আজকাল ওয়েবডেস্ক: কাজের শেষে দুই বন্ধু এক সঙ্গে মদ খেতে বসেছিলেন। সেখানে স্ত্রীর উদ্দেশে কুমন্তব্য করাতেই বন্ধুকে কোপালো আরেক বন্ধু। উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরে মিষ্টির দোকানের কর্মী খুনের তদন্তে নেমে এমনই তথ্য পুলিশের হাতে এসেছে। পুলিশ বর্ধমানের পূর্বস্থলী থেকে গ্রেপ্তার করেছে 'ঘাতক' বন্ধু বিশ্বজিৎ দাসকে।

 

 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকালে দত্তপুকুরের চালতাবেড়িয়া এলাকায় বাড়ির ভিতর থেকে পরিতোষ পান্ডে নামে এক যুবকের ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। তিনি দত্তপুকুরের একটি নামী মিষ্টির দোকানের কারিগর ছিলেন। ওই বাড়িতে অন্য কেউ থাকতেন না। ফলে তদন্ত নেমে পুলিশ প্রথম দিকে কোনও সূত্রই খুঁজে পাচ্ছিল না।

 

 

 

পরিতোষ সাধারণত কাজে কখনও ছুটি নিতেন না। সোমবার বেলা পর্যন্ত তিনি কাজে না যাওয়ায় মালিক খোঁজ নিতে চালতাবেড়িয়ায় তাঁর বাড়িতে আসেন। ডাকাডাকি করলেও ভিতর থেকে কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। তখন তিনি ভিতরে ঢুকে দেখেন, ঘরের মেঝেতে পরিতোষের ক্ষতবিক্ষত রক্তাক্ত দেহ পড়ে রয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। খুনের সূত্র খুঁজতে ওই মিষ্টির দোকানে গিয়ে তদন্তকারী আধিকারিক পরিতোষের সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন। তখন তিনি জানতে পারেন, বিশ্বজিৎ দাস নামে দোকানের আরও এক কর্মী কাজে আসেননি। তাঁর বাড়িতে খোঁজ নিয়ে পুলিশ জানতে পারে, সোমবার ভোররাতে ট্রেন ধরে তিনি দূরে কোথাও চলে গিয়েছেন। পুলিশ তখন নিশ্চিত হয়, পরিতোষের খুনে ওই কর্মীই জড়িত রয়েছেন। রাতে মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে বর্ধমানের পূর্বস্থলী থেকে দত্তপুকুর থানার পুলিশ বিশ্বজিৎকে পাকড়াও করে। ‌পুলিশের জেরায় ধৃত বিশ্বজিৎ, পরিতোষকে খুন করার কথা কবুল করে। 

 

 

মঙ্গলবার বারাসতের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্পর্শ নীলাঙ্গী সাংবাদিক বৈঠক করে দত্তপুকুরের যুবক খুনের জড়িত বিশ্বজিৎকে গ্রেপ্তার করার কথা জানান। তিনি বলেন, পরিতোষ ও বিশ্বজিতের বাড়ি প্রায় কাছাকাছি। রবিবার রাতে কাজের শেষে তারা দু'জন একসঙ্গে মদ খেতে বসেছিল। সেখানে পরিতোষ বিশ্বজিতের স্ত্রীর সম্পর্কে কুমন্তব্য করেছিল। তাতে উত্তেজিত হয়ে সে তাকে ধারালো বঁটি দিয়ে কুপিয়ে খুন করে। তারপর বাড়ি ফিরে পোশাক বদল করে বিশ্বজিৎ ভোররাতের ট্রেন ধরে দূরে চলে যায়। পূর্বস্থলী থেকে তাকে পাকড়াও করা হয়েছে।