আজকাল ওয়েবডেস্ক: উত্তর-পশ্চিম ঝাড়খণ্ড ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যে সাড়ে পাঁচটার দিকে দুর্বল হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। শুক্রবার সকালে সেটি উত্তরপূর্বমুখী হয়ে দক্ষিণবঙ্গের উত্তরাংশ ও তার আশপাশের এলাকায় অবস্থান করছে বলে ভারতীয় আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে। শনিবার সকালে এই নিম্নচাপটি আগামী ১২ ঘণ্টায় আরও দুর্বল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।


আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, নিম্নচাপটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঘূর্ণাবর্তটি গড় সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৩.১ কিলোমিটার উঁচু পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। সিস্টেমটি ধীরে ধীরে উত্তর-পূর্ব দিকে সরে যাবে এবং ক্রমশ কম সক্রিয় হয়ে পড়বে বলে পূর্বাভাস।


উত্তরবঙ্গে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত
গত ২৪ ঘণ্টায় নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তরবঙ্গের বহু জেলায় মাঝারি থেকে ভারী, এমনকি অতি ভারী বৃষ্টি হয়েছে। জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার জেলার কিছু অঞ্চলে টানা বৃষ্টিতে একাধিক নদীর জলস্তর বেড়ে গেছে। পাহাড়ি ও তরাই অঞ্চলে বিক্ষিপ্ত ভূমিধসের আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। অন্যদিকে, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি জেলায় হালকা বৃষ্টি হয়েছে, তবে বড় ধরনের প্রভাব দেখা যায়নি।


আগামী কয়েক ঘণ্টায় উত্তরবঙ্গের সমস্ত জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারে এক-দু’টি স্থানে ভারী বৃষ্টি (৭–১১ সেমি পর্যন্ত) হতে পারে বলে আবহাওয়া দফতর সতর্কতা জারি করেছে।


বজ্রবিদ্যুৎ ও ঝোড়ো হাওয়ার সতর্কতা
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, মালদা, উত্তর দিনাজপুর ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় এক-দু’টি স্থানে বজ্রঝড়সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। বজ্রপাতের পাশাপাশি ঘন্টায় ৩০–৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।


আইএমডি বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে। খোলা জায়গায় না থাকার, গাছের নিচে আশ্রয় না নেওয়া এবং বিদ্যুতের খুঁটি বা উন্মুক্ত লোহার কাঠামো থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।


গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, নদিয়া ও মুর্শিদাবাদে আকাশ আংশিক মেঘলা থাকবে। কিছু জেলায় হালকা বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা থাকলেও বড় কোনও বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। বাতাসে আদ্রতার পরিমাণ কিছুটা বাড়বে, ফলে দিনভর আর্দ্র ও অস্বস্তিকর আবহাওয়া থাকতে পারে।

 আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় নিম্নচাপটি ধীরে ধীরে বিলীন হয়ে যাবে। তবে এর প্রভাবে উত্তরবঙ্গে মেঘলা আকাশ ও বিচ্ছিন্ন বৃষ্টিপাতের প্রবণতা পরবর্তী এক-দু’দিন স্থায়ী হতে পারে। বিশেষ করে জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার ও দার্জিলিং জেলার প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে, যাতে অতিবৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতা বা ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা এড়ানো যায়।


সব মিলিয়ে, দক্ষিণবঙ্গের উত্তরাংশে অবস্থানরত নিম্নচাপ ‘মান্থা’-র অবশিষ্টাংশ হলেও তার প্রভাবে উত্তরবঙ্গে এখনও বৃষ্টির দাপট বজায় রয়েছে, যা ধীরে ধীরে কমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছে আবহাওয়া দফতর।