বলি অভিনেতা রণবীর কাপুর বর্তমানে বলিউডের অন্যতম সফল তারকা। কিন্তু সম্প্রতি তিনি জীবনের কিছু বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে নতুন পথে হাঁটছেন। তাঁর আসন্ন ছবি 'রামায়ণ'-এ 'রাম'-এর চরিত্রে অভিনয় করার প্রস্তুতি শুরু করার আগে রণবীর নিজের জীবনযাপনে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছেন। ধূমপান, মদ্যপান ছেড়ে তিনি এখন সম্পূর্ণ নিরামিষভোজী। এই সিদ্ধান্ত শুধু ছবির জন্য নয়, বরং ব্যক্তিগত জীবন, পরিবার এবং স্বাস্থ্যকে কেন্দ্র করে নেওয়া।
 
 সম্প্রতি রণবীর কাপুর এক সাক্ষাৎকারে জানান, জীবনের চল্লিশের কোঠায় এসে তিনি বুঝেছেন সুস্থ থাকা কতটা জরুরি। মেয়ে রাহার জন্ম তাঁর জীবনকে সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছে। রাহার প্রতি দায়িত্ববোধ তাঁকে আরও পরিণত করেছে। তিনি বলেন, এখন তাঁর কাছে সবচেয়ে বড় অগ্রাধিকার হল পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো এবং নিজের শরীর-মন ভাল রাখা। তাই তিনি ধূমপান ও মদ্যপান একেবারে ছেড়ে দিয়েছেন এবং যোগব্যায়াম, ধ্যানকে নিয়মিত জীবনের অংশ করে নিয়েছেন।
বলিউডে চরিত্রে ডুবে থাকার জন্য অনেক তারকাই জীবনযাত্রায় অস্থায়ী পরিবর্তন আনেন। কিন্তু রণবীর কাপুরের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা একেবারেই ভিন্ন। তিনি শুধু সিনেমার চরিত্রের জন্য নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদি সুস্থতা ও মানসিক শান্তির জন্য এই অভ্যাস গড়ে তুলেছেন। ধূমপান ও মদ্যপানের মতো ক্ষতিকর আসক্তি থেকে মুক্ত হয়ে তিনি নিজেকে এক নতুন যাত্রার পথে নিয়ে গেছেন।

 
 রণবীর স্বীকার করেছেন, আগের জীবনযাপনে তিনি অনেকটা অবহেলা করতেন। কিন্তু বাবা হওয়ার পর তাঁর মধ্যে এক ধরনের ভয় কাজ করেছে—সময়ের মূল্য, স্বাস্থ্যের গুরুত্ব এবং পরিবারের প্রতি দায়িত্ববোধ তিনি গভীরভাবে উপলব্ধি করেছেন। এজন্যই তিনি একদিকে ক্ষতিকর অভ্যাসগুলো ত্যাগ করেছেন, অন্যদিকে নিরামিষ খাবার গ্রহণ শুরু করেছেন। এর ফলে শরীর যেমন হালকা লাগছে, তেমনই মানসিকভাবে তিনি আরও স্থির হচ্ছেন।
 
 'রামায়ণ' ছবিতে রামের চরিত্রে অভিনয়ের দায়িত্বও এই পরিবর্তনে বড় ভূমিকা রেখেছে। পবিত্র ও প্রতীকী চরিত্রটিকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে রণবীর চান নিজের ভিতর ও বাইরে একধরনের শুদ্ধতা বজায় রাখতে। ফলে চরিত্রের প্রস্তুতি এবং ব্যক্তিগত জীবন—দুটোই যেন একসঙ্গে নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে।
 
 সব মিলিয়ে বলাই যায়, রণবীর কাপুর এখন শুধু একজন অভিনেতা নন, বরং একজন দায়িত্বশীল বাবা ও পরিণত মানুষ। তাঁর এই জীবনযাত্রার পরিবর্তন বলিউডে এক অনন্য দৃষ্টান্ত। ধূমপান-মদ্যপান ত্যাগ, নিরামিষভোজ, যোগ-ধ্যান—সবকিছু মিলিয়ে তিনি এক স্বাস্থ্যকর, ভারসাম্যপূর্ণ ও ইতিবাচক জীবনের পথে পা বাড়িয়েছেন। আর এই পরিবর্তন নিঃসন্দেহে তাঁর অভিনয়জীবন ও ব্যক্তিগত জীবনে সমানভাবে প্রভাব ফেলবে।
