ওসমান শরিফ হাদির মৃত্যুর পর কার্যত জ্বলছে বাংলাদেশ। ১৮ ডিসেম্বর রাতে একদিকে ভাঙচুর করে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয় দুই নামী সংবাদমাধ্যমের অফিসে, আরেকদিকে ভাঙচুর চলে মুজিবর রহমানের ধানমন্ডির বাড়িতে। ভালুকায় এক হিন্দু যুবককে বেধড়ক পিটিয়ে, গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। জনরোষের হাত থেকে বাদ যায়নি ছায়ানট। বাংলাদেশের এই ছবি, ভিডিও বর্তমানে সমাজমাধ্যমে ভাইরাল। তারপরই এদিন ছায়ানটের একটি ছবি শেয়ার করে এক বিশেষ উপলব্ধির কথা লিখলেন মেখলা দাশগুপ্ত। 

'কেন রোদের মতো হাসলে না' গায়িকা মেখলা দাশগুপ্ত এদিন ফেসবুকের পাতায় ব্যথিত হৃদয়ে লেখেন, 'বালুরঘাটের স্বাধীনতা দিবস ১৮ই আগস্ট । তার আগে পূর্ব পাকিস্তানে ছিল। কি ভাগ‍্যিস ভারতে অন্তর্ভুক্তি হয়েছিল! মাত্র কিছু কিলোমিটারের দূরত্ব। একটু এদিক ওদিক হলে বাংলাদেশে জন্মাতাম! এই জন্মের মতো বেঁচে গেছি মনে হচ্ছে।' 

তিনি এদিন তাঁর পোস্টে আরও লেখেন, 'আমরা নানা সময় আমাদের দেশের নানা বিষয় নিয়ে সমালোচনা করি। কিন্তু এই ধরণের ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে যায়, আমাদের আইন, আমাদের দেশের মানুষ অনেক অনেক অনেক গুণে ভাল। ভারত বলেই আমরা সরাসরি প্রতিবাদ করার স্বাধীনতা পাই — দু’বার ভাবি না। দাঙ্গার নামে বারেবারে, নানা অছিলায় বাদ্যযন্ত্র, বই, ভাস্কর্য এসব নষ্ট করা হয় না।' সারেগামাপা খ্যাত গায়িকার কথায়, 'আমাদের ধর্মে মূর্তি পুজো করে তা বিসর্জন দেওয়া হয়, কোনও কিছু স্থায়ী নয়, এটা বোঝানোর জন‍্য। আমাদের ধর্ম পশু,পাখি, গাছপালা, নদ-নদী, পাহাড় — এই সব কিছুকে দেবতা জ্ঞানে পুজো করার কথা বলে। কেউ কোথাও নেই , তোমার মধ্যেই সব, আবার এই কথাও বলে। আমাদের ধর্মীয় গুরুরা সঙ্গীতকে সাধনা, অর্থাৎ ঈশ্বরকে পাওয়ার সর্বোচ্চ পথ হিসেবে দেখিয়ে গেছেন।'

কেবল মেখলা নন, ছায়ানট ভাঙচুর হওয়ার পর সমাজমাধ্যমে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বাংলাদেশি সায়ন অর্ণব চৌধুরীও। সায়ন তাঁর পোস্টে লেখেন, 'আমাদের সক্রিয় ভাবে অংশ নিতে হবে, ভোট দিতে হবে। নইলে আমরা, সংগীতশিল্পীরা বিপদে পড়ব। দেখুন ওরা ছায়ানটের কী হাল বানিয়েছে। আমরা একমাত্র যেভাবে লড়াই করতে পারি সেটা হল ভোট দিয়ে, এবং বাকিদের এই একই কাজ (ভোট দিতে) করতে উৎসাহ দিতে।'