বাঙালিদের যে গানগুলি প্রেমে পড়তে শেখায়, সেখানে এখনও অবলীলাক্রমে জায়গা করে নেয় 'এক্স= প্রেম', কিংবা 'সুইটহার্ট'। আর ৯০-এর দশকের ছেলেমেয়েদের কাছে এই গানগুলি কী, সেটা আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখে না। এঁদের বেড়ে ওঠার সঙ্গীই হল চন্দ্রবিন্দু, শিলাজিতের গান। দু'টো একেবারেই ভিন্ন ধারার সঙ্গীত। আর এই ভিন্ন ধারার দুই সঙ্গীত এবার একত্রে আসছে এক মঞ্চে! হ্যাঁ, শহর প্রস্তুত হচ্ছে সমস্ত হিসাব গুলিয়ে, 'এক্স=প্রেম'-এর বদলে, 'এক্স=জুজু'র সুরে, তালে মেতে ওঠার জন্য। তার আগে আজকাল ডট ইন-এর মুখোমুখি হলেন অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় এবং শিলাজিৎ মজুমদার। 

বছরের গোড়ার দিকে 'চন্দ্রবন্ধু' নামক এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল চন্দ্রবিন্দু। সেখানে তাঁদের ব্যান্ডের গানের পাশাপাশি, তাঁদের বন্ধুরা যেমন রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায়, সিধু, প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন মঞ্চে। গানে, গল্প, আড্ডায় জমে উঠেছিল সন্ধ্যা। বছর ফুরানোর আগে, আবারও এক অন্য ধরনের কোল্যাব। বারবার এমন উদ্যোগের কারণ জানতে চাইলে অনিন্দ্য বলেন, "ভাবনাটা আমাদের যতটা না, তার থেকে অনেক বেশি উদ্যোক্তাদের। ওরাই এই অনুষ্ঠানটার আয়োজন করছে। এর আগে ওরা কবীর সুমন এবং অঞ্জন দত্তের একটি শোয়ের আয়োজন করেছিল। সেই অনুষ্ঠানটা আমি দেখতে গিয়েছিলাম, ভাল লেগেছিল। তারপরের শো হিসেবে ওরাই চন্দ্রবিন্দু এবং শিলাজিৎকে বেছে নিয়েছে।  আমরা এবং শিলাজিৎ একসঙ্গে এক মঞ্চে অনুষ্ঠান করেছি, এমন তো অনেকই হয়েছে। কিন্তু, এখানে বিশেষ যেটা হবে, শিলাজিৎ এবং চন্দ্রবিন্দু কোল্যাব করবে। অর্থাৎ মিলেমিশে কিছু একটা করবে। কিছুটা অংশ। এর আগে দুই-একবার একসঙ্গে মঞ্চ শেয়ার করলেও, এবার একটু অন্যরকম ভাবে ভাবছি।" কিন্তু এই অন্যরকম ভাবনাটা কী? গায়কের কথায়, "মানুষ তো দীর্ঘদিন ধরে আমাদের গান শুনছে, শিলাজিতেরও গান শুনছে। যখন এই দু'টো স্টাইল একসঙ্গে এসে মেশে, বা এর গান ও গাইছে এমনটা হয়, তখন সেটা একটা অন্যরকম ভ্যালু যোগ করে।"

বিষয়টা বিস্তারিত জানিয়ে শিলাজিৎ মজুমদার বলেন, "আমরা একে অন্যের কিছু গান গাইব। একসঙ্গে কিছু গান গাইব। আপাতত এরম পরিকল্পনা রয়েছে।" ফলে শ্রোতারা যে এদিন শিলাজিতের কণ্ঠে চন্দ্রবিন্দুর গান শুনবেন এবং উল্টোটা, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। 

এমন একটা অভিনব অনুষ্ঠান নিয়ে কী মত শিলাজিতের? গায়কের কথায়, ''ভীষণ ভাল লাগছে। আমরা চট করে স্টেজ শেয়ার করতে পারি না। হয় না। ওদের সঙ্গে স্টেজ শেয়ার করেছি প্রায় ২০-২৫ বছর আগে। আমাদের সঙ্গীতের ধরন, দু'টো একে অন্যের থেকে ভীষণ আলাদা। সেই জায়গা থেকে আমাদের যাঁরা কমন শ্রোতারা আছেন, যাঁরা বাংলা গান শোনেন, এবং আমাদের গান শুনেছেন তাঁদের কাছে এই সন্ধ্যাটা দুই ধরনের গান শোনার একটা সুযোগ। তাছাড়া আমরা যেটা পরিকল্পনা করেছি সেটার অভিজ্ঞতাও চট করে হয় না।"

আগামী ২২ নভেম্বর 'জুজু'র মুখোমুখি হবে 'এক্স'! নজরুল মঞ্চে বিকেল সাড়ে চারটে থেকে শুরু হবে এই অনুষ্ঠান। ফলে হাতে আর মাত্র সাতদিন। শ্রোতাদের থেকে কেমন সাড়া পাচ্ছেন? প্রশ্ন শুনেই শিলাজিৎ জানান, "এখনও পর্যন্ত সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে যেটা জানতে পারছি, প্রচুর টিকিট বিক্রি হয়ে গিয়েছে। মানুষের আগ্রহ রয়েছে এই শোটা নিয়ে। বাকি টিকিট দ্রুত বিক্রি হচ্ছে। হাতে এখনও কিছুটা সময় আছে। দেখা যাক।" অন্যদিকে অনিন্দ্য বলেন, "লোকজন অনুষ্ঠানটা নিয়ে দারুণ উৎসাহী। চন্দ্রবিন্দুর কিছু অনুরাগী আছে, শিলাজিতেরও অনেক অনুরাগী আছে। ফলে আমার মনে হয়, দু'জনেরই অনুরাগীরা দারুণ উত্তেজিত এমন একটা অনুষ্ঠান নিয়ে। তবে এই গোটা জিনিসটার কৃতিত্ব কিন্তু উদ্যোক্তাদের।"