আজকাল ওয়েবডেস্ক: বুধবার থেকেই উত্তাল আহমেদাবাদ। সিনিয়রকে স্কুলের মধ্যেই খুন করে জুনিয়র। বৃহস্পতিবারও দফায় দফায় উত্তাল হয়েছে পরিস্থিতি। ভাঙচুর, বিক্ষোভে অবরুদ্ধ এলাকা। এসবের মাঝেই সামনে এসেছে একটি চ্যাট। অর্থাৎ কথোপকথন। যদিও ভাইরাল হওয়া ওই কথোপকথন কাদের, আদেউ ওই পড়ুয়ার কি না তার সত্যতা যাচাই করেনি আজকাল ডট ইন। তবে সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, সিনিয়রকে খুনের পর অপর এক বন্ধুর সঙ্গে ওই পড়ুয়ার কথোপকথন ভাইরাল হওয়া ওই চ্যাট।

কী লেখা রয়েছে তাতে? দেখা গিয়েছে একজন বারেবারে জিজ্ঞাসা করছে ওই পড়ুয়াকে, সেই কি ছুরি মেরে খুন করেছে দশম শ্রেণির পড়ুয়াকে? এক-দুটি কথোপকথনের পর, ওই পড়ুয়া  স্বীকার করে, সে খুন করেছে। অপর পড়ুয়াকে লিখতে দেখা গিয়েছে, এমনি মারধোর করা যেত, খুন করা উচিত হয়নি। ছেলেটি ওই কথোপকথনে জানিয়েছে, 'আমাকে জিজ্ঞাসা করছিল কে তুই? কী করে নিতে পারবি?', তারপরেই নাকি ছুরি দিয়ে পরপর কোপ বসায় সে।

আরও পড়ুন: 'সময় এসেছে হিসেব-নিকেশের', পূর্ব পাকিস্তানকে ফিরে পেতে চায় ইসলামাবাদ! পদ্মাপারে বদলে যাবে সব সমীকরণ?...

বুধবারেই  গুজরাটের শিক্ষামন্ত্রী প্রফুল পাঁশেরিয়া জানান, অভিযুক্ত তরুণকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তিনি সবাইকে শান্তি বজায় রাখার আহ্বানও জানিয়েছেন। এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, 'নবম শ্রেণির এক ছাত্র দশম শ্রেণির এক ছাত্রকে হত্যা করেছে। এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক এবং একইসঙ্গে সভ্য সমাজের জন্য একটি লাল সঙ্কেত।' তিনি আরও জানান, পুলিশ ঘটনার পূর্ণ তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।

মূল ঘটনা ঘটেছে মঙ্গলবার। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার বিকেলে, স্কুলের ঘণ্টা বাজার পর, নয়ন তার ব্যাগ গুছিয়ে বাড়ির দিকে রওনা দেয়। সে সেভেন্থ-ডে অ্যাডভেন্টিস্ট উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভবন থেকে বেরিয়ে আসার আগেই অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র এবং আরও কয়েকজন ছেলে তাকে ঘিরে ফেলে। বাকবিতণ্ডা শীঘ্রই মারামারিতে পরিণত হয়। অষ্টম শ্রেণির ওই পড়ুয়া নয়নকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে পালিয়ে যায় ঘটনাস্থল থেকে। 

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, নয়ন পেটে ছুরিকাঘাতের ক্ষত নিয়ে স্কুলে ফিরে যাচ্ছে। তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, তবে শেষরক্ষা করা যায়নি। মৃত্যু হয়েছে তার। জানা গিয়েছে, গত সপ্তাহে নিহত ছাত্রের এক তুতো ভাইয়ের সঙ্গে অভিযুক্ত ছাত্রের বাকবিতণ্ডা হয়। সেখান থেকেই মূলত এই বিরোধের সূত্রপাত। অভিভাবকদের অভিযোগ, অভিযুক্ত ছাত্রের সহিংস আচরণের ইতিহাস রয়েছে এবং তা স্কুল কর্তৃপক্ষকে আগে থেকেই জানানো হয়েছিল, কিন্তু তারা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। বুধবারে জানা যায়, যখন আহত ছাত্র স্কুল চত্বরে পড়ে ছিল, তখন কোনও শিক্ষক বা কর্মী তাঁর সাহায্যে এগিয়ে আসেননি। শেষ পর্যন্ত অভিভাবকরাই একটি অটোরিকশা করে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান।
ঘটনার জেরে জেলাশিক্ষা কর্মকর্তা স্কুল কর্তৃপক্ষকে একটি নোটিস পাঠিয়েছেন এবং পুরো ঘটনার বিস্তারিত প্রতিবেদন ও সিসিটিভি ফুটেজ চেয়েছেন। পুরো ঘটনার তদন্ত জারি রয়েছে।

 

উল্লেখ্য, ঘটনার জেরে বুধবার থেকেই উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়। স্কুল ঘিরে বিক্ষোভ দেখান বহু মানুষ। ঘটনায় ক্ষুব্ধ অভিভাবক ও স্থানীয় মানুষজন স্কুল চত্বরে প্রবেশ করে ফার্নিচার ও কাচ ভেঙে দেয়। এমনকী প্রধান শিক্ষক ও অন্যান্য শিক্ষকদের মারধরও করেন বলেও অভিযোগ। ইতিমধ্যেই ঘটনা ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে চারিদিকে।