শুক্রবার রাত গড়াতেই শহর জুড়ে ভিড় বাড়তে থাকে। শনিবার ভোররাত থেকেই যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে উপচে পড়ে ভিড়। কারণ একটাই, এক ঝলক মেসিকে দেখার জন্য উচ্ছসিত ভক্তমহল। এদিনের পুরো অনুষ্ঠানসুচীর সঞ্চালক হিসেবে ছিলেন অভিনেতা অনিন্দ্য সেনগুপ্ত। স্টেডিয়ামে হাজার হাজার দর্শকের সঙ্গে তিনিও লিওনেল মেসিকে এক ঝলক দেখার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন। তবে সেই সাধ আর পূরণ হল কই? পাখির চোখ হয়ে সঞ্চালনার অভিজ্ঞতা আজকাল ডট ইন-এর কাছে ভাগ করলেন অনিন্দ্য। 

 

 

 

 

অভিনেতার কথায়, "আমাকে যারা ব্যক্তিগতভাবে চেনেন, তাঁরা জানেন আমি নিজেও ফুটবলপ্রেমী। ফুটবলের প্রতি ভালবাসা থেকেই আজকের দিনটা আমার কাছে স্বপ্নের মতো ছিল। গতকাল সারাদিন, মানে রাত ১২:৩০ পর্যন্ত মাঠে ছিলাম। পুরো ইভেন্টটা কীভাবে হবে তার আলোচনা হয়েছে। মেসিকে মাঠে আনার পর থেকে কী কী কর্মসূচি থাকবে সেসব নিয়ে প্র্যাকটিস চলেছে। সারারাত একটা টেনশন আর উত্তেজনায় ভাল ঘুম পর্যন্ত হয়নি। আজ সকাল থেকেও সবটা ঠিকই ছিল। কিন্তু মেসি মাঠে আসার পর যেটা হয়েছে সেটা আমাদের হাতের বাইরে ছিল।"

 

 

 

অনিন্দ্য আরও বলেন, "সত্যি বলতে কী, একজন ফুটবলপ্রেমী, মেসিভক্ত হয়েই বলছি, যেটা হয়েছে সেটা খুব কষ্টের। মানুষ যে আচরণ করেছেন মেসিকে দেখতে না পেয়ে যার জন্য এত কথা হচ্ছে, আমি বলব তাঁরা তো এটা মনের কষ্ট থেকে করছেন, ক্ষোভ থেকে করছেন। রাগের বশে কিন্তু নয়, সবটাই হয়েছে এতদিনের আকাঙ্ক্ষা সত্যি না হওয়ার ফলে। আমারও খুব কষ্ট হয়েছে। তবে একটাই কথা বলব, যা হয়েছে তাতে সত্যিই আমাদের কিছু করার ছিল না।" 

 

 

 

অনিন্দ্যর কথায়, "আগের বহুবার খেলার মাঠে কমেন্ট্রির দায়িত্ব পেয়েছি। তবে আজকের দিনটা আমার কাছেও বিশেষ ছিল। হতে পারে পরিস্থিতি আমাদের সাথ দেয়নি, তবে আমাদের যে ভালবাসাটা ছিল মেসি ও শাহরুখ খানের প্রতি সেটা আশা করি সবাই বুঝেছেন। এক কথায় বলতে গেলে স্বপ্নপূরণ হল‌। একটু যা খামতি আছে, সেসব ভুলেই বলছি, আজকের দিনটা সত্যিই বিশেষ আমার কাছে।"

 

 

 

 

প্রসঙ্গত, ১৩ ডিসেম্বর, সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ হোটেল থেকে ভার্চুয়ালি লেকটাউনের ৭০ ফিটের মূর্তি উদ্বোধন করে যুবভারতী আসেন মেসি। কিন্তু মাত্র মিনিট ১৫-২০ এর মধ্যেই মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যান। তাঁকে দেখতে না পাওয়ায় রাগ, ক্ষোভে মাঠে জলের বোতল, চেয়ার ছুঁড়তে থাকেন দর্শকরা। পরবর্তীতে মাঠে নেমে তাঁরা অনুষ্ঠানের জন্য তৈরি করা শামিয়ানায় আগুন ধরিয়ে দেন। যদিও তৎপরতার সঙ্গে সেটা নিভিয়ে দেওয়া হয়। বিশৃংখলা তৈরি হওয়ায় মেসি চলে যান। আসেননি শাহরুখ খান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। জানা যায়, এই ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই শহর ছাড়েন লিওনেল মেসি। 

 

 

 

'দ্য গোট ইন্ডিয়া ট্যুর'-এ তিনি আরও তিনটি শহরে যাবেন। এদিন তিনি হায়দরাবাদ উড়ে গেলেন। এরপর যাবেন মুম্বই এবং দিল্লি। কিন্তু তাঁর সফরের প্রথম দিনই যে ঘটনা ঘটল তাতে যারপরনাই হতাশ, ক্ষুব্ধ ফুটবল প্রেমীরা।