আজকাল ওয়েবডেস্ক: ১০ মাস আগে সাক্ষাত হয়েছিল। ফের সাক্ষাত দশ মাস পর। এর মাঝখানে দুনিয়ার রাজনীতিতে বদল এসেছে বহু ক্ষেত্রে। বিশ্ব রাজনীতির সমীকরণ বদলে যাওয়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি চর্চা আমেরিকার শুল্ক নীতি নিয়ে। এই পরিস্থিতিতে কেমন হবে মোদি-জিনপিং বৈঠক, নজর ছিল সেদিকে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী, নিজেই দু' জনের বৈঠকের একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।
চীনের তিয়ানজিনে দু' দিনের সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে জিনপিংয়ের সঙ্গে এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদি সীমান্তে সেনা প্রত্যাহারের পর 'শান্তি ও স্থিতিশীলতার পরিবেশ' তৈরি হয়েছে বলে উল্লেখ করেন এদিন। বার্তা দেন পারস্পারিক বন্ধুত্বের।
শুরুতেই তিনি বলেন, 'উষ্ণ অভ্যর্থনার জন্য আমি আন্তরিকভাবে আপনাকে ধন্যবাদ জানাই। গত বছর, কাজানে আমাদের একটি অত্যন্ত অর্থবহ আলোচনা হয়েছিল, যা আমাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে ইতিবাচক দিকনির্দেশনা দিয়েছে।'
আরও পড়ুন: বিদেশজলে নামলেই মগজে ঢুকছে বিরল রোগ, ড্রাগনের দেশে জারি হল সতর্কতা
রবিবার তাঁদের বৈঠক চলেছে ঘণ্টাখানেকের বেশি সময় ধরে। তিয়ানজিন শহরে জিনপিং-মোদী দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়েছে। সূত্রের খবর, ওই বৈঠকেই মোদি বলেছেন, ভারত এবং চীন, বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দুই দেশ। দুটি দেশই তাদের জনগনের উন্নতি সাধন, মানব সমাজের অগ্রগতির জন্য নিরলস কাজ করে থাকে। এই দুই দেশের বন্ধুত্ব হওয়া উচিত।
ওই সাক্ষাতেই মোদি বলেন, 'আমাদের পারস্পরিক সংহতির উপর ভারত এবং চিনের ২০৮ কোটি মানুষের স্বার্থ জড়িয়ে আছে। এতে সারা পৃথিবীর কল্যাণ হবে। পারস্পরিক বিশ্বাস, সম্মান এবং সংবেদনশীলতার ভিত্তিতে আমরা এই সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যেতে আগ্রহী।' প্রধানমন্ত্রী মোদি কৈলাস মানস সরোবর যাত্রা পুনরায় শুরু করা এবং দুই দেশের মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচলের বিষয়টিও উত্থাপন করেন এদিন।।
Sharing my remarks during meeting with President Xi Jinping. https://t.co/pw1OAMBWdc
— Narendra Modi (@narendramodi)Tweet by @narendramodi
অন্যদিকে বার্তায় জিনপিং বলেন, 'আমরা বিশ্বের দু’টি সবচেয়ে জনবহুল দেশ। আমাদের বন্ধুত্ব, প্রতিবেশী হিসাবে একে অপরের পাশে থাকা জরুরি। ড্রাগন এবং হাতির একজোট হওয়া দরকার।' তিনি বলেন, 'আপনার সঙ্গে আবার দেখা করতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। SCO শীর্ষ সম্মেলনের জন্য আপনাকে চীনে স্বাগত জানাচ্ছি। গত বছর, কাজানে আমাদের একটি সফল বৈঠক হয়েছিল। আমরা বিশ্বের দুটি সর্বাধিক জনবহুল দেশ এবং আমরা গ্লোবাল সাউথের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যও। আমরা উভয়েই আমাদের দুই জনগণের কল্যাণ উন্নত করার, উন্নয়নশীল দেশের সংহতি ও পুনর্জাগরণ প্রচার করার এবং মানব সমাজের অগ্রগতি প্রচারের ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করি। উভয় দেশের জন্যই সঠিক পছন্দ হল এমন বন্ধু হওয়া যাদের প্রতিবেশীসুলভ এবং সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে।'
এর আগে প্রধানমন্ত্রী মোদি জাপানের ১৬টি প্রিফেকচারের গভর্নরের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং রাজ্য-প্রিফেকচার সহযোগিতার সম্ভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি ১৫তম বার্ষিক ভারত-জাপান শীর্ষ সম্মেলনে চালু হওয়া স্টেট-প্রিফেকচার পার্টনারশিপ ইনিশিয়েটিভের অধীনে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, “টোকিওতে জাপানের ১৬টি প্রিফেকচারের গভর্নরদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছি। রাজ্য-প্রিফেকচার সহযোগিতা ভারত-জাপান বন্ধুত্বের এক গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। এই কারণেই ১৫ তম বার্ষিক ভারত-জাপান সম্মেলনে এনিয়ে একটি আলাদা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল।” তিনি আরও বলেন, “বাণিজ্য, উদ্ভাবন, উদ্যোগসহ বহু ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিশাল সুযোগ রয়েছে। ভবিষ্যতমুখী ক্ষেত্র যেমন স্টার্টআপ, প্রযুক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাও দুই দেশের জন্য লাভজনক হতে পারে।”
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এক্স-এ পোস্ট করে জানায়: “অটুট ভারত-জাপান সম্পর্ক আরও এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টোকিওতে জাপানের ১৬টি প্রিফেকচারের গভর্নরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।” মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আলোচনায় প্রযুক্তি, উদ্ভাবন, বিনিয়োগ, দক্ষতা উন্নয়ন, স্টার্টআপ ও ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্প ক্ষেত্রে ভারতীয় রাজ্য ও জাপানি প্রিফেকচারের মধ্যে সহযোগিতা আরও গভীর করার উপায় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
এমইএ-র বিবৃতিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী মোদি তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন যে, প্রাচীন সভ্যতার যোগসূত্র থেকে প্রাণশক্তি পাওয়া ভারত-জাপান সম্পর্ক ক্রমাগত এগিয়ে চলেছে।
