে?”

বর্ষীয়ান অভিনেত্রীর এই মন্তব্যে স্বাভাবিকভাবেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন পাপারাজ্জিরা। তারপরেই অমিতাভ-পত্নীকে বয়কট করার ডাক দিয়েছেন একাধিক পাপারাজ্জি।