আজকাল ওয়েবডেস্ক:  ভারতের অবসরকালীন সঞ্চয় তহবিলের সাংবিধানিক সংস্থা ইপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজেশন সম্প্রতি অ্যাকাউন্ট হোল্ডারদের সতর্ক করেছে। তারা জানিয়েছে, সরকার নির্ধারিত নিয়মের বাইরে যদি কেউ তাদের প্রভিডেন্ট ফান্ড সঞ্চয় ভাঙান, তবে সেটিকে বিধি লঙ্ঘন হিসেবে গণ্য করা হবে এবং অর্থ ফেরতের পাশাপাশি জরিমানাও ধার্য হতে পারে।


ইপিএফও বলেছে, প্রভিডেন্ট ফান্ড মূলত অবসরের পর আর্থিক নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য গঠিত। তাই ভুল কারণে এই অর্থ খরচ করলে ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার পাশাপাশি আইনগত জটিলতাও তৈরি হতে পারে।


ইপিএফও-র বিধি অনুযায়ী, সদস্যরা নির্দিষ্ট কিছু পরিস্থিতিতে অগ্রিম বা আংশিক অর্থ উত্তোলনের সুযোগ পান—
অবসর বা দুই মাসের বেশি বেকারত্বের ক্ষেত্রে পুরো অর্থ তোলা যায়।
আংশিক উত্তোলন করা যায় বাড়ি কেনা, নির্মাণ বা মেরামত, বকেয়া ঋণ পরিশোধ এবং চিকিৎসার জরুরি প্রয়োজনে।
নথিপত্র জমা না দিয়েও নির্দিষ্ট শর্তে আংশিক উত্তোলন সম্ভব।
চাকরি ছাড়লে পুরো কোরপাস তুলতে হলে সদস্যকে কমপক্ষে দুই মাস অপেক্ষা করতে হয়।
তবে, পাঁচ বছরের চাকরি পূর্ণ না হলে প্রভিডেন্ট ফান্ড ভাঙালে আয়কর ও টিডিএস প্রযোজ্য হবে।

আরও পড়ুন: শশীর এখন সোনার সময়, তাকে নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে মোদি সরকার


ইপিএফও স্পষ্ট জানিয়েছে—প্রভিডেন্ট ফান্ডের অর্থ অনুমোদিত কারণ ছাড়া অন্য কাজে ব্যবহার করলে সেটি অপব্যবহার হিসেবে ধরা হবে।
উদাহরণস্বরূপ, কোনও সদস্য বাড়ি নির্মাণের জন্য অগ্রিম অর্থ তুললেন, কিন্তু পরে সেটি অন্য কাজে ব্যয় করলেন। এমন অবস্থায় ইপিএফও সেই অর্থ সুদ-সহ ফেরত চাইতে পারে। শুধু তাই নয়, EPF স্কিম, 1952-এর 68B(11) ধারায় বলা হয়েছে—


যেখানে কোনও উত্তোলন অপব্যবহার করা হয়েছে, সেখানে সংশ্লিষ্ট সদস্যকে তিন বছরের মধ্যে আর কোনও উত্তোলনের অনুমতি দেওয়া হবে না অথবা পুরো অর্থ ও সুদ ফেরত দেওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি নতুন করে উত্তোলনের সুযোগ পাবেন না।


২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫-এ এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ইপিএফও তার সদস্যদের অগ্রিম উত্তোলনের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্ক করেছে। শিগগিরই আসছে EPFO 3.0 ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম, যা অনলাইন পরিষেবাকে আরও দ্রুত ও সহজ করবে। এই প্রেক্ষাপটেই সংস্থা তাদের এক্স (X) প্ল্যাটফর্মে লিখেছে—“ভুল কারণে পিএফ উত্তোলন করলে EPF স্কিম, 1952-এর অধীনে Recovery হবে। আপনার ভবিষ্যৎ রক্ষা করুন, পিএফ ব্যবহার করুন শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় কারণে। আপনার পিএফ আপনার আজীবন নিরাপত্তা বর্ম।”


ইপিএফও-র অভিজ্ঞতা বলছে, বেশিরভাগ সদস্য আংশিক অর্থ তোলেন—
সন্তানের শিক্ষার খরচ চালাতে,
বিয়ে সংক্রান্ত খরচ মেটাতে,
অথবা চিকিৎসার মতো জরুরি প্রয়োজনে।
তবে এর বাইরে অন্য কোনও খাতে ব্যবহার ধরা পড়লে সেটি নিয়মবিরুদ্ধ হিসেবে চিহ্নিত হয়।


ইপিএফও স্পষ্ট জানিয়েছে, পিএফ কেবলমাত্র বৈধ প্রয়োজনে ব্যবহারযোগ্য। এটি সদস্যদের আজীবন সঞ্চয় ও অবসরের আর্থিক নিরাপত্তা। ভুল কারণে উত্তোলন করলে শুধু অর্থ ফেরত নয়, ভবিষ্যতে উত্তোলনের সুযোগও সীমিত হয়ে যেতে পারে। তাই সদস্যদের উচিত নিয়মাবলি মেনে কেবল অনুমোদিত প্রয়োজনে এই অর্থ ব্যবহার করা।