আজকাল ওয়েবডেস্ক: ফের রাজ্যের আকাশে দুর্যোগের মেঘ। বঙ্গোপসাগরের উপর তৈরি হওয়া নিম্নচাপের জেরে ইতিমধ্যেই আবহাওয়ার আমূল পরিবর্তন ঘটেছে দক্ষিণবঙ্গে। রোদ ঝলমলে আকাশ মুহূর্তের মধ্যে ঘন কালো মেঘে ঢেকে যাচ্ছে। আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর বঙ্গোপসাগরের উপর তৈরি হয়েছে গভীর নিম্নচাপ। ফলে দক্ষিণবঙ্গ ও উত্তরবঙ্গ জুড়ে তৈরি হয়েছে বজ্র-বিদ্যুৎ-সহ প্রবল ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা। ইতিমধ্যেই দক্ষিণবঙ্গে শুরু হয়ে গিয়েছে এই ঝড়বৃষ্টি। সমুদ্র বা নদী তীরবর্তী অঞ্চলে বইছে ঝোড়ো হাওয়া। প্রশাসনের পক্ষ থেকে মৎস্যজীবীদের সতর্ক করে গভীর সমুদ্রে যাওয়ার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। 

 

একদিকে যেমন সুন্দরবন পুলিশ জেলার পক্ষ থেকে মৎস্যজীবীদের সতর্ক করে গভীর সমুদ্রে যেতে নিষেধ করে মাইকিং করা হচ্ছে পাশাপাশি মৎস্য দপ্তরের তরফ থেকেও মৎস্যজীবীদের গভীর সমুদ্রে আগামী চারদিন মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, সরকারি নিষেধাজ্ঞার খবর পাওয়ার পর মৎস্যজীবীরা ইতিমধ্যেই মাছ ধরা বন্ধ করে গভীর সমুদ্র থেকে উপকূলের দিকে ফিরতে শুরু করেছেন। 

আরও পড়ুুন: পার্সোনাল লোন লুকিয়ে রয়েছে আপনার প্যান কার্ডের নম্বরে, জেনে নিন কীভাবে

স্বাভাবিকভাবেই প্রতিকূল আবহাওয়া এবং সেইসঙ্গে মৎস্য দপ্তরের জারি করা এই নিষেধাজ্ঞার জেরে গভীর সমুদ্রে কিছুদিন মাছ ধরতে যেতে পারবেন না মৎস্যজীবীরা। যার জেরে ভরা বর্ষায় ধাক্কা খাবে ইলিশ মাছের বাজার। জোগান না থাকার কারণে একদিকে যেমন বাজার থেকে কিছুদিনের জন্য উধাও হয়ে যেতে পারে এই মাছ তেমনি যদিও বা অল্প সংখ্যক কিছু মাছ বাজারে আসে তবে তার দাম হবে আকাশছোঁয়া। অনেকের পকেটই অনুমতি দেবে না ওই মাছ কেনার। মৎস্যজীবীদের আক্ষেপ, মাঝে মাঝেই হওয়া এই নিম্নচাপ তাদের রুটি রুজির ক্ষেত্রে বড়সড় বাঁধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বিশেষ করে এই ইলিশের মরসুমে প্রাকৃতিক কারণে বারবার বাঁধা পাচ্ছেন তাঁরা। সেইসঙ্গে ইলিশ প্রেমীরাও এই মরসুমে বঞ্চিত হচ্ছেন তাঁদের সাধের মাছের নাগাল পেতে। এর পাশাপাশি অন্যান্য সামুদ্রিক মাছও কম মিলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ, সমুদ্রেই যদি না যাওয়া যায় তবে আর মাছ মিলবে কোথা থেকে? এটাই জানাচ্ছেন মৎস্যজীবীরা। আবহাওয়ার উন্নতি হলে আবার সমুদ্রে পাড়ি দেবেন তাঁরা। 

 

শুক্রবারের মতো শনিবারও দক্ষিণবঙ্গে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। গভীর নিম্নচাপের জেরে ফুঁসছে সমুদ্র। সুন্দরবন অঞ্চলে ব্লক প্রশাসনের তরফে ইতিমধ্যেই পর্যটকদের সমুদ্রে স্নান করতে নিষেধ করা হয়েছে। সম্প্রতি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে গঙ্গাসাগরে স্নান করতে নেমে তলিয়ে যান এক যুবক। নিখোঁজ যুবক সন্দীপ গৌড় উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে প্রশাসন। এর পাশাপাশি উপকূল অঞ্চলে দুর্যোগ মোকাবিলায় নেওয়া হয়েছে প্রস্তুতি। যে সমস্ত এলাকায় মাটির বাঁধ রয়েছে সেই জায়গাগুলিতে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। মাটির তৈরি বাড়িগুলিতে যারা বসবাস করছেন তাঁদের অনুরোধ করা হয়েছে ত্রাণ শিবিরে যাওয়ার জন্য। সেইসঙ্গে প্রশাসনের তরফে মজুত করা হয়েছে শুকনো খাবার ও পানীয় জল। গোটা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছেন প্রশাসনের কর্তারা।