রাজকুমার হিরানির বিখ্যাত ছবি ‘থ্রি ইডিয়টস’ আজ পূর্ণ করল দীর্ঘ ১৬ বছর। সময় যতই গড়িয়েছে, ছবির জনপ্রিয়তা, আবেগ আর প্রভাব যেন আরও গভীর হয়েছে দর্শকের মনে। আর ঠিক এই সময়েই ফের জোরালো হয়েছে সিক্যুয়েলের জল্পনা। শোনা যাচ্ছে, নির্মাতারা নাকি ভাবছেন ব়্যাঞ্চো, রাজু ও ফারহানের বন্ধুত্বের সেই জাদু বড়পর্দায় ফের একবার ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে। অর্থাৎ আমির খান, আর মাধবন, শরমন যোশী ও করিনা কাপুর খানকে একসঙ্গে দেখা যেতে পারে এ ছবির সিক্যুয়েলে। তবে এই খবরে কতটা সত্যি?
প্রশ্নটা যখন সরাসরি করা হলো শরমন যোশীকে, অভিনেতার সোজা জবাব “আমি সত্যিই চাই এটা হোক। কিন্তু এখনও আমাকে অফিসিয়ালি কিছু জানানো হয়নি।”
তিনি আরও যোগ করেন,“এর আগেও একাধিকবার খবর উঠেছিল যে ‘থ্রি ইডিয়টস ২’-র নাকি প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। শেষবার তো দেখা গেল সেটা আসলে একটা বিজ্ঞাপনের জন্য। দেখাই যাক, এবার সত্যি হয় কি না, আশা রাখছি।” তাহলে কি ছবির গল্প এগোনোর জায়গা এখনও আছে? এ প্রশ্নে শরমনের পরিষ্কার উত্তর, এই সিদ্ধান্ত নির্মাতা ও লেখকদের। তাঁর কথায়, “এটা একমাত্র জানেন রাজু স্যার, অভিজাত স্যার এবং আমির। যদি গল্পে সম্ভাবনা থাকে, তাঁরাই জানবেন।”
২০০৯ সালের এই ছবির কথা উঠতেই অভিনেতার কণ্ঠে ধরা দেয় কৃতজ্ঞতা ও আবেগ। তিনি বলেন, “এই অসাধারণ ছবির অংশ হতে পেরে আজও কৃতজ্ঞ। সেই সময়টা রূপকথার মতো মনে হয়। গল্প শোনার দিন থেকে আজ পর্যন্ত।”
মজার তথ্যও শেয়ার করেছেন শরমন। জানান, তাঁর ২০০১ সালের জনপ্রিয় ছবি ‘স্টাইল ’-ই নাকি তাঁকে এনে দেয় ‘থ্রি ইডিয়টস’। রাজকুমার হিরানি সেই ছবিতে তাঁকে দেখে মনে রেখেছিলেন, এবং সুযোগ এলেই কাস্ট করতে চেয়েছিলেন। ছবির সবচেয়ে আলোচিত দৃশ্যগুলির একটি রাজুর আত্মহত্যার দৃশ্য নিয়েও কথা বলেন শারমান। সেই দৃশ্যের আবেগ ও দর্শকের উপর তার প্রভাবের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন,“দৃশ্যটা এতটাই বাস্তব লাগছিল যে বহু মানুষ সত্যি ভেবেছিলেন আমি হয়তো আঘাত পেয়েছি। এমনকী আমার পরিবারকেও ফোন করে খোঁজ নিয়েছিলেন অনেকে। আমার চার বছরের মেয়েও প্রিমিয়ার শো-তে কেঁদেই চলেছিল, যতক্ষণ না আমি ওকে জড়িয়ে ধরি।”
১৬ বছর পরেও ‘থ্রি ইডিয়টস’ তাই শুধু একটা সিনেমা নয়, এটা বন্ধুত্ব, চাপের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর সাহস, জীবনের ভেতরের আনন্দ খুঁজে পাওয়ার গল্প। তাই সিক্যুয়েলের গুঞ্জন উঠল মানেই দর্শকের উচ্ছ্বাস চূড়ায় ওঠা স্বাভাবিক। এখন বলিউডের একটাই প্রশ্ন, এই জল্পনা কি সত্যিই বাস্তব হবে? না কি আবারও এটা শুধু গুঞ্জনই থেকে যাবে? উত্তর দেবে সময়। কিন্তু স্মৃতির অ্যালবামে ‘থ্রি ইডিয়টস’-এর জাদু আজও অমলিন।
