সংবাদসংস্থা মুম্বই: জনপ্রিয় টিভি শো 'ভাবিজি ঘর পর হ্যায়'-এ শিল্পা শিন্ডে সেই শো ছেড়ে দেওয়ার পর, শুভাঙ্গী আত্রে সেই চরিত্রে অভিনয় শুরু করেন। সম্প্রতি প্রাক্তন প্রয়াত স্বামী পীযূষ পুরির সাথে তাঁর বিচ্ছেদ এবং কীভাবে তাঁর মদের প্রতি আসক্তি তাঁদের পারিবারিক জীবনে প্রভাব ফেলেছিল সে সম্পর্কে কথা বলেছেন। 

 

তিনি জানান, "এই সিদ্ধান্ত বেদনাদায়ক ছিল। আমি এই সম্পর্কের মধ্যে সম্পূর্ণ ডুবে গিয়েছিলাম। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে, পীযূষ এবং আমার মধ্যে মতপার্থক্য তৈরি হয় যার সমাধান সূত্র পাওয়া যায়নি ৷"


চলতি বছর এপ্রিলে পীযূষ মারা যান। শুভাঙ্গীর সঙ্গে তাঁর সংসারজীবন মোটেই সুখের ছিল না‌। আর্থিক অনটনের মধ্যে দিয়েও যেতে হয়েছিল তাঁদের। এই বিষয়ে এক সাক্ষাৎকারে শুভাঙ্গী বলেন, "বিয়ের মাত্র সাত দিনের মাথায় আমি কাজ শুরু করি‌। কারণ, অভাবের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলাম। তাই বাধ্য হই সংসারের হাল ধরতে।"

 

আরও পড়ুন: 'মস্তি ৪'-এ একফ্রেমে রিতেশ-জেনেলিয়া? এবার দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রিতে পাড়ি রাঘব জুয়ালের!


অভিনেত্রী জানান, তিনি খুব অল্প বয়সে মা হয়েছেন। এই বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে শুভাঙ্গী বলেন, "আমরা ভালবেসে বিয়ে করেছিলাম। খুব তাড়াতাড়ি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ি। আমার সৌভাগ্য কন্যা সন্তানের মা হতে পারাটা। কিন্তু প্রথমদিকে, মেয়েকে নিয়ে কাজ করতে খুব অসুবিধায় পড়েছিলাম‌‌। কী করব, কোন দিকে যাব, কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। তবে ধীরে ধীরে সবটাই অভ্যাস হয়ে যায়।"


অভিনেত্রী তাঁর কথাও এও উল্লেখ করেন যে পীযূষ কলেজে পড়ার সময় থেকেই মদ্যপান শুরু করেছিলেন এবং তাদের বিয়ের ১৭ বছর ধরে সেই অভ্যাস আসক্তিতে পরিণত হয়। তার আসক্তি তাকে এবং তাদের মেয়েকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করতে শুরু করার পরে তিনি ২০২০ সালে বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

 

সিদ্ধার্থ কান্নানের সঙ্গে কথোপকথনে শুভাঙ্গী স্বীকার করেছেন যে স্কুলজীবন থেকেই পীযূষকে চিনলেও তিনি তার আসক্তির তীব্রতা সম্পর্কে অবগত ছিলেন না। তিনি বলেন, "বিয়ের পর পীযূষের মদ্যপানের নেশার কথা জানতে পারি।" বিয়ের কয়েক বছর পরে, শুভাঙ্গী বুঝতে পারেন, যে আসক্তি আরও খারাপ হচ্ছে। তবে আশায় ছিলেন যে যেহেতু তিনি সঙ্গে আছেন তইা হয়তো তিনি এসব ছেড়ে দেবেন। তিনি বলেন, "বিয়েটা সফল করার চেষ্টা করেছিলাম। আমরা ১৭ বছর একসঙ্গে ছিলাম। আমি তখন কাজে ব্যস্ত ছিলাম। বুঝতে পারিনি যে পরিস্থিতি কখন খারাপ হতে শুরু করেছিল। আমার মেয়ে আশি আমাকে তার মদ্যপানের অভ্যাস সম্পর্কে বলত এবং মদ্যপানের পরে সে খিটখিটে হয়ে যেত সেগুলো বলত। চোখ খুলে দেওয়ার মুহূর্তটি ছিল কোভিডের সময় যখন আমি বাড়িতে ছিলাম এবং আমি নিজে চোখে দেখেছি সেগুলো।" 

 

শুভাঙ্গী অভিনয় করছেন প্রায় ১৭ বছর ধরে। টেলিভিশনে প্রথমবার তাঁকে দেখা যায় একতা কাপুরের ধারাবাহিক ‘কসৌটি জিন্দেগি কে’-তে।একতা কাপুরের অপর এক ধারাবাহিক ‘কস্তুরী’-তে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। সেই চরিত্রের জন্য একাধিক পুরস্কার পেয়েছেন শুভাঙ্গী। কিন্তু দেশজোড়া খ্যাতি এনে দিয়েছে ‘আঙুরি ভাবি’ চরিত্রটিই। শুভাঙ্গী মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরের মেয়ে। অভিনয়ের পাশাপাশি পড়াশোনাতেও কম যান না অভিনেত্রী। ‘এমবিএ’ বা ‘মাস্টার্স ইন বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ ডিগ্রি রয়েছে তাঁর।কেন এত জনপ্রিয় তাঁর চরিত্রটি? সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে শুভাঙ্গী জানিয়েছেন, টিভিতে গৃহবধূদের কান্না দেখতে দেখতে দর্শক ক্লান্ত, তাই হয়তো হাস্যরসে মন মজেছে তাঁদের।