রজিনীকান্তের বহুচর্চিত ছবি 'কুলি'-তে অতিথি চরিত্রে দেখা গিয়েছিল বলিউডের 'মিস্টার পারফেকশনিস্ট' আমির খানকে। সেটাই ছিল জনপ্রিয় দক্ষিণী পরিচালক লোকেশ কানাগরাজের সঙ্গে আমিরের প্রথম কাজ। সেখান থেকেই শোনা যাচ্ছিল, খুব শীঘ্রই এই জুটি একসঙ্গে করতে চলেছেন একটি পূর্ণদৈর্ঘ্য সুপারহিরোধর্মী ছবি, যা নাকি বদলে দিতে পারত ভারতীয় সিনেমার ধারা।
হ্যাঁ পারত। কারণ, জোর খবর, প্রকল্পটি আর এগোচ্ছে না। জোর ফিসফাস, আমির খান নাকি লোকেশ কানাগরাজের এই সুপারহিরো ছবিটি থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। তা এই দুই পরিচালক-অভিনেতার দ্বন্দ্বের আসল কারণ কী? শোনা যাচ্ছে, আসল কারণ হল ছবির চিত্রনাট্যের প্রতি দুই শিল্পীর আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি।
আমির খান চান শুটিংয়ের আগেই সম্পূর্ণ চিত্রনাট্য চূড়ান্ত হোক। অন্যদিকে লোকেশের পদ্ধতি আলাদা—তিনি শুটিং চলাকালীনও নিজের ছবির চিত্রনাট্যে নানান টুকটাক পরিবর্তন করতেই থাকেন এবং এইভাবেই ছবি বানাতে তিনি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। শেষমেশ এই সৃজনশীল টানাপোড়েনই শেষ পর্যন্ত ছবিটিকে থামিয়ে দিয়েছে।
ভবিষ্যতে কি ফের একসঙ্গে কোনও ছবিতে দেখা যাবে তাঁদের? সূত্র জানাচ্ছে, কোনো তিক্ততা ছাড়াই বন্ধুত্বপূর্ণ ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দুজনেই। ভবিষ্যতে অন্য কোনো প্রজেক্টে আবার হাত মেলানোর ইঙ্গিত রেখেছেন আমির ও লোকেশ। তবে আপাতত এই সুপারহিরো সিনেমা স্থগিতই রইল।আমির খান আপাতত খুঁজছেন নতুন প্রজেক্ট। অন্যদিকে, লোকেশ কানাগরাজ এখন ব্যস্ত রাজিনীকান্ত ও কমল হাসানকে নিয়ে তাঁর আসন্ন গ্যাংস্টার ছবির প্রস্তুতিতে।
প্রসঙ্গত, গত কয়েক মাস ধরেই ওজন বেড়েছে আমিরের। বলিউডে গুঞ্জন ছড়িয়েছিল—দাদাসাহেব ফালকের বায়োপিকের জন্য নাকি চেহারা ভারী করছেন আমির খান। অনেকেই ভেবেছিলেন রাজকুমার হিরানি পরিচালিত সেই নতুন ছবির চরিত্রের খাতিরেই বাড়ছে তাঁর ওজন। কিন্তু সত্যিটা কিন্তু তা নয়। বরং একেবারেই অন্যরকম।বার এই প্রসঙ্গে সরাসরি মুখ খুলে ভক্তদের অবাক করলেন আমির খান নিজেই। এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান— তাঁর মোটা হওয়াটা কোনও সিনেমার জন্য নয়, বরং স্বাস্থ্যজনিত সমস্যার কারণে হঠাৎ বেড়েছে তাঁর ওজন। আমিরের কথায়, “না, ছবির জন্য ওজন বাড়াইনি। আসলে কিছুদিন ধরে ভয়ানক মাইগ্রেন হচ্ছে। চিকিৎসকরা আমাকে স্টেরয়েড দিয়েছেন। সেই স্টেরয়েডের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াতেই ওজন বাড়ছে, আমার হাতে কিছু নেই। তবে ইতিমধ্যেই আমি ডায়েট আর ওয়ার্কআউট শুরু করেছি, কারণ সামনে নতুন কাজের জন্য ফিট থাকা দরকার।” তিনি আরও বলেন, এখনও পুরোপুরি রোগমুক্ত নন। “ডাক্তাররা আসল কারণটা এখনও ধরতে পারেননি। স্টেরয়েড খেলে মাথাব্যথা কমছে, কিন্তু দীর্ঘদিন এটা খাওয়া যাবে না। পরশু আবার ডাক্তার দেখানোর অ্যাপয়েন্টমেন্ট রয়েছে। চিকিৎসকরা যথেষ্ট দক্ষ, তবে রোগটা ঠিক কী কারণে হচ্ছে, সেটা চিহ্নিত করাই কঠিন।”
একসময় চরিত্রের খাতিরে নিজের শরীর নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্যই পরিচিত ছিলেন আমির খান। কখনও ‘গজনি’র জন্য পেশিবহুল শরীর, কখনও আবার ‘দঙ্গল’-এর জন্য ৯৭ কেজি পর্যন্ত ওজন বাড়িয়ে ভক্তদের তাক লাগিয়েছেন। তবে এবার পরিস্থিতি অন্য—কোনও চরিত্র নয়, শারীরিক অসুস্থতাই তাঁকে বাধ্য করেছে এই রূপে দেখা দিতে।
