'সোয়েটার', 'সূর্য', 'হৃদপিণ্ড'র মতো একাধিক ছবি উপহার দিয়েছেন শিলাদিত্য মৌলিক। টলিউডের এ হেন খ্যাতনামা পরিচালকের পরিবারের অকস্মাৎ নেমে এসেছে শোকের ছায়া। কাছের মানুষকে হারালেন শিলাদিত্য। বাবার মৃত্যু সংবাদ পেয়ে তড়িঘড়ি কাজ ফেলে শহরে ফিরছেন।

খবরের সত্যতা যাচাই করতে আজকাল ডট ইন শিলাদিত্য মৌলিকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান ৫ নভেম্বর সকালে তাঁর বাবা তথাগত মৌলিক প্রয়াত হয়েছেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।  


কী ঘটেছিল জানতে চাইলে শিলাদিত্য জানান, "ইসিজি করানো হয়েছিল কিছুদিন আগে। বাবার লিপিড প্রোফাইল, ইত্যাদিও করানোর ছিল। সেগুলো করিয়ে গতকালই চিকিৎসকের কাছে যাওয়া হয়। সমস্ত রিপোর্ট নরমাল, কোনও অসুবিধাই ছিল না। রক্তচাপ মাপা হয়েছিল কাল বিকেলেই, সেটাও স্বাভাবিক ছিল। তাও বাবাকে বলেছিলাম এখন কদিন সিগারেট খেও না। বাবা  বলল, 'ধুর আমার তো সব নরমাল এসেছে। ঠিক আছে যা কমিয়ে দেব'।" তিনি এদিন আরও জানান, "বাবা অসুস্থ ছিলেনই না। এমনকী জ্বরও ছিল না। আমার কাল রাতেই কথা হয়েছে। সেটাই আরও অবাক লাগছে। আমার মা বরং একটু ভোগে মাঝেমধ্যেই, বাবা একদম ফিট ছিলেন। আমি শেষ যে ছবিটা করলাম 'চড়ক' বাবা তাতেও অভিনয় করেছিলেন। বিক্রম (চট্টোপাধ্যায়)-মধুমিতা (সরকার)কে নিয়ে যে 'সূর্য' করলাম তাতেও বাবা ছিলেন। ভীষণ অ্যাক্টিভ ছিলেন। বাচ্চাদের, গ্রামেগঞ্জে গিয়ে ওয়ার্কশপ করাতেন। কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ করলেন ক'দিন আগেই। বিশ্বাসই করতে পারছি না।"

এদিন চুঁচুড়া যাওয়ার কথা ছিল পরিচালকের বাবার। শিলাদিত্য জানান, "আমরা কেউ এটা আশা করিনি। বাবা খুবই শক্তপোক্ত মানুষ ছিলেন, আজকেই নাটকের একটা ওয়ার্কশপে চুঁচুড়া যাওয়ার কথা ছিল। তার আগে মা চা বানিয়ে ঘরে দিতে এসে দেখে ওই অবস্থা।" সকাল ৯-৯.৩০ টার মধ্যেই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানালেন পরিচালক। মৃত্যুর কারণ হিসেবে ডেথ সার্টিফিকেটে ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক উল্লেখ করা হয়েছে।

তবে এখন শহরে নেই শিলাদিত্য। ফিরতে আরও কিছুটা সময় লাগবে বলেই জানালেন। তাঁর আফসোস, "একমাত্র ছেলে, আর আমিই এখনও আটকে আছি। কাজের জন্য বম্বে এসেছিলাম। কাল একটা বড় মিটিং ছিল। এখন বম্বে বিমানবন্দরে বসে রয়েছি। কোনও বিমানে সিট পাচ্ছিলাম না। কোনও মতে, অনেক বেশি টাকা দিয়ে একটা সিট বুক করতে পেরেছি। মা ওখানে তো একা রয়েছেন। আমি পৌঁছাই, তারপর..."। গলা বুজে আসে তাঁর। এত বড় শোক পাওয়ায় ভীষণই ভেঙে পড়েছেন পরিচালক।