আজকাল ওয়েবডেস্ক: ফের আইনি সংঘাতে শাহরুখ খান এবং মাদক নিয়ন্ত্রক সংস্থা (এনসিবি)-র প্রাক্তন কর্তা সমীর ওয়াংখেড়ে। নেটফ্লিক্সের ওয়েব সিরিজ ‘ব্যা*ডস অফ বলিউড’-এ তাঁর ভাবমূর্তি কলুষিত করা হয়েছে, এই অভিযোগে শাহরুখের প্রযোজনা সংস্থা ‘রেড চিলিজ এন্টারটেনমেন্ট’, নেটফ্লিক্স-সহ অন্যান্য ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছিলেন সমীর। সেই মামলার প্রেক্ষিতেই বুধবার শাহরুখের সংস্থা-সহ বাকি বিবাদী পক্ষকে তলব করল দিল্লি হাইকোর্ট।

আদালত বিবাদী পক্ষকে সাত দিনের মধ্যে তাদের জবাব দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছে। মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে আগামী ৩০ অক্টোবর। আদালত সমীর ওয়াংখেড়েকে তাঁর আবেদনের প্রতিলিপি বিবাদী পক্ষকে সরবরাহ করতেও নির্দেশ দিয়েছে।
আরও পড়ুন: পুরুষরা অন্তর্বাস কিনছেন? না একটিই দিনের পর দিন পরছেন? সেটাই বলে দিতে পারে অর্থনীতির অবস্থা! কীভাবে?

শাহরুখ খান এবং গৌরী খানের মালিকানাধীন রেড চিলিজ এন্টারটেনমেন্ট ছাড়াও নেটফ্লিক্সকে এই মামলায় বিবাদী করা হয়েছে। ওয়াংখেড়ে তাঁর আবেদনে ওয়েব সিরিজটির সম্প্রচার ও পরিবেশনা বন্ধ করার জন্য স্থায়ী স্থগিতাদেশ চেয়েছেন। পাশাপাশি, ২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের দাবিও করেছেন তিনি। আবেদনে জানিয়েছেন, ক্ষতিপূরণের সেই অর্থ তিনি ক্যানসার রোগীদের চিকিৎসার জন্য টাটা মেমোরিয়াল ক্যানসার হাসপাতালে দান করতে চান।
ওয়াংখেড়ের দাবি, “এই সিরিজটি মাদক-বিরোধী সংস্থাগুলির একটি বিভ্রান্তিকর এবং নেতিবাচক চিত্র তুলে ধরেছে, যা আইন প্রয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের উপর সাধারণ মানুষের আস্থা নষ্ট করবে।” তাঁর আরও অভিযোগ, বম্বে হাইকোর্ট এবং মুম্বইয়ের বিশেষ এনডিপিএস আদালতে তাঁর এবং আরিয়ান খান সম্পর্কিত মামলাগুলি এখনও বিচারাধীন থাকা সত্ত্বেও, “ইচ্ছাকৃতভাবে এবং পক্ষপাতদুষ্ট ভাবে সমীর ওয়াংখেড়ের সম্মানহানি করার জন্যই” এই সিরিজটি তৈরি করা হয়েছে।
মামলায় আরও অভিযোগ করা হয়েছে যে, শো-এর একটি দৃশ্যে ‘সত্যমেব জয়তে’ বলার পর একটি চরিত্রকে কুরুচিকর অঙ্গভঙ্গি করতে দেখা গিয়েছে। ওয়াংখেড়ের মতে, এটি ‘জাতীয় সম্মান অবমাননা প্রতিরোধ আইন, ১৯৭১’-এর পরিপন্থী। তিনি আরও দাবি করেন যে, এই বিষয়বস্তু তথ্যপ্রযুক্তি আইন এবং ভারতীয় ন্যায় সংহিতার বিভিন্ন ধারা লঙ্ঘন করেছে।

বিতর্কের সূত্রপাত ঠিক কোথা থেকে? ‘ব্যা*ডস অফ বলিউড’ সিরিজের প্রথম পর্বেই দেখা যায়- একজন চেঁচামেচি করা অফিসার, নিজেকে ‘ড্রাগ-বিরোধী যুদ্ধের সৈনিক’ বলে পরিচয় দিচ্ছেন। তিনি নাকি ‘এনসিজি’-র সঙ্গে যুক্ত, বলিউডের পার্টিতে ঢুকে অভিনেতাদের ড্রাগস সংস্কৃতি নিয়ে তোপ দাগছেন। কিন্তু আসল বিস্ফোরণ ঘটায় তাঁর লুক। সাদা শার্ট, কালো ট্রাউজার, হেয়ারস্টাইল- সবকিছুই নাকি ওয়াংখেড়ের হুবহু প্রতিরূপ। যদিও কোনও জায়গায় তাঁর নাম ব্যবহার করা হয়নি, তবুও অভিনেতার সঙ্গে সমীরের চেহারার মিল দেখে হাসিতে ফেটে পড়েছিল নেটপাড়া।

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে প্রমোদতরীতে মাদক-কাণ্ডে শাহরুখ-পুত্র আরিয়ান খানকে গ্রেফতার করেছিলেন তৎকালীন এনসিবি কর্তা সমীর ওয়াংখেড়ে। পরবর্তীকালে, ২০২৩ সালের মে মাসে সিবিআই স্বয়ং ওয়াংখেড়ের বিরুদ্ধেই মামলা দায়ের করে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, আরিয়ানকে মামলা থেকে নিষ্কৃতি দেওয়ার জন্য তিনি শাহরুখ খানের কাছ থেকে ২৫ কোটি টাকা ঘুষ আদায়ের চেষ্টা করেছিলেন। যদিও ওয়াংখেড়ে বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছেন এবং এটিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছেন।