দক্ষিণী সিনেমার ইতিহাসে প্রতিবারই নিজের পরিচালনার মাধ্যমে নতুন মাত্রা যোগ করেন ‘বাহুবলী’ ও ‘আরআরআর’ ছবির নির্দেশক এস. এস. রাজামৌলি। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। বহু প্রতীক্ষিত মহেশ বাবুর পরবর্তী ছবির আভাস দিলেন পরিচালক, তাতেই উত্তেজনা তুঙ্গে। এতদিন ছবিটি এসএসএমবি ২৯ (SSMB29) নামে পরিচিত হলেও, অবশেষে মিলল নাম—‘গ্লোব ট্রটর’।

 

শনিবার, ৯ আগস্ট, দক্ষিণী তারকা মহেশ বাবুর জন্মদিনের দিনই নিজের এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেন রাজামৌলি। তাতে লেখা—

 

 

 “প্রিয় সিনেমাপ্রেমীরা, ভারত ও বিশ্বের নানা প্রান্তে থাকা মহেশের অনুরাগীরা, আমরা বেশ কিছুদিন ধরে শুটিং করছি। আপনাদের আগ্রহ আমরা বুঝতে পারছি। কিন্তু এই ছবির কাহিনি ও পরিধি এত বিশাল যে, কেবল কয়েকটি ছবি বা সাংবাদিক সম্মেলনে তার ন্যায্যতা দেওয়া কিংবা প্রকাশ করা সম্ভব নয়। আমরা এখন এমন কিছু প্রস্তুত করছি, যা এই ছবির সারবস্তু, গভীরতা ও ডুবে থাকার মতো এক জগৎকে তুলে ধরবে। নভেম্বর ২০২৫-এ তা উন্মোচিত হবে—এবং আমরা চেষ্টা করছি, যেন এটি হয় এক ‘নেভার-বিফোর-সিন’ মুহূর্ত।”

 

 

পোস্টের সঙ্গে শেয়ার করা হয়েছে এক রহস্যময় ছবি—নায়কের মুখ আড়ালে, তবে রক্তে ভেজা বুক স্পষ্ট। গলায় ঝুলছে শিবের লকেট। এই সামান্য ইঙ্গিতেই ভক্তরা শুরু করে দিয়েছেন জল্পনা—গল্পে কি তবে থাকছে পুরাণের ছোঁয়া না কি এটি অ্যাকশন-অ্যাডভেঞ্চারের এক মহাকাব্য?

 

 

প্রত্যাশার চূড়ান্তে ‘গ্লোব ট্রটর’! মহেশ বাবু-রাজামৌলির জুটি এই প্রথম, আর তাই ছবিটি ঘিরে প্রত্যাশা আকাশছোঁয়া। শোনা যাচ্ছে, ছবির শুটিং বিভিন্ন মহাদেশে হবে, অ্যাকশন সিকোয়েন্স ও ভিএফএক্সের পরিধি হবে আন্তর্জাতিক মানের।

 

রাজামৌলি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, আগামী বছরের নভেম্বরেই হবে প্রথম বড় উন্মোচন। অর্থাৎ, আগামী কয়েক মাস ধরে চলবে রহস্য ও প্রত্যাশার খেল।

 

সিনেমাপ্রেমীদের চোখ এখন একটাই তারিখে—নভেম্বর ২০২৫, যখন ‘গ্লোব ট্রটর’-এর অজানা দুনিয়ার দরজা প্রথমবার খুলে যাবে।

 

'আরআরআর’-এর বিশ্বজোড়া সাফল্যের পর আবার বাজিমাৎ করতে চলেছেন এস এস রাজামৌলি! এবার তাঁর পরবর্তী ধামাকা ‘এসএসএমবি২৯’—যেখানে একসঙ্গে জুটি বাঁধছেন মহেশ বাবু, প্রিয়াঙ্কা চোপড়া জোনাস আর পৃথ্বীরাজ সুকুমারন। এই প্রকল্প একেবারেই সাধারণ নয়, বরং রাজামৌলির স্বপ্নের ক্যানভাসে আঁকা এক ভিস্যুয়াল ব্লকবাস্টার হতে চলেছে বলেই খবর।

 

 খবর, ইতিমধ্যেই দু’টি বড়সড় শুটিং শিডিউল শেষ হয়েছে। এখন চলছে তৃতীয় শিডিউলের তোড়জোড়, আর সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ—বারাণসীর সেট! তবে বাস্তব বারাণসীতে নয়, হায়দরাবাদের রামোজি ফিল্ম সিটিতেই গড়ে তোলা হচ্ছে বিশালাকায় ‘বারাণসী’, তাও প্রায় ৫০ কোটি টাকা খরচ করে! কারণ? নির্মাতাদের মতে, ভিড়ে ঠাসা বারাণসীর মত শহরে এরকম তারকাদের শুটিং করা একেবারে অসম্ভব।

 

 এই বিশাল সেটে শুট হবে একাধিক অ্যাকশন সিকোয়েন্স। আর রাজামৌলির ট্রেডমার্ক ভিএফএক্স, গ্রিন স্ক্রিন এবং হলিউডি টেকনোলজি তো থাকবেই। একাধিক নামজাদা আন্তর্জাতিক গ্রাফিক্স স্টুডিও এই প্রকল্পে যুক্ত হয়েছে। গোটা ছবির বাজেটের একটা বড় অংশই গ্রাফিক্সের পেছনে খরচ করা হচ্ছে বলে খবর।

 

এছাড়াও, ইতিমধ্যেই ওড়িশায় শুটিং শেষ হয়েছে। এখন টিম প্রস্তুত হচ্ছে আন্তর্জাতিক শিডিউল-এর জন্য। জুলাই মাসে শুটিং হবে কেনিয়ায়। প্রাকৃতিক জঙ্গলের পটভূমিতে শ্যুট হবে মহেশ বাবু আর প্রিয়াঙ্কার গুরুত্বপূর্ণ দৃশ্য।

 

 

আর এই ছবি ঘিরে অন্যতম বড় আকর্ষণ হল প্রিয়াঙ্কা চোপড়া জোনাসের ছয় বছর পর ভারতীয় সিনেমায় প্রত্যাবর্তন! ‘দ্য স্কাই ইজ পিঙ্ক’ (২০১৯)-এর পর প্রিয়াঙ্কাকে বড়পর্দায় দেখা যায়নি। আর সেই কামব্যাক যদি হয় রাজামৌলির সিনেমায়, তাহলে তার প্রতি আগ্রহ তুঙ্গে ওঠাটাই স্বাভাবিক।