নিজের শহরেই চরম হেনস্থার মুখে পড়লেন অভিনেত্রী সুদীপা চট্টোপাধ্যায়। অ্যাপ-ক্যাবে উঠে ছেলেকে নিয়ে দাদার বাড়ি যাওয়ার পথে ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার সম্মুখীন। অ্যাপে গন্তব্যে ‘স্টপেজ’ যোগ করা নিয়ে চালকের সঙ্গে সামান্য তর্ক যে মুহূর্তে শুরু হয়, তা দ্রুতই রূপ নেয় বড়সড় সংঘাতে।
সুদীপার অভিযোগ, হিন্দিভাষী ওই চালক প্রথমে তাঁকে অপমানজনক, অশ্রাব্য ভাষায় আক্রমণ করেন। এরপর পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক হয়ে ওঠে—চালক নাকি নির্ধারিত পথ এড়িয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন অন্য এক অচেনা দিকে। অভিনেত্রীর দাবি, পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ হয়ে উঠেছিল যে তিনি এবং তাঁর ছেলে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
আজকাল ডট ইন-কে সুদীপা বলেন, “আগামী কাল আমি পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেব। আজই আমার যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এই ঘটনার পর আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। ব্লাড প্রেশার বেড়ে যায়, মাথা ঘোরায়। যার ফলে আজ আমি সারাদিন বিশ্রাম নিয়েছি। কাল অবশ্যই যা করণীয়, তা করব।”
ঘটনার পর স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্কিত সুদীপার ছেলে আদিদেব। তবে ভয়কে জেতার পাঠই তাকে পড়িয়েছেন অভিনেত্রী। জানিয়েছেন, পরিস্থিতি যতই কঠিন হোক, ভয় নয়—সাহসই জীবনে পথ দেখায়। তাঁর কথায়, “আদিদেবকে আমি বলেছি, অন্যায় দেখতে প্রতিবাদ করতে হবে। ভয় পেলে চলবে না। ওকে সারা জীবন এটাই শেখাব। আজও একদম অন্যান্য দিনের মতো ওকে স্কুলে পাঠিয়েছি। যেন কিছুই হয়নি।”
সুদীপা জানান, নিজের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা সকলের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার পরেও কটাক্ষের মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে। অনেকেই উল্টে তাঁরই আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, যেন ভুক্তভোগী হয়েও তাঁকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হচ্ছে। অভিনেত্রী বলেন, “অনেকেই আমায় বলছেন, কেন আমি ওই চালকের গায়ে হাত তুলেছি। আমার প্রশ্ন, সেই পরিস্থিতিতে আমি কী করতাম? উনি গাড়িটিকে অন্য কোথাও নিয়ে চলে যাচ্ছিলেন। কোনও কথাই শুনছিলেন না। এদিকে গাড়ির প্যানিক বোতামও কাজ করছিল না। আত্মরক্ষার স্বার্থে আমার যা করার হয়, করেছি।”
এখানেই শেষ নয়। সুদীপার অভিযোগ, বারবার তিনি বাংলায় কথা বললেও চালক জোর করে তাঁকে হিন্দিতে কথা বলতে বাধ্য করতে চাইছিলেন, জানিয়ে যে তিনি বাংলা জানেন না। এই আচরণে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বলে দাবি অভিনেত্রীর। তিনি বলেন, “অন্য রাজ্য থেকে আসা মানুষদের প্রতি আমার কোনও বিদ্বেষ নেই। কিন্তু বাংলায় কাজ করতে এসে ন্যূনতম বাংলা কেন জানবে না? অন্যান্য রাজ্যে এরকম করা যায়? আসলে আমরা বড্ড সহনশীল হয়ে পড়েছি। এটাই সমস্যা।”
