আজকাল ওয়েবডেস্ক: বুধবার জেন জি-রা ভার্চুয়াল বৈঠকে নিজেদের পছন্দের কথা জানিয়েছিলেন। জানিয়েছিলেন, সংখ্যাগরিষ্ঠ বিক্ষোভকারীরা চাইছেন, নেপালের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সুশীলা কারকি বসুন অন্তবর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে। ২৪ ঘণ্টা কাটেনি। বদলে যায় পছন্দ। জানা যায়, সুশীলা নয়, কুলমন ঘিসিংয়ের উপর আস্থা তাঁদের। ২৪ ঘণ্টা কাটেনি, জানা গেল, কুলমন নয়, আস্থা ফের সুশীলাতেই।
একাধিক সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম, সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, নেপালের অন্তবর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নিতে চলেছেন সুশীলা কারকিই। শুক্রবার দুপুরে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স সূত্রে খবর, সুশীলাই সম্ভবত অন্তবর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে বসতে চলেছেন।
এর আগে, বুধবার ভার্চুয়াল বৈঠকে জেন জি-রা কারকির নাম ঘোষণা করেছিলেন। এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, তাঁর রয়েছে ভারত-যোগ। তথ্য, সুশীলা বিরাটনগরের মহেন্দ্র মোরাং কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করার পর, উত্তরপ্রদেশের বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটি (বিএইচইউ) থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৭৫ সালে বেনারস থেকে তিনি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। কারকি পরে নেপালের ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেন। ওই পর্বের পড়াশোনা শেষ হয় ১৯৭৮ সালে। বুধবার এক সংবাদ সাক্ষাৎকারে কারকি জানিয়েছেন, তিনি জেন জি-দের আবেদন মেনে, এই দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত। একইসঙ্গে তিনি তাঁর বিএইচইউ শিক্ষার কথা স্মরণ করেছেন। জানান, তিনি এখনও তাঁর প্রয়াত শিক্ষক এবং বন্ধুদের স্মরণ করেন ভিন দেশে বসেও। তাঁর মনে পড়ে গঙ্গার কথা, নদী তীরে হস্টেলের কথাও।
আরও পড়ুন: এ কী কাণ্ড! গণবিবাহের জন্য পুরুষদের আবেদন গ্রহণই বন্ধ করে দিলেন উদ্যোক্তারা, কী হয়েছে? ...
কারকির পর, কুলমন। তাঁরও রয়েছে ভারত-যোগ। কুলমন ঘিসিং, ভারতের জামশেদপুরের রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে তিনি নেপালের ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয়ের পুলচকের ইনস্টিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে পাওয়ার সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন বলে জানা গিয়েছে। কুলমন ঘিসিং নিজে একজন একজন বৈদ্যুতিক প্রকৌশলী। নেপালে তাঁর বিপুল খ্যাতির কারণ, তিনি সে দেশে চলতে থাকা দীর্ঘকালীন বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করেছিলেন।
ঘিসিং ১৯৯৪ সালে নেপাল বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ (এনইএ)-তে তাঁর পেশাগত কর্মজীবন শুরু করেন, ধীরে ধীরে পদমর্যাদার উন্নতি হয়। ২০১৬ সালে, ঘিসিংকে এনইএ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিযুক্ত করা হয়। ওই পদে থাকাকালীন তিনি, দেশের ১৮ ঘন্টা দৈনিক বিদ্যুৎ বিভ্রাট দূর করে নেপালের ঘরে ঘরে পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন। ২০২০-সালে তাঁর জায়গায় অন্য একজনকে আনা হলেও, ২০২১ সালে পুরনো পদে ফেরানো হয় ঘিসিং-কে।
তথ্য, কেপি ওলি সরকারের সঙ্গে মতবিরোধ হয়েছিল তাঁর। তাঁর মেয়াদ শেষের মাত্র কয়েকমাস আগে কেপি শর্মা ওলি সরকার ২৪শে মার্চ, ২০২৫ তারিখে কুলমন ঘিসিংকে এনইএ-এর নির্বাহী পরিচালক পদ থেকে অপসারণ করে। তাঁর জায়গায় ওই পদে বসেন, হিতেন্দ্র দেব শাক্য। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি ঘিসিং-এর অপসারণের তীব্র সমালোচনা করেছিল সেই সময়।
কুলমনকে নিয়ে আলোচনার মাঝেই জানা গেল, ফের সুশীলাতেই আস্থা বিক্ষোভকারীদের। এর আগে সুশীলা সেনার সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন বলেও জানা যায়। উল্লেখ্য, সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ নিষিদ্ধ করার প্রতিবাদে রবিবার থেকে আন্দোলন সংঘঠিত হয় নেপালে। ক্রমে সোমে তা ভয়াবহ আকার ধারণ করে। বহু বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়। সোমবার রাতে নেপাল সরকার ওই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নিলেও, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। মঙ্গলেও চলে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ। সরকার পড়ে যান সেদিনই। পদত্যাগ করেন ওলি। তারপর থেকেই অন্তবর্তী সরকার গঠন নিয়ে জল্পনা সে দেশে।
