আধুনিক জীবনে মানসিক চাপ, উদ্বেগ ও মাথাব্যথা সাধারণ সমস্যায় পরিণত হয়েছে। ক্রমশ জাঁকিয়ে বসছে মনের অসুখ। মন ভাল রাখতে অনেকেই বিভিন্ন ধরনের পন্থা অবলম্বন করছেন। তবে জানেন কি সহজ একটি উপায়ে ঘরে বসেই কমতে পারে মানসিক চাপ। সামাধান পাবেন অসহ্য মাথার ব্যথারও। বরফ ঠান্ডা জলে হাত ডুবিয়ে রাখলেই মন-মেজাজ থাকবে ফুরফুরে, সম্প্রতি এক গবেষণায় উঠে এসেছে এমনই তথ্য।  

তারকা থেকে আমজনতা, গত কয়েক বছরে সকলের মধ্যে বেড়েছে বরফ জলে স্নানের উন্মাদনা। সহজভাবে বললে ‘আইস বাথ’। সমাজমাধ্যম খুললেই অনেকের এই নয়া ট্রেন্ডে গা ভাসানোর ছবি নজরে আসে। এবার জানা গেল, বরফ জলে শুধু হাত ডোবালেও অনেক উপকার পাওয়া যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, মনের শান্তি ফেরাতে পারে বরফ। আসলে ঠান্ডা জলের সংস্পর্শে শরীরে এক প্রোটিনের ক্ষরণ বাড়ে। যা মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। কীভাবে? ধরুন, আপনি কোনও কারণে মানসিকভাবে ক্লান্ত অনুভব করছেন, ক্রমশ ঘিরে ধরছে অবসাদ। তখনই এই আইস থেরাপি দারুণ কাজ করতে পারে। খানিকক্ষণ বরফ জলে হাত ডুবিয়ে আপনার জীবনের ইতিবাচক ঘটনা চিন্তা করুন। দেখবেন, চটজলদি মন কতটা হালকা লাগছে! এমনকী মাথাব্যথার সমস্যাতেও এই টোটকা দারুণ কাজে আসে।   

আরও পড়ুনঃ কলা খেয়ে ফেলে দিচ্ছেন খোসা! কোন কোন রোগ সারায় জানলে আর এই ভুল করবেন না, রইল কাজে লাগানোর টিপস

বিজ্ঞানীরা ব্যাখ্যা করেছেন, ঠান্ডা জলের সংস্পর্শ শরীরের একটি বিশেষ স্নায়ু অর্থাৎ ভেগাস নার্ভ সক্রিয় করে। এই স্নায়ুটি সরাসরি হৃদস্পন্দন, শ্বাস-প্রশ্বাস ও হজম প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত এবং মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে বড় ভূমিকা পালন করে। অন্যদিকে, সুখস্মৃতির দিকে মনোযোগ দেওয়া বা কৃতজ্ঞতার অনুভূতিতে ফোকাস করা মস্তিষ্কে ইতিবাচক রাসায়নিক নিঃসরণ বাড়ায়। এতে হতাশা বা নেতিবাচক চিন্তার চক্র ভেঙে যায়। যখন এই দুটি প্রক্রিয়া একসঙ্গে কাজ করে, তখন মস্তিষ্ক ও শরীরের মধ্যে তৈরি হয় একটি তাৎক্ষণিক ‘রিসেট’, যা মাথাব্যথা ও মানসিক চাপ উভয়ই কমাতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানসিক চাপ বা হালকা মাথাব্যথা হলে ওষুধ না খেয়েও এই সহজ কৌশল প্রয়োগ করা যেতে পারে। তবে সতর্কবার্তা হিসেবে তাঁরা জানিয়েছেন, যারা ঠান্ডায় সংবেদনশীল বা যাদের রক্তসঞ্চালনজনিত সমস্যা রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে দীর্ঘক্ষণ বরফ ঠান্ডা জলের সংস্পর্শে থাকা ক্ষতিকর হতে পারে। আর মাথাব্যথা যদি ঘন ঘন হয় বা গুরুতর আকার ধারণ করে, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

আরও পড়ুনঃ গরম জল না ঠান্ডা জল? কোনটিতে স্নান করলে উপকার বেশি? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?

আইস বাথের একাধিক উপকারিতা রয়েছে। যেমন- শরীরচর্চা বা অন্য যে কোনও কারণে শরীরে প্রদাহ হলে তা কনকনে ঠান্ডা জলে স্নান করলে কমে যেতে পারে। পেশির ব্যথা কমাতেও কার্যকরী আইস বাথ। একইসঙ্গে রক্ত সঞ্চালন ঠিক থাকে। ফলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে সহজে অক্সিজেন পৌঁছে যায়। দ্রুত শরীরের ক্ষত নিরাময়েও সাহায্য করে বরফ।