হঠাৎ করেই সমাজমাধ্যমে দেখা গেল অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্রর বহু পুরনো একটি ছবি। দরাজ মনে হাসতে দেখা যাচ্ছে তাঁকে, সঙ্গে লেখা 'নিখোঁজ'। জন্মদিনের দিন এমন পোস্ট দেখে অনেকেই অবাক হয়েছিলেন। তবে কি শ্রীলেখা মিত্র সত্যি নিখোঁজ হয়ে গেলেন? কিছুদিন আগেই তাঁর বাড়ির আশেপাশে তাঁকে ব্যান করার পোস্টার ছড়িয়ে পড়ে, এর মধ্যেই তাঁর বাড়ির সামনে আছে সেই পোস্টার। তবে কি এই ঘটনার পরেই এমন পোস্ট? 

 

 

 

অদ্ভুত ব্যাপার অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র নিজেই এই পোস্টটি করেছেন। তবে কেন নিজেকে নিখোঁজ বলেছেন সেই কারণও জানিয়েছেন পোস্টে। বহু বছর আগের এই ছবিটি পোস্ট করে অভিনেত্রী লিখেছেন, 'এই চওড়া হাসির মেয়েটা আজ বহুদিন হল নিখোঁজ। নাকি মেয়েটির চওড়া হাসি নিখোঁজ? ধুর ছাই সব গুলিয়ে গেল। ও মনে পরেছে। আজ মেয়েটির জন্মদিন।' 

 

 

মন থেকে এমন ভাবে আর কোথায় হাসিটা আসে না তাঁর। আসলে কয়েক বছরে অনেক ঝড় বয়ে গিয়েছে অভিনেত্রীর জীবনে। মাকে হারানোর পর বাবাকে হারানো, একমাত্র মেয়ে বিদেশে পড়াশোনা করেন। শহরে তিনি একাই যদিও তাঁর একাধিক সন্তান থাকে বাড়িতে, তারা হল শ্রীলেখার পোষ্য। তাদেরকে নিয়েই জীবন গুছিয়ে নিয়েছেন শ্রীলেখা মিত্র। কিন্তু পুরনো অনেক কিছু আজও মনে পড়ে যায় তাঁর, বিশেষ করে জন্মদিনে। মা-বাবাকে তো বটেই সঙ্গে পুরনো নানা স্মৃতি। সেই সময় বোধহয় জীবনটা এতটা জটিল ছিল না অভিনেত্রীর জন্য। 

 

 

আরও পড়ুন: ধারাবাহিকে ব়্যাপ গেয়ে তুমুল কটাক্ষের মুখে মধুমিতা সরকার! ছোটপর্দায় ফিরেই নেতিবাচক মন্তব্যের পাল্টা জবাবে কী বললেন অভিনেত্রী? 

 

তিনি স্পষ্টভাষী, যেকোনও কথা মুখের ওপর বলতে ভালবাসেন এবং বলেন। সেই কারণে টলিউডে এক ঘরে হতে হয়েছে অভিনেত্রীকে। যোগ্য অভিনেত্রীর কদর তিনি পাননি - এই কথা সকলের জানা। কিন্তু তিনি থেমে থাকার পাত্রী নন, এবং তাঁকে থামিয়ে রাখা যাবে না। তাই অভিনয়ের পাশাপাশি পরিচালনাও শুরু করেছেন শ্রীলেখা মিত্র। কয়েক বছর আগে জন্মদিনে নিজের ইউটিউব চ্যানেল 'আমি শ্রীলেখা'র যাত্রা শুরু হয়। এবার তিনি সেই ইউটিউব চ্যানেলে দর্শক দেখতে পাবেন তাঁর পরিচালিত প্রথম স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি 'ছাদ'। 'ছাদ'-এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে নানা মুহূর্ত, এইগুলোই যেন তুলে ধরতে চেয়েছেন তিনি। দেশে এবং বিদেশে বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে ঘুরে আসার পর এবার এই কাজ দেখতে পাবেন দর্শক। 

 

 

 

 

 

জন্মদিনের দিন লাইভে এসে শ্রীলেখা মিত্র বলেন, "কখনওই নিজের জন্মদিন খুব জাঁকজমকভাবে পালন করিনি। বিশেষ করে পাঁচতারা হোটেলে খাওয়াদাওয়া এগুলো একেবারেই পছন্দ নয়। কাদের সঙ্গেই বা খেতে যাব, তেমন মানুষের সংখ্যা দিন দিন কমছে। তবে এই বিষয় নিয়ে আমার আক্ষেপ নেই। নানা ক্ষেত্রে এবার হয়েছে, তবে আমি আমার প্রতিবাদ চালিয়ে গিয়েছি। বর্তমান সময়ে মানুষের যা অবস্থা তাতে যদি প্রতিবাদ না করি তাহলে আর শিল্পী হলাম কেন। আমি নিজেকে তারকা বলে মনে করি না, আমি শিল্পী প্রত্যেক শিল্পীর সমাজের প্রতি একটা দায়িত্ব থাকে এবং দায়বদ্ধতা থাকে। কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে আমার ছবি জায়গা পাইনি, কিন্তু লন্ডন থেকে ব্যাঙ্গালোর, দিল্লী বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসব এই ছবি দেখানোর পর দর্শকদের ভালবাসা পেয়েছি। জন্মদিনে এটাই আমার কাছে উপহার, এছাড়াও আমি কখনওই খুব দামি উপহার পছন্দ করি না। অল্পতেই খুশি হওয়া মানুষ আমি। ' এই বছর জন্মদিনেও বাড়িতে নিজের পোষ্যদের নিয়ে সময় কাটালেন অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র।