আজকাল ওয়েবডেস্ক: ময়নায় তৃণমূল কংগ্রেসের বিজয়া সম্মিলনীতে ঘটল চাঞ্চল্যকর ঘটনা। রাজ্যের মন্ত্রী এবং দলের নেতা মানস ভূঁইয়াকে সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়। এরপর নির্ধারিত সময়ে মন্ত্রী পৌঁছলেও তার আগেই সভা শেষ করে দেন জেলা নেতৃত্ব। ময়নায় পৌঁছে সভাস্থলে ফাঁকা চেয়ার আর নিস্তব্ধ পরিবেশ দেখে হতবাক মন্ত্রী। দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ তুলে মানস সরাসরি তোপ দাগেন তমলুক সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের বেশ কয়েকজন পদাধিকারীর বিরুদ্ধে।

এরপর পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায় দলীয় সভায় অংশ নিয়ে প্রকাশ্যে মঞ্চ থেকেই ক্ষোভ উগরে দেন মন্ত্রী। কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন,
'নেতারা হোয়াটসঅ্যাপ-ফেসবুকে প্রচার বন্ধ করুন। সময়জ্ঞান শিখুন, শৃঙ্খলা মেনে চলুন। ব্যক্তিকেন্দ্রিক রাজনীতি নয় — আমাদের একটাই নেত্রী মমতা ব্যানার্জি, আর একটা সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এর বাইরে কেউ নেতা নন। দলের নামে নিজের প্রচার বন্ধ করুন, নইলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।' মানস ভূঁইয়া আরও স্পষ্ট বার্তা দেন। তাঁর কথায়, 'দলের পতাকা থাকবে, আর থাকবে শুধু মমতা ও অভিষেকের ছবি। কোন্দল নয়, ঐক্যই এখন দলের মূলমন্ত্র।'

উল্লেখ্য, গত কয়েক মাস ধরেই তমলুক সাংগঠনিক জেলায় তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে। হয়েছে প্রচুর চর্চা। জেলা সভাপতি সুজিত রায় ও নেতা পার্থ সারথী দাসের মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র বাগযুদ্ধ, দুর্নীতির অভিযোগ থেকে শুরু করে 'কান ধরে ওঠবস'-এর ভিডিও ভাইরাল হওয়া — সব মিলিয়ে উত্তাল জেলা রাজনীতি। এমনকী দলের কিছু সদস্যের বিরুদ্ধে বিরোধী শিবির ও শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে যোগাযোগের অভিযোগও উঠেছে।

রাজনৈতিক মহলের মতে, ক্রমবর্ধমান এই অন্দরের বিভাজন রুখতেই এবার কড়া অবস্থান নিয়েছেন মানস ভূঁইয়া। তাঁর বার্তা স্পষ্ট —'দলের ঐক্যেই প্রাধান্য। শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে ছাড় নয়।'

এই নিয়ে স্থানীয় জেলা নেতৃত্ব কেউই মুখ খুলতে চাননি। দলের নির্দেশই শিরোধার্য—এটুকু বলেই দায় সেরেছেন জেলা নেতৃত্ব। তবে তৃণমূল সূত্রে খবর, জেলায় দুই গোষ্ঠীর কোন্দলের জেরেই ঘটেছে বিভ্রান্তি। এক গোষ্ঠী জানিয়েছে, মানস ভূঁইয়ার অনুষ্ঠান দুটোর সময় হবে, অপর গোষ্ঠীর দাবি বিকেল চারটেয় অনুষ্ঠানের কথা জানানো হয়েছিল মানস ভূঁইয়াকে। ফলে স্পষ্ট কমিউনিকেশন গ্যাপ বা যোগাযোগের অভাব তৈরি হয়েছে বলে সূত্র অনুযায়ী জানা গিয়েছে।

তবে তৃণমূলের অন্দরে নেতৃত্বের মধ্যে এই গোষ্ঠী কোন্দল যে সোশ্যাল মিডিয়ায় দিনের পর দিন প্রকাশ পাচ্ছে—মানস ভূঁইয়ার কড়া হুঁশিয়ারির পর তা আদৌ বন্ধ হয় কি না, এখন সেটাই দেখার বিষয়।

আরও পড়ুন- জগদ্ধাত্রী শোভাযাত্রায় থাকবে না বিদ্যুৎ বিভ্রাট, প্রশাসনিক বৈঠকে নেওয়া হল সিদ্ধান্ত