সংবাদ সংস্থা মুম্বই: জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও কৌতুকশিল্পী জেমি লিভার নিজের শৈশবের একগুচ্ছ অস্বস্তিকর ও মর্মান্তিক অভিজ্ঞতা নিয়ে মুখ খুললেন সম্প্রতি। এক খোলামেলা সাক্ষাৎকারে তিনি জানালেন, মাত্র ১০ বছর বয়সেই তিনি এমন কিছু পরিস্থিতির মুখোমুখি হন, যা আজও তাঁর মধ্যে একটা অস্পষ্ট ভয় রেখে দিয়েছে—বিশেষত পুরুষদের নিয়ে।

 

 

জেমি লিভার জানান, স্কুল ছুটির পর ড্রাইভার যখন তাঁকে নিয়ে গাড়িতে অপেক্ষা করছিলেন, জেমি তাঁর এক বন্ধুর সঙ্গে পিছনের সিটে গল্প করছিলেন। ঠিক তখনই এক অপরিচিত ব্যক্তি গাড়ির জানলার পাশে এসে দাঁড়ায়। সে অশালীনভাবে আচরণ করতে শুরু করে। তারপর প্যান্টের চেন খুলে হস্তমৈথুন করা শুরু করে!  “ওই ব্যক্তি জানলার ঠিক পেছনে এসে দাঁড়িয়ে… অশ্লীলভাবে আমাকে লক্ষ্য করে হস্তমৈথুন করছিল... যা বোঝার বয়স তখন আমার ছিল না...ওই প্রথমবার কোনও পুরুষাঙ্গ দেখি আমি... খুব ভয় পেয়ে গেছিলাম—ভেবেছিলাম সে দরজা খুলে কিছু করে বসবে।..”— বলেন জেমি। তিনি আরও জানান, সেই সময় দরজা লক করে তিনি ভান করেছিলেন কিছু দেখেননি, যাতে লোকটি চলে যায়। এই ঘটনা তাঁকে ভীষণভাবে নাড়িয়ে দেয়।

 

এর পাশাপাশি স্কুলবাসেই নিরাপত্তাহীনতার কথাও তিনি জানালেন।  জেমি জানান, তাঁর স্কুল বাসের কন্ডাক্টর-ও ছিলেন অত্যন্ত অশালীন ও অসভ্য। তাঁর কথায়, “সে আমাদের অনুচিতভাবে, নোংরাভাবে স্পর্শ করত। আমি এসব ঘটনা মাথা থেকে মুছে ফেলতে চেয়েছি বহুবার… আজও অনেক সময় মনে হয়, সেগুলো বুঝি দুঃস্বপ্ন ছিল। অথচ সবই সত্যি।”

 

এই অভিজ্ঞতাগুলিই তাঁকে পুরুষদের প্রতি একপ্রকার অনাস্থা জন্মাতে বাধ্য করেছিল। “আমি নিজের চারপাশে দেওয়াল তুলে নিয়েছিলাম। আমি কারও সঙ্গে ডেট করিনি বহু বছর। কেবল যখন বিদেশে গিয়েছিলাম ২০ বছর বয়সে, তখন প্রথম সম্পর্কের কথা ভাবতে পারি,” বলেন তিনি। “বাবা-মাকে বলিনি… কারণ আমি নিজেই বুঝিনি” -জেমি  জানান, এই ঘটনাগুলি তিনি কখনওই বলেননি তাঁর বাবা জনি লিভার বা মা সুজাতাকে। কারণ সেই বয়সে তিনি নিজেই ঠিকমতো বুঝতে পারেননি যে, তাঁর সঙ্গে কী ঘটছে।

 

‘হাউজফুল ৪’, ‘ভূত পুলিশ-এর মতো জনপ্রিয় ছবিতে অভিনয় করেছেন। ২০২৪ সালে দক্ষিণী সিনেমায় পা রাখেন, ‘আ ওকাট্টি আদাক্কু’-তে। পাশাপাশি ওয়েব সিরিজ ‘পপ কৌন’-এও দেখা গেছে তাঁকে।

 

জেমি লিভারের এই কনফেশন শুধু ব্যক্তিগত নয়, সামাজিক বার্তা। জেমি লিভারের এই ভাগ করে নেওয়া অভিজ্ঞতা কোনও ‘গসিপ’ নয়—এ এক শক্তিশালী সচেতনতার বার্তা। সমাজে শিশু ও কিশোরীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তোলার দায়িত্ব সকলের। সেই আলোচনার দরজাই খুলে দিলেন জেমি—যেখানে সাহসিকতা মানেই পরিবর্তনের প্রথম ধাপ।