ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে রয়েছে ভুতুড়ে বাড়ি। অজানা ভৌতিক কাহিনির আতঙ্ক ঘুরে বেড়ায় লোকমুখে। এদেশের আনাচেকানাচে এমন কত সত্যি ভূতের গল্প, ভূতের বাড়ির কথা শোনা যায়। যেখানে থাকতে গিয়ে অদ্ভুত আতঙ্কের সম্মুখীন হয়েছে অনেকে। আর এই বাস্তব অভিজ্ঞতাই এবার ফুটে উঠবে পর্দায়। গায়ে কাঁটা দেওয়া কাহিনি ঘিরে তৈরি হয়েছে ‘দ্য রেসিডেন্ট’ ফ্র্যাঞ্চাইজি। 

ফ্র্যাঞ্চাইজির প্রথম গল্প ‘দ্য কেস অফ HZ26’ সিমলার বিখ্যাত দুটি বাংলোর ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে। যার মধ্যে একটি জায়গা পর্যটনকেন্দ্রে পরিণত হলেও অনেকেই অতিপ্রাকৃত অভিজ্ঞতার সাক্ষী হয়েছেন বলে দাবি করেন। 


এই ছবিটি তুলে ধরবে ১৯৬০-এর দশকের শেষ দিকে প্যাটেল পরিবারের অদ্ভুত কাহিনি। সেই বাস্তব অভিজ্ঞতাকে ২০২৪ সালের প্রেক্ষাপটে রূপ দিয়েছে রিং আ বেল ফিল্মস প্রযোজনা সংস্থা। 

ছবিতে ফুটে উঠবে একট দম্পতির গল্প। যারা HZ26 নামক বাংলোতে থাকতে এসে কিছু অস্বাভাবিক ঘটনার মুখোমুখি হন। যত দিন যায়, ঘটনাগুলো যেন ততই ভয়ানক হয়ে ওঠে এবং শেষমেশ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। 


ছবির দুই চরিত্র 'শন' এবং 'মায়া' শোকস্তব্ধ দম্পতি। গর্ভাবস্থায় সন্তানকে হারিয়ে মায়া বিষণ্ণতা আর অবসাদে আক্রান্ত। শহরের কোলাহল থেকে দূরে, এক নতুন বাংলো কিনে জীবন শুরু করতে চায় শন। বেশ খরচ করে বাংলোর অন্দরসজ্জায়। কিন্তু কয়েকদিনের মধ্যেই স্ত্রী ‘মায়া’র আচরণ অস্বাভাবিক হতে থাকে। 

প্রাথমিকভাবে শন ভাবে হয়েতো বিষণ্ণতার কারণেই মায়ার আচরণের পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু যখন পরিস্থিতি মাত্রা ছাড়িয়ে যেতে শুরু করে তখনই শনের সামনে আসে বাড়িটির ইতিহাস। তিনি জানতে পারেন, তাদের আগেও এক পরিবার ওই বাড়িতে থাকতে এসে ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছিল।

সাহায্যের জন্য এক ফ্রিল্যান্স মিডিয়াম রুদ্রজিৎ-কে ডাকেন শন। যিনি দম্পতিকে সাহায্য করার আশ্বাস দেন। আর তারপর যা ঘটে, তা দুটি বাংলোকে ভারতের ডার্ক ট্যুরিজমের এক বড় আকর্ষণে পরিণত করেছে।

গোটা ঘটনাটি অত্যন্ত নিপুণভাবে তুলে ধরেছেন পরিচালক রিঙ্গো বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “যখন আমরা দ্যা রেসিডেন্ট-কে একটি ফ্র্যাঞ্চাইজির রূপে ভাবতে শুরু করি, তখনই বুঝে যাই যে এটি দ্যা কনজিউরিং-এর মতো ফরম্যাটে তৈরি করা সম্ভব। যেখানে আমরা ভারতের বিভিন্ন ভৌতিক বাড়িতে বসবাসরত মানুষের আসল অতিপ্রাকৃত অভিজ্ঞতা তুলে ধরতে পারব। একজন ক্লেয়ারভয়েন্ট বা অতীন্দ্রিয় দর্শনের অধিকারী ব্যক্তি যিনি সমস্ত ঘটনা নিজের চোখে দেখেছেন তার মাধ্যমে বাস্তব জীবনের ঘটনা আধুনিক প্রেক্ষাপটে উপস্থাপন করা হয়েছে। নতুন যুগের চলচ্চিত্র নির্মাণের প্রয়াস এই ছবি। 

অন্যদিকে প্রযোজক ওহেন্দ্রিলা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি সবসময়ই বিশ্বাস করি, সবচেয়ে পুরনো এবং শক্তিশালী ভয় হল অজানার ভয়। ছোটবেলা থেকেই আমি হরর সিনেমা দেখতে খুব ভালবাসতাম। রিঙ্গো যখন এই ঘরানায় একটি ছবি বানানোর প্রস্তাব দিল, আমি সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে যাই। আমি আত্মবিশ্বাসী ছিলাম যে আমরা বাংলা হরর সিনেমার একটি নতুন ধারা তৈরি করতে পারব। আসলে আমরা এখানে প্রচলিত ধারণা ভেঙে দিয়েছি, যেখানে হরর মানেই অন্ধকার ঘর বা অন্ধকার পরিবেশ। এই ছবিতে আলোতেই দেখা যাবে অন্ধকারের উপস্থিতি।"

ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে ছবির প্রথম ঝলক। গা ছমছমে গল্পে অভিনয় করেছেন শন বন্দ্যোপাধ্যায়, সব্যসাচী চৌধুরী , প্রত্যুষা রোসলিন , রাইমা ঘোষ , রানা বসু ঠাকুর , সুগত গুহ , তপস্যা দাশগুপ্ত , সুভার্থী বিশ্বাস। পরিচালনার সঙ্গে চিত্রনাট্য, নির্দেশনা , চিত্রগ্রহণ, সম্পাদনা, সঙ্গীতে রয়েছেন রিঙ্গো বন্দ্যোপাধ্যায়।