অঞ্জন দত্ত বাঙালির নস্টালজিয়ার আরেক নাম। অঞ্জন দত্ত মানে কি কেবলই পার্ক স্ট্রিট আর দার্জিলিং? জীবন শুরু করেছিলেন ইংরেজি থিয়েটার দিয়ে। তারপর মৃণাল সেনের ছবিতে অভিনয়, জার্মানি যাত্রা, ফিরে এসে অভিনয়ের পাশাপাশি গান এবং নির্দেশনার জগতে প্রবেশ। এই নানা রঙের অঞ্জন দত্ত এবার ধরা পড়বেন নিজেরই কলমে তাঁর জীবন নিয়ে। লিখছেন তিনি বহুদিন ধরেই। তাঁর লেখা গোয়েন্দা গল্প নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে একাধিক বই। তবে আত্মজীবনী? স্বভাবতই, এই প্রথম। সেকথা ফেসবুকে নিজেই ঘোষণা করলেন শিল্পী। 


অঞ্জন দত্ত লিখলেন, “দেখতে দেখতে ৪ বছর কেটে গেছে। আমার ৪ খানা গোয়েন্দা গপ্পের বই ছেপে বেরিয়েছে। প্রথম দুটোতে তিনটে করে রহস্য। তারপর দুটো বড় রহস্য। অর্থাৎ ৮ খানা রহস্য। আমার গোয়েন্দা সুব্রত শর্মা কে নিয়ে ৮ টা কাহিনী। কে, কারা, কতজন পড়েছে আমি জানি না। বিক্কিরি শুনেছি মন্দ হয়নি। কিন্তু এগিয়ে এসে খুব কম পাঠক বলেছে "ভালো"। 

তবে আমার লিখতে খুব ভালো লেগেছিলো। Printing এর ভুল বাদ দিয়ে, আমার পড়তেও ভালো লেগেছে। আমার প্রকাশক প্রথমেই অনুরোধ করেছিলো একটা স্মৃতিচারণ লিখতে। আমিই তাকে জোর করি আমার গোয়েন্দা কাহিনী ছাপতে। সে মেনে নেয়। আমি মনের আনন্দে লিখি। প্রকাশক আমাকে মাঝে মাঝে কিছু টাকার cheque ও ধরিয়ে দেয়। একটু একটু করে আমার লেখার ধার বা মজা বাড়ে। আমার কাছে। বই মেলায় প্রচুর বই সই করি। কিন্তু যারা কেনে তারা সবাই কি পড়ে? 

 

 

যাই হোক, প্রকাশকের শর্ত মাঝে মাঝেই মনে পড়ে। একটা আত্মকথা। আমার এই এতো বছরের এতো কিছু করা। পৃথিবীর কতো বড় মাপের মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক। ৭৩ বছর ধরে দুনিয়া দেখা, এই শহর, দার্জিলিং, বার্লিন... এতো গাদা গুচ্ছের স্মৃতি, সম্পর্ক, হেরে যাওয়া, জিতে যাওয়া, হারিয়ে যেতে যেতে কোনমতে ভেসে থাকা... কতো বিখ্যাত মানুষের ভালবাসা, কোতো অখ্যাত মানুষের সাহায্য... বিপর্যয়, হতাশা, আনন্দ। সব কিছু একটা বইতে লেখা সম্ভব নয়। কিন্তু চেষ্টা করা উচিৎ প্রকাশকের কথা রাখার। তাই লিখেছি। ঘষা মজা চলছে। 

এই বছরে হয়তো সুব্রত শর্মা বা ড্যানি ডিটেকটিভ এজেন্সির গপ্পো লেখা হবে না। 

দেখা যাক।”

(পোস্টের বানান অপরিবর্তিত রাখা হল।)

অঞ্জনের তরফে এহেন ঘোষণা শুনে যারপরনাই খুশি তাঁর অনুরাগীরা। শিল্পীর পোস্টার বার্তা বাক্সে তাই একের পর এক জমা হয়েছে একাধিক শুভাকাঙ্খী, আগ্রহীদের মন্তব্য। চোখ কেড়েছে এক নেটিজেনের মন্তব্য, “অবশ্যই লিখুন অঞ্জনদা। আপনার জীবনের অভিজ্ঞতা আমাদের জীবনেও কাজে লেগে যাবে। ব্যর্থতা আবার উঠে দাঁড়ানো, কত দেশ বিদেশের বিখ্যাত বা অখ্যাত মানুষের কাহিনী নিশ্চয়ই সমৃদ্ধ হব।শুভ শারদীয়া। আপনার মধ্যে অনেকগুলো সংস্কৃতির প্রভাব আছে। সেগুলো জানতে পারলে ভালই লাগবে। ভাল থাকুন।”