এই সময়ে দাঁড়িয়ে যখন বাংলা চলচ্চিত্রে প্রায়শই দেখা যায় ছকবাঁধা গল্প, নির্দিষ্ট বিনোদন ফর্মুলা, তখন সেই গতানুগতিক ধারার ঠিক বিপরীতে হেঁটেছে ‘পক্ষীরাজের ডিম’। এই ছবি যেন একেবারে অন্যরকম। স্বপ্ন আর বাস্তবতার সীমারেখা মুছে দিয়ে তৈরি হয়েছে এক রহস্যে মোড়া জগৎ—যেখানে ছোটদের মতো বড়রাও খুঁজতে থাকেন সেই অলীক পক্ষীরাজের ডিম! এই সিনেমা শুধুমাত্র শিশুদের জন্য নয়—বরং এমন এক অভিজ্ঞতা যা প্রাপ্তবয়স্কদের মনেও নাড়া দেয়। ছবির কাহিনি, আবহ এবং ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর—সবটাই তৈরি করে এক ঘোরের জগৎ।এই ছবি দেখার পর মনে পড়ে যায় ছোটবেলার স্বপ্নগুলো, যেগুলো হয়তো হারিয়ে গিয়েছিল ব্যস্ত জীবনের চাপে। এই ছবি মনে করিয়ে দেয়—স্বপ্ন দেখার কোনও বয়স হয় না।

 

 

ইতিমধ্যেই সিনেমাপ্রেমীদের মতে, এ ছবি নিঃসন্দেহে ২০২৫-এর অন্যতম সেরা সাহসী বাংলা ছবি। তাহলে কি আসবে ‘পক্ষীরাজের ডিম’-এর সিক্যুয়েল তথা রেনবো-জেলি ইউনিভার্সের তিন নম্বর ছবি? আর সে ছবি তৈরি হলেও কী হবে তার প্রেক্ষাপট? পরিচালক সৌকর্য ঘোষালের কাছে প্রশ্ন রেখেছিল আজকাল ডট ইন। 

 

 

 

রাখঢাক না রেখে, অকারণে আলো-আঁধারি মন্তব্য না করে নিজস্ব ছন্দে সৌকর্য বললেন, “আমার তো ভীষণ ইচ্ছে এই ইউনিভার্সের তিন নম্বর ছবিটা বানানোর। সেই ইঙ্গিতও দিয়ে রেখেছি ‘পক্ষীরাজের ডিম’-এর একেবারে শেষে। তবে ইঙ্গিত আছে বলেই সেই ছবির গল্পকে আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের প্রেক্ষাপটেই নিয়ে গিয়ে ফেলব, সেরকম কোনও মানে নেই। কিন্তু ‘আকাশগঞ্জ’ তো থাকবেই।”

 

 

সামান্য থেমে সৌকর্য অবশ্য মনে করিয়ে দিলেন – “তবে সবটাই নির্ভর করছে দর্শকের চাহিদার উপরে। ওঁরা ‘রেনবো জেলি’ ভালবেসেছিলেন বলেই ‘পক্ষীরাজের ডিম’ তৈরি করার সাহস এবং তাগিদ দু’টোই পেয়েছিলাম। এই ছবিকেও ভালবাসলে ‘পক্ষীরাজের ডিম’-এর সিক্যুয়েলও বানাব। তবে এক্ষুনি নয়। কারণ, ঘোঁতন-পপিন্স ততদিনে আরও একটু হয়তো বড় হয়ে যাবে, তাঁদের সম্যক উপযোগী চিত্রনাট্যও তো বুনতে হবে। মাথায় ছক একটা কাটা আছে অবশ্য...দেখা যাক।”

 

 

‘ঘোঁতন’ তথা ছবির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অভিনেতা মহাব্রত বসু এ প্রসঙ্গে বললেন, “ ‘ঘোঁতন’ চরিত্রটার মধ্যে খানিক নিজেকে খুঁজে পাই। আমি তো অভিনয় করতে বেশ উৎসাহী। ‘পক্ষীরাজের ডিম’ ছবিতে শুটিং এক মন ভাল করা অভিজ্ঞতা আমার কাছে। তাই ‘ঘোঁতন’-কে যদি আবার পর্দায় ফেরানোর পরিকল্পনা করা হয়, আমি তো ভীষণই আগ্রহী হব। খুব ভাল লাগবে যদি ‘পক্ষীরাজের ডিম’-এর সিক্যুয়েল হয়।”

 

 

‘পপিন্স’ ওরফে অনুমেঘা ব্যানার্জি অল্প কথায় বললেন, “অভিনয় মন্দ লাগে না। যখন ‘রেনবো জেলি’-তে অভিনয় করেছিলাম, কিছুই বুঝতাম না। এখন অল্প বড় হয়েছি, তাই সামান্য বোঝার চেষ্টা করি। দাদা, মানে সৌকর্য ঘোষাল হাতে ধরে আমাদের অভিনয় শিখিয়েছেন। অবশ্য এখন পড়াশোনার উপরেই আমার বেশি ফোকাস। তবে, হ্যাঁ যদি ঘোঁতন-পপিন্সকে ফের পর্দায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়, খুব খুশি হব।”