সাইবার প্রতারণার শিকার হওয়ার পর অভিনেত্রী অনুপমা পরমেশ্বরণ কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছেন। সম্প্রতি তাঁর কিছু বিকৃত ছবি এবং ভিত্তিহীন অভিযোগ সোশ্যাল মিডিয়ায়, বিশেষ করে একাধিক ভুয়ো অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে, ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছিল। এই ঘটনায় তিনি অত্যন্ত মর্মাহত হয়ে কেরালা সাইবার ক্রাইম পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন।

 

 

ইনস্টাগ্রামে একটি বিশদ পোস্টের মাধ্যমে অনুপমা তাঁর এই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা জানান। তিনি লেখেন, কিছুদিন আগে তাঁর নজরে আসে যে একটি ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইল তাঁর, তাঁর পরিবার এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও সহ-অভিনেতাদের সম্পর্কে 'অত্যন্ত অনুপযুক্ত এবং মিথ্যা' বিষয়বস্তু প্রচার করছে। এই পোস্টগুলির মধ্যে ছিল কিছু বিকৃত করা ছবি এবং ভিত্তিহীন অভিযোগ, যা অনলাইনে তাঁকে গভীরভাবে বিচলিত করেছে।

 

 

পুলিশি তদন্তে দেখা যায়, এই কুরুচিকর বিষয়বস্তুর নেপথ্যে রয়েছেন তামিলনাড়ুর এক ২০ বছর বয়সী তরুণী। ওই তরুণীই একাধিক ভুয়ো ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট তৈরি করে এই বিদ্বেষমূলক পোস্টগুলি ছড়াচ্ছিলেন।

 


প্রথমে বিষয়টিকে সাধারণ ট্রোলিং বলে মনে হলেও, দ্রুতই এটি মানহানির এক সমন্বিত প্রচেষ্টায় পরিণত হয়। এর ভয়াবহতা উপলব্ধি করে দ্রুত সাইবার ক্রাইম পুলিশের দ্বারস্থ হন অনুপমা। পুলিশি তদন্ত দ্রুত শুরু হয় এবং প্রযুক্তিগত সূত্র ধরে পুলিশ অভিযুক্তকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়।
তদন্তে যে তথ্য সামনে আসে, তা অনুপমার কাছেও ছিল যথেষ্ট বিস্ময়কর। জানা যায়, এই সংঘবদ্ধ হয়রানির নেপথ্যে রয়েছে তামিলনাড়ুর মাত্র ২০ বছর বয়সী এক তরুণী। ওই তরুণীই একাধিক ফেক অ্যাকাউন্ট তৈরি করে অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে কুরুচিকর পোস্টগুলি ছড়াচ্ছিল।

 

 

অপরাধীর কম বয়স জেনে অভিনেত্রী তাঁর প্রতি সহানুভূতিশীল মনোভাব দেখান। তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে জনসমক্ষে ওই তরুণীর পরিচয় প্রকাশ করবেন না, কারণ তিনি চান না এই একটি ভুলের জন্য মেয়েটির ভবিষ্যৎ বা মানসিক শান্তি বিপন্ন হোক। তবে তাঁর এই মানবিকতার অর্থ এই নয় যে অপরাধটিকে ছেড়ে দেওয়া হবে। অনুপমা নিশ্চিত করেন যে আইনি প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু করা হয়েছে।

 


ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে যারা এই ধরনের বিদ্বেষ ছড়ায়, তাদের প্রতি এক কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে অনুপমা বলেন, "একটি স্মার্টফোন থাকলেই বা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রবেশের অধিকার থাকলেই কাউকে হয়রানি, মানহানি বা বিদ্বেষ ছড়ানোর অধিকার পাওয়া যায় না।" তিনি জোর দিয়ে বলেন, অনলাইনে প্রতিটি কাজেরই একটি চিহ্ন থেকে যায় এবং তার জন্য জবাবদিহি করতে হবে।

 

 


অনুপমা আরও মনে করিয়ে দেন যে, অভিনেতা বা জন-ব্যক্তিত্ব হওয়ার কারণে তাঁদের মৌলিক অধিকারগুলি কেড়ে নেওয়া যায় না। সাইবারবুলিং একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিতভাবেই কার্যকর হবে। অভিনেত্রীর এই দৃঢ় পদক্ষেপ এবং একই সঙ্গে অভিযুক্তের প্রতি তাঁর দেখানো মানবিকতা— উভয়ই সামাজিক মাধ্যমে প্রশংসিত হয়েছে। তিনি এই ঘটনার মাধ্যমে ডিজিটাল জগতে দায়িত্বশীলতা ও সহানুভূতির গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করেছেন।