আজকাল ওয়েবডেস্ক: মাকে ফোন করে ছাত্রীর শেষ কথা ছিল, 'ওরা আমাকে বাঁচতে দেবে না।' এর কিছুক্ষণ পরই পূর্ব বর্ধমানের কালনার জিউধারা রেলগেট সংলগ্ন এলাকায় দ্বাদশ শ্রেণীর বিজ্ঞান বিভাগের ওই ছাত্রীর ট্রেনের ধাক্কায় দ্বিখণ্ডিত দেহ উদ্ধার হয়। শুক্রবার রাতে এই ঘটনা ঘটে। মৃতা ধাত্রীগ্রামের বাসিন্দা। 

 

 

জানা গিয়েছে, কৃষ্ণদেবপুর ওই স্কুলের ছাত্রীটি মায়ের সঙ্গে কালনা শহরে একজন ইংরেজি গৃহ শিক্ষকের কাছে পড়তে আসত। শুক্রবারও তার অন্যথা হয়নি। ওইদিন তাড়াতাড়ি পড়া শেষ হয়ে যায় এবং শিক্ষক ছুটি দিয়ে দেন। ফলে কিছুটা আগেই কোচিং সেন্টার থেকে বেরিয়ে পড়ে ওই ছাত্রী। তার কিছুক্ষণ পরই মায়ের কাছে সে ফোন করে বলে জানা যায়। তখনই সে জানায়, ওরা তাকে বাঁচতে দেবে না। জানা গিয়েছে, এই কথা বলার পরই তাঁর ফোনের লাইন কেটে যায়। 

 

 

একেবারে ভেঙে পড়েছেন মেয়ের মা। তিনি জানান, 'ও খুব ভাল মেয়ে ছিল। দেড় বছর আগে ওর বাবার সঙ্গে বড় দুর্ঘটনায় পড়ে। দীর্ঘদিন ট্রমা কেয়ারে থাকতে হয়। সেই অবস্থা থেকে ও বেরিয়ে এসে নিজের জায়গা তৈরি করছিল। নিটের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। খোঁজ নিয়ে দেখুন খুব ভাল মেয়ে ছিল। যেমন ব্যবহার, তেমনই পড়াশুনায় ভাল ছিল। আমার মেয়ে ছিল ধাত্রীগ্রামের টপার। কাল আমায় ফোন করে বলে, মা ওরা আমায় বাঁচতে দেবে না। তারপর বারবার কল করে ওকে আর পাইনি। রিং হয়েই যায়।' তিনি বলেন, 'আমরা কাউকে সন্দেহ করতে পারছি না। ওর সঙ্গে কারও ঝামেলার কথা শুনিনি।' স্টেশনের সিসিটিভি ফুটেজে ঘটনার খানিক আগেও মেয়েটিকে দেখা গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

 

 

রাতেই খবর পেয়ে কালনা জিআরপি অফিসে হাজির হন মৃতার পরিজনরা। গোটা এলাকা জুড়ে শোকের ছায়া। ঘটনায় তৈরি হয়েছে রহস্য। কেন এই ঘটনা ঘটল বা ঘটনার নেপথ্যে ঠিক কী কারণ ছিল তা নিয়ে ধন্দে সবাই। বাড়ির লোকের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে চাইছে গত কয়েকদিন ধরে ছাত্রীর আচরণ কেমন ছিল এবং সে ঘরে কাউকে কোনও বিষয় নিয়ে ভীতি প্রকাশ করেছিল কিনা। কালনার বিধায়ক দেবপ্রসাদ বাগ বলেন, 'বিষয়টি তদন্তসাপেক্ষ। পুলিশি তদন্তেই সত্য বেরিয়ে আসবে।' পুলিশের একটি সূত্র জানায়, যার কাছে পড়তে গিয়েছিল সেই গৃহশিক্ষক এবং ছাত্রীর বন্ধুদেরও জিজ্ঞাসা করা হবে।