আজকাল ওয়েবডেস্ক: চিকিৎসককে ভগবানের মতো দেখেন বহু মানুষ! রোগীরা নিজেদের জীবনের ভার ছেড়ে দেন যাঁদের হাতে, সেই চিকিৎসকই এমন কাজ করলেন? শিউরে উঠছেন বহু মানুষ। নেপথ্যে একজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত চিকিৎসকের কুকীর্তি। চিকিৎসকের নাম, সুমন খুলবে। সাম্প্রতিক এক মামলায় কানাডার একটি আদালত জানিয়েছে, সুমন চিকিৎসক এবং রোগীর পেশাদারী সম্পর্ক নষ্ট করেছেন। এমনকী রোগীদের যৌন হেনস্থাও করেছেন। 

আদালতের রায় ঘোষণার পরই চিকিৎসা নিয়ামক সংস্থা কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস অফ অন্টারিও কানাডায় বসবাসকারী ওই চিকিৎসকের লাইসেন্স বাতিল করেছে। সংস্থার বক্তব্য, সুমন একজন রোগীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেছেন এবং আরও দুই রোগীর সঙ্গে অপেশাদার আচরণ করেছেন। সব ক্ষেত্রেই রোগীর সুরক্ষা সংক্রান্ত আইন ভঙ্গ করেছেন তিনি। পাশাপশি, রোগীদের সঙ্গে তিনি নিজের পেশার বাইরে বেরিয়ে বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপন করেছেন। সেকারণেই কেড়ে নেওয়া হয়েছে তাঁর লাইসেন্স।

ঠিক কী কী অভিযোগ রয়েছে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে? আদালতের রায়ে উল্লিখিত সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগটি ২০১৫ সালের। অভিযোগ সেই সময় এক জিম প্রশিক্ষক চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ভিটামিন থেরাপির জন্য। কিন্তু সুমন তাঁকে ফিজিও থেরাপি এবং মাসল রিকভারি থেরাপি নেওয়ার পরামর্শ দেন। সেই মতো থেরাপি নিতে রাজি হন ওই জিম ট্রেনার। কিন্তু থেরাপির নামে যৌনাচার শুরু করেন সুমন। প্রথমে প্রোকেইন নামের একটি ওষুধ রোগীর উপর প্রয়োগ করেন চিকিৎসক। এটি অবশ করার ওষুধ। তার পর প্রথমে হাত দিয়ে এবং পরে মুখ দিয়ে রোগীর যৌনাঙ্গ উদ্দীপিত করেন। এর পর শুরু হয় চুম্বন এবং মুখমিলন। রোগীর আরও অভিযোগ, তাঁর গোপনাঙ্গ চেপে ধরে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করতে বলেন চিকিৎসক। যৌনাচারের অভিযোগ অস্বীকার করেননি সুমন। তবে তিনি দাবি করেন, এই সবই হয়েছিল পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে।
আরও পড়ুন: মধুচক্র চালানোয় অভিযুক্ত অভিনেত্রী অনুষ্কা দাস! সেক্স র‍্যাকেট থেকে উদ্ধার বাংলা সিরিয়ালের আরও ২ নায়িকা! তুলকালাম মহারাষ্ট্রে 

শুধু যৌন হেনস্থা নয়, রোগীদের সঙ্গে মিলে নিজের ব্যবসা শুরু করার চেষ্টাও করেন ওই চিকিৎসক। আদালতের রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে, ওই জিম ট্রেনার ছাড়াও আরও দুই রোগীর সঙ্গে গভীর সম্পর্ক ছিল সুমনের। তাঁদের তিনি চিকিৎসার বাইরে গিয়েও ‘ভালবাসা’ দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। এই সব কিছুই পেশাগত সীমা লঙ্ঘন করার সমতুল্য বলেই মনে করেছে আদালত।

তবে ওই চিকিৎসক অবশ্য এইসব অভিযোগ মানতে নারাজ। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, এই কেস সম্পর্কিত বহু তথ্য প্রকাশ্যে আনাই হয়নি। তিনি ও তাঁর পরিবার মামলা চালানোর খরচ জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছেন, আর সেই কারণেই তাঁর কণ্ঠস্বর চাপা পড়ে যাচ্ছে বলেও দাবি করেছেন চিকিৎসক। তাঁর আরও দাবি, ছোটবেলা থেকেই ভারতীয় সংস্কৃতিতে মানুষ হয়েছেন তিনি। সেই কারণেই ২০০১ সালে পরিবারের অন্যদের মতো চিকিৎসক হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন। ২০১৮ সালে খোলেন নিজস্ব ক্লিনিক। সেখানে রিজেনারেটিভ মেডিসিন, পেপটাইড থেরাপি, এবং অ্যান্টি এজিং থেরাপি দেওয়া হত। এমনকী তিনি কানাডার সর্বপ্রথম পিআরাপি পদ্ধতি অর্থাৎ ‘প্লেটলেট রিচ প্লাজমা’ পদ্ধতিতে চিকিৎসা শুরু করা চিকিৎসকদের মধ্যে অন্যতম। কাজেই এত নামজাদা এক চিকিৎসক এমন কাণ্ড ঘটাবেন তা ভাবতে পারেননি অনেকেই।