নুরউদ্দিন, দক্ষিণ ২৪ পরগণা 

 

আছে নৌকা। নেই মাঝি। তবু পারাপারের জন্য এই নৌকাই ভরসা। দক্ষিণ ২৪ পরগণার কাশীনগরে। সাঁকো হিসেবে যার ওপর দিয়ে খাল পারাপার করেন বাসিন্দারা। এর জন্য তাঁদের দিতে হয় জনপ্রতি এক টাকা করে। স্থানীয়রা ছাড়াও নিয়মিত এই পথ ব্যবহার করেন এলাকায় বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা। 

প্রায় ৪০ বছর আগে এলাকার বাসিন্দা গোবিন্দ বৈদ্যর বাবা জ্যোতিষ বৈদ্য মথুরাপুর ২ নম্বর ব্লকের কাশীনগরে এই খাল পারাপারের জন্য এই নৌকার ব্যবস্থা করেন। তখন নদীতে নাব্যতা থাকায় জল এসে খাল ভরিয়ে তুলত। পরবর্তী সময়ে নাব্যতা কমে যাওয়ায় খালেও জলের পরিমাণ কমতে থাকে। ধীরে ধীরে মজে যেতে থাকে খাল। জমা হয় কচুরিপানা। 

কচুরিপানা যত বাড়তে থাকে ততই কমতে থাকে নৌকা চালানোর জায়গা। এরপর তা একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু খাল পার হতেই হবে। তাই আড়াআড়িভাবে দুটি নৌকা জলে ভাসিয়ে নৌকায় ওপরে বানিয়ে ফেলা হয় সাঁকো। যেটাই পারাপারের জন্য ব্যবহার করতে থাকেন যাত্রীরা। বিনিময়ে তাঁদের দিতে হয় এক টাকা করে। যা সংগ্রহ করেন জ্যোতিষ বৈদ্যর ছেলেরা। 

সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চালু থাকে এই পরিষেবা। প্রতিদিন পারাপার করেন ৩০০-র কাছাকাছি যাত্রী। যাদের মধ্যে একটি অংশের মতে, ঐতিহ্য হিসেবে এই নৌকা থাকুক আবার আরেকটি অংশ চাইছেন নৌকা সরিয়ে পাকাপাকিভাবে সেতুর ব্যবস্থা হোক। 

স্থানীয় বাসিন্দা দয়াময় মণ্ডল জানান তিনি প্রতিদিন এই নৌকার সাঁকো ব্যবহার করেন। তাঁর কথায়, 'কাশীনগর বাস স্ট্যান্ড থেকে বাজারে পৌঁছতে অনেকটা দেরি হয়। এই পথে গেলে সময় অনেক কম লাগে। সেজন্যই এক টাকার বিনিময়ে আমরা এই পথ ব্যবহার করি।'