আজকাল ওয়েবডেস্ক: বীরভূমে ফের আরও এক তৃণমূল নেতা খুন। মৃত তৃণমূল নেতার স্ত্রীর অভিযোগ সিপিএম সমর্থদের বিরুদ্ধে। বীরভূমে বোমাবাজিতে ফের রাজনৈতিক খুনের ঘটনা। ময়ূরেশ্বর-১ পঞ্চায়েত সমিতির মৎস্য কর্মাধ্যক্ষের স্বামী ও তৃণমূল নেতা বাইতুল্লা শেখকে বোমা মেরে খুন করা হয়েছে। মৃতের স্ত্রী তথা মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ শাকিলা বিবির অভিযোগ, গ্রামের সিপিএম সমর্থকরাই পরিকল্পনা করে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।

 

ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল, শনিবার রাতে মল্লারপুর থানার অন্তর্গত বিশিয়া গ্রামে। শাকিলা বিবির দাবি, তৃণমূলের এক প্রভাবশালী নেতা হিসেবে বাইতুল্লা শেখের উপস্থিতিতে ওই এলাকায় বিরোধীরা ভোটে জিততে পারছিল না। তাই পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। অভিযুক্তদের সকলেই স্থানীয় এবং গ্রামের বাসিন্দা বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবি তুলেছেন শাকিলা বিবি।

 

ঘটনার পর থেকেই বিশিয়া গ্রামে মোতায়েন রয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। এলাকাজুড়ে রয়েছে চাপা উত্তেজনা। প্রসঙ্গত, মাত্র ছয় দিন আগেই বীরভূমের সাঁইথিয়ার শ্রীনীধিপুর এলাকায় এক তৃণমূল নেতাকে খুনের অভিযোগ উঠেছিল। পরপর দুই হত্যাকাণ্ডে রীতিমতো রাজনৈতিক উত্তেজনা ছড়িয়েছে জেলা জুড়ে। 

 

আরও পড়ুন: গভীর রাতে ফোন, বাড়ির বাইরে বেরোতেই পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি! রাজ্যে ফের নৃশংস খুন শাসক দলের নেতা

 

তৃণমূল নেতা বাইতুল্লা খুনের ঘটনায় একজন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে মল্লারপুর থানার পুলিশ। জানা গিয়েছে, ধৃতের নাম ইয়েফর শেখ। ধৃত দাবি করেছে, সে সিপিএম সমর্থক নয়। স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃতের সঙ্গে অভিযুক্ত যুবকের একটা জমি নিয়ে ঝামেলা ছিল। ধৃত যুবককে আজ রামপুরহাট আদালতে তলা হয়েছে। 

 

মৃতের বাড়িতে গেলেন ও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেন ময়ূরেশ্বর এলাকার বিধায়ক অভিজিৎ রায়। পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিলেন। তাঁর দাবি, এই ঘটনা ঘটিয়েছে সিপিএম-এর লোকেরাই। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই তাঁকে খুন করা হয়েছে। অন্যদিকে এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে সিপিএম জড়িত বলেই মন্তব্য করেছেন মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা। 

 

প্রসঙ্গত, গত শনিবার রাতেই বীরভূমের লাভপুরের শীনিধিপুর অঞ্চলের তৃণমূল সভাপতি পীযূষ ঘোষকে খুন করা হয়েছিল। শনিবার গভীর রাতে আচমকা ফোন যায় পীযূষের কাছে। ফোন পেয়েই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান তিনি। বাড়ির অদূরে রাস্তায় তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। জানা গিয়েছে, যেখানে তৃণমূল নেতার দেহ উদ্ধার হয়েছে, সেখানেই পাওয়া গিয়েছে তাঁর মোটরসাইকেলটিও। 

 

নেতাকে মাথার পিছনদিক থেকে গুলি করে খুন করা হয়েছে বলে খবর। বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাঁর দেহ। সেখানেই হয় ময়নাতদন্ত। সূত্রের খবর, ঘটনায় ইতিমধ্যেই তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে দু’ জন মহিলা। ঘটনাস্থলের সামনে থাকা একটি বাড়ি থেকে মৌসুমী মাল নামে এক মহিলাকে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনার পর ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী টহল দিচ্ছে। এক জেলাতেই শাসক দলের পরপর নেতা খুনের ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। 

 

গত বৃহস্পতিবার রাতে আরও তৃণমূল নেতাকে গুলি করে খুনের অভিযোগ উঠেছে ভাঙড়ে। মৃত ব্যক্তির নাম রাজ্জাক খাঁ। ১০ জুলাই, বৃহস্পতিবার রাতে ভাঙড়ের বিজয়গঞ্জ বাজারের কাছে ওই তৃণমূল নেতাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। এরপর গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাঁকে তড়িঘড়ি উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে সেখানেই তাঁকে মৃত ঘোষনা করা হয় বলে খবর। আবার বৃহস্পতিবার রাতেই মালদহে জন্মদিনের পার্টিতে ঘর বন্ধ করে কুপিয়ে খুন তৃণমূল নেতাকে। মৃত তৃণমূল নেতার নাম আবুল কালাম আজাদ। খুনের অভিযোগ উঠছে মাইনুল শেখ-সহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ব্যক্তিও তৃণমূল নেতা বলে অভিযোগ। জানা গিয়েছে অভিযুক্ত মাইনুল শেখ কাজিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য। এই গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে কংগ্রেসের হয়ে ভোটে জিতলেও পরবর্তীতে জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সির হাত ধরে তৃণমূল কংগ্রেসের যোগদান করেন। ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের ইংরেজবাজারের লক্ষীপুরে।