বিতর্কে জড়ালেন 'মির্জাপুর' সিরিজ খ্যাত অভিনেত্রী অভিনেত্রী রসিকা দুগ্গল। সম্প্রতি, রণবীর কাপুর অভিনীত ছবি ‘অ্যানিমাল’ নিয়ে করা এক মন্তব্যের জেরে বিতর্কের কেন্দ্রে উঠে এসেছেন। রসিকা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তিনি এমন কোনও ছবিতে কাজ করবেন না যা নারীবিদ্বেষকে গ্ল্যামারাইজ করে। তাঁর কথায়, নারীবিদ্বেষ উদযাপন করা বা কোনও রকম প্রোপাগান্ডা ছবির অংশ হওয়া তাঁর কাছে ‘আপসহীন বিষয়’। কিন্তু এই মন্তব্যের পরই সামাজিক মাধ্যমে শুরু হয় তীব্র সমালোচনা।

 

নেটিজেনদের একাংশ প্রশ্ন তোলে, রসিকা নিজে তো জনপ্রিয় ওয়েব সিরিজ ‘মির্জাপুর’-এ বীণা ত্রিপাঠীর  চরিত্রে অভিনয় করেছেন, যেখানে তাঁর চরিত্র শ্বশুর ও এক কর্মচারীর সঙ্গে যৌনসম্পর্কে জড়ায়, খুনোখুনি করে এবং প্রবল হিংসাত্মক কাজকর্মে লিপ্ত হয়। তা হলে রসিকার যুক্তি মানলে সেই সিরিজে কাজ করাটা কীভাবে গ্রহণযোগ্য, অথচ ‘অ্যানিমাল’ গ্রহণযোগ্য নয়? অভিনেত্রীর এই এই ‘দ্বিচারিতা’ নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে! 

 

 

 

এই বিতর্কে সরাসরি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন লোকগায়িকা মালিনী অবস্তি। মঙ্গলবার, ২ ডিসেম্বর, এক্স -এ একটি রসিকার করা ওই মন্তব্যের ভিডিও পোস্ট শেয়ার করে মালিনী কটাক্ষ করেন। পোস্টে রসিকা যেখানে বলেছিলেন, নারীবিদ্বেষ  উদযাপন করা তাঁর কাছে আপসহীন বিষয়, সেই বক্তব্য উদ্ধৃত করে মালিনী লেখেন, “মির্জাপুর-এর মিসেস ত্রিপাঠীর মুখে এসব কথা! ডাবল স্ট্যান্ডার্ডের চূড়ান্ত!”

 

অন্যদিকে,ওই অনুষ্ঠানের মঞ্চে কথোপকথনে রসিকা নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছিলেন। তিনি বলেন, অনেক অভিনেতা যুক্তি দেন যে সমস্যাজনক চরিত্রে অভিনয় করাটাও অভিনয়েরই অংশ। অভিনেত্রী জানান, এই প্রসঙ্গে তাঁর রশ্মিকা মন্দানার সঙ্গেও আলোচনা হয়েছিল। রসিকার কথায়, “সমস্যাটা অভিনেতার নয়, বরং নারীবিদ্বেষকে যেভাবে সামাজিক স্বীকৃতি বা সম্মান দেওয়া হয়, সেটাই আসল সমস্যা।”

 

তিনি আরও যোগ করেন, “যে চরিত্রের রাজনীতি আমার সঙ্গে একেবারেই মেলে না, সেই চরিত্রে অভিনয় করতেও আমি আগ্রহী। ওটাই আমার কাছে চ্যালেঞ্জিং। আমি বাস্তবে বীণা ত্রিপাঠী নই। আমি মানুষ খুন করি না বা কাউকে হেনস্থা করি না। নিজের থেকে ভিন্ন মানসিকতার একটি চরিত্রকে বুঝতেই তো আমি অভিনয় করি।”

 

তবে এই বিতর্ক নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও সরাসরি প্রতিক্রিয়া দেননি রসিকা দুগ্গল। উল্লেখ্য, অভিনেত্রীকে শেষ দেখা গিয়েছে ‘লর্ড কার্জন কি হাভেলি’ ছবিতে, যা গত ১০ অক্টোবর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে। রসিকার বক্তব্য কি শিল্পীর ব্যক্তিগত মূল্যবোধের প্রকাশ, না কি শিল্প ও বাস্তবের মধ্যে সুবিধাজনক বিভাজন? আপাতত এই প্রশ্ন ঘিরেই এখন তুঙ্গে বিতর্ক।