গত ২৩ নভেম্বর চার হাত এক হওয়ার কথা ছিল ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের তারকা স্মৃতি মান্ধানা ও সঙ্গীত পরিচালক পলাশ মুচ্ছলের। বেশ কয়েকদিন ধরে তাঁদের বিয়ে নিয়ে ভক্তদের উচ্ছ্বাস ছিল তুঙ্গে। কিন্তু বিয়ের আগেই ঘটে চলেছে একের পর এক বিপর্যয়। দুই পরিবারেই তৈরি হয়েছে কঠিন পরিস্থিতি। বিয়ের সমস্ত পরিকল্পনা আপাতত স্থগিত রাখতে হয়েছে। স্মৃতি মান্ধানা ও সঙ্গীত পরিচালক পলাশ মুচ্ছলের এই বিয়ে স্থগিত হওয়ার পর থেকেই গুজবের বাজার যেন আগুন। স্মৃতির বাবার অসুস্থতার জেরে অনুষ্ঠান পিছোনোর খবর সামনে আসতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয়েছে একের পর এক যাচাইহীন দাবি। এর মধ্যেই সবচেয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ-পলাশ নাকি স্মৃতির সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। অর্থাৎ তাঁদের সম্পর্কে এন্ট্রি নিয়েছে অন্য আরেকজন ললনা! 

 ‘মেরি ডি’কস্তা’ নামে এক ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারী রেডিটে কিছু স্ক্রিনশট শেয়ার করেন, দাবি করা হয় সেগুলি পলাশের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত কথোপকথনের ছবি। যদিও ওই অ্যাকাউন্ট এবং প্রোফাইল ছবি দ্রুত ডিঅ্যাকটিভেট করে দেওয়া হয়েছে, তবুও স্ক্রিনশটগুলি ইতিমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে নানা সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে। ফলত, পলাশকে ঘিরে সন্দেহ এবং চর্চা আরও বেড়েছে।

এই পরিস্থিতিতে পলাশের পাশে দাঁড়ালেন তাঁর তুতো বোন নীতি তাক। ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে একটি পোস্টে তিনি স্পষ্টভাবে অনুরোধ করেছেন, গুজবের ভিত্তিতে যেন কেউ পলাশকে দোষী সাব্যস্ত না করেন। নীতি লেখেন, “আজ পালাশ অত্যন্ত সংকটজনক মানসিক অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। সত্য না জেনে দয়া করে ওকে ভুল ভাববেন না।” পাশাপাশি তিনি যোগ করেন, “প্রযুক্তি আজ মানুষের থেকেও এগিয়ে যাচ্ছে, তাই গুজবের মুখে কাউকে বিচার করা উচিত নয়। ওর জন্য প্রার্থনা করুন।”

বর্তমানে পলাশ মুম্বইয়ের একটি হাসপাতালে ভর্তি। এর কিছুদিন আগে পলাশের দিদি পালকও ইনস্টাগ্রামে বিয়ে স্থগিত হওয়ার খবর নিশ্চিত করে পরিবারের জন্য গোপনীয়তা বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছিলেন। ২৩ নভেম্বর স্মৃতি ও পলাশের বিয়ের দিন ঠিক হয়েছিল।

পলকের পোস্ট অনুযায়ী, স্মৃতির বাবার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিয়ের দিনেই স্মৃতির বাবা শ্রীনিবাস মান্ধানার হৃৎপিণ্ডে সমস্যার উপসর্গ দেখা দেয় এবং তাঁকে সাঙ্গলির সর্বহিত হাসপাতাল ও মেডিক্যাল রিসার্চ সেন্টারে ভর্তি করা হয়। আর এর ঠিক একদিন পরেই পলাশও সাঙ্গলির একটি হাসপাতালে ভর্তি হন। পলাশের মা অমিতা মুচ্ছল সংবাদমাধ্যমকে জানান, স্মৃতির বাবার সঙ্গে পলাশের সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। তাঁর অসুস্থতার খবরে পলাশ মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন এবং বিয়ের কোনও আচার চালিয়ে যেতে চাননি। অমিতার কথায়, অতিরিক্ত মানসিক চাপে কাঁদতে কাঁদতেই পলাশের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়, যদিও সমস্ত মেডিক্যাল রিপোর্ট স্বাভাবিক এসেছে।

এদিকে স্মৃতি নিজের ইনস্টাগ্রাম থেকে সমস্ত বিয়ে সংক্রান্ত পোস্ট মুছে ফেলেছেন, যা নতুন করে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। ২০১৯ সালে সম্পর্কে জড়ানো স্মৃতি ও পলাশ দীর্ঘদিন নিজেদের সম্পর্ক গোপন রেখেছিলেন। চলতি বছরের জুলাই মাসে পাঁচ বছরের সম্পর্ক পূর্তিতে একসঙ্গে ছবি পোস্ট করে তাঁরা প্রথম প্রকাশ্যে আসেন।

এই মুহূর্তে প্রশ্ন একটাই-গুজব আর বাস্তবের মাঝখানে দাঁড়িয়ে এই জুটি কোন দিকে এগোবে, তার উত্তর সময়ই দেবে।