আজকাল ওয়েবডেস্ক: উত্তাল পদ্মাপার। গণঅভ্যুত্থানের পর, দ্বিতীয় দফায় ফের অশান্ত বাংলাদেশ। সন্ন্যাসী গ্রেপ্তার থেকে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার, ধরপাকড়, একাধিক ইস্যুতে দিনে দিনে বাড়ছে বিবাদ। এর মাঝেই এই ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দেখা গিয়েছে, বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতের জাতীয় পতাকা মাড়িয়ে ঢুকছেন পড়ুয়ারা। তারপর থেকেই একে একে গর্জে ওঠেন বহু মানুষ। পড়শি দেশে, বন্ধু দেশে, নিজেদের দেশের পতাকা নিয়ে এ কেমন আচরণ! রাগ-ক্ষোভের প্রকাশ চতুর্দিকে। বাংলাদেশে ভারতের জাতীয় পতাকার অবমাননা ও বর্তমান পরিস্থিতি মেনে নিতে পারছেন না বাংলাদেশের হয়ে মুক্তি যুদ্ধে অংশগ্রহন করা প্রাক্তন ভারতীয় সৈনিক। 

সমরেন্দ্র কুমার মন্ডল। বাংলাদেশ মুক্তি যুদ্ধে অংশ নেওয়া এই প্রাক্তন ভারতীয় সৈনিক ক্ষোভে ফুঁসে উঠছেন ঘটনাপ্রবাহ দেখে। প্রশ্ন করছেন, মহম্মদ ইউনূস কী করছেন ? প্রশ্ন তুলেছেন বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের অবস্থা নিয়েও।

কালনা শহরের মিশন এলাকার বাসিন্দা সমরেন্দ্রর এখন বয়স ৭২। বংশ পরম্পরায় খ্রিস্টান। ২২ বছর বয়সে ভারতীয় সৈনিক হিসাবে যোগদান করেন। ১৯৭১ সালে তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর নির্দেশে বাংলাদেশের মুক্তি যুদ্ধে ভারতীয় সৈনিক হিসাবে মিশন ক্যাকটাস লিলিতে অংশ গ্রহন করেন। যে দেশের হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লড়াইয়ে গিয়েছিলেন, হারিয়েছেন বন্ধু-সহকর্মী-চেনা মুখেদের। সেই বাংলাদেশের ঘটনাপ্রবাহ ঘরে বসে শুনছেন। প্রবল আহত, ক্ষোভে ফুঁসছেন, হচ্ছে দুঃখও। 


ওপারে ভারতীয় জাতীয় পতাকার অবমাননার ছবি দেখে তা কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না। বলছেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতায় ভারতীয় সেনার বড় অবদান ছিল। সে এক ভয়ঙ্কর যুদ্ধ ছিল। যারা যুদ্ধে যায়, তারাই জানে এর ভয়াবহতা। কোনও সৈনিক চায় না কখনও যুদ্ধ হোক। যুদ্ধে সবসময় ক্ষতি হয় দুপক্ষেরই। ওই যুদ্ধ ছিল একটা দেশকে স্বাধীন করানোর, আর তাতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা ছিল ভারতের। এখন আর মনে পড়ে না কতজনের ওই যুদ্ধে প্রাণ গিয়েছিল, তবে মৃত্যু হয়েছিল বহু সৈনিকের। যে দেশের সৈনিকরা জীবন দিয়ে দেশ স্বাধীন হতে সাহায্য করেছিল, আজ সেই সাহায্য ভুলে গেল। এই দেশের পতাকার অবমাননা করছে এখন। কৃতজ্ঞতা স্বীকার নেই, উল্টে যে পতাকা আমরা স্যালুট করি, পুজো করি, তাকেই অবমাননা। এত জঘন্য থেকে জঘন্যতম কাজ করছে।