আজকাল ওয়েবডেস্ক: রাজস্থানের উদয়পুর জেলার পাঠার পাড়ি গ্রামে এক নির্মীয়মাণ স্কুল ভবনের বারান্দা ভেঙে পড়ে মৃত্যু হল এক কিশোরীর। জানা গিয়েছে, ভয়াবহ এই ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও একজন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার দুর্ঘটনার সময় দুই কিশোরী স্কুলের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। আহত ছাত্রীকে ইতিমধ্যেই তার পরিবার চিকিৎসার জন্য গুজরাটে নিয়ে গেছে বলে খবর স্থানীয় সূত্রে। স্থানীয় গ্রামবাসীরা নিম্নমানের নির্মাণকাজকে এই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করেছেন এবং নির্মীয়মাণ স্কুল ভবনের নিরাপত্তার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বর্তমানে ঘটনার তদন্ত চলছে। উল্লেখ্য, এর আগে গত মাসে ঝালাওয়াড়ে সরকারি স্কুল ভবনের একটি অংশ ভেঙে পড়ায় সাত শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছিল এবং ১৫ জনেরও বেশি আহত হয়েছিল।
দুর্ঘটনার সময় শিশুরা শ্রেণিকক্ষে পড়াশোনা করছিল। পিপলোড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাদ ভেঙে পড়লে বহু শিক্ষার্থী ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে যায়। পুলিশ, স্থানীয় বাসিন্দা এবং প্রশাসনের কর্মকর্তারা দ্রুত উদ্ধারকাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ২০ বছর পুরনো ভবনটির পাথরের ছাদের ভর তীব্র ক্ষতির কারণ হয়েছিল। নিহতরা সবাই সপ্তম শ্রেণির ছাত্রছাত্রী, যাদের বয়স ছিল ১২ থেকে ১৪ বছরের মধ্যে। রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল শর্মা ঘটনাটিকে ‘মর্মান্তিক ও হৃদয়বিদারক’ বলে আখ্যা দেন এবং আহতদের যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন। তিনি শোকবার্তায় বলেন, ‘ভগবান নিহতদের আত্মার শান্তি দান করুন এবং শোকাহত পরিবারগুলোকে এই অপার দুঃখ সহ্য করার শক্তি দিন’। শিক্ষামন্ত্রী মদন দিলাওয়ারও ঘোষণা করেছিলেন যে এই দুর্ঘটনার উচ্চপর্যায়ের তদন্ত শুরু করা হবে। কিন্তু তার কয়েক মাস পর ফের এই ঘটনা ঘটল।
দিন কয়েক আগেই সামনে এসেছিল আরও এক ঘটনা। জানা যায়, ভোপালের বারখেদা পাঠানিতে পিএম শ্রী স্কুলে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা ঘটেছে। দিন কয়েক আগে ভরা ক্লাসরুমে ভেঙে পড়ে আস্ত সিলিং ফ্যান। ফ্যানটি ভেঙে পড়ে পড়ুয়াদের উপরেই। অনেকেই আতঙ্কে পালাতে পারলেও, কয়েকজন তাতেই চাপা পড়ে। তার জেরে ঘটে বিপত্তি।স্কুলের তরফে জানা গেছে, ঘটনার দিন প্রায় সকল পড়ুয়াই উপস্থিত ছিল। ফলে ফাঁকা ছিল না ক্লাসরুম। মনোযোগ দিয়ে সকলেই পড়া বুঝছিল। ক্লাসে ছিলেন একজন শিক্ষিকা। বোর্ডে লিখে পড়া বোঝাচ্ছিলেন তিনি। মাঝ পথেই বিকট শব্দ শুনতে পান তিনি। মাথা তুলে উপরে তাকাতেই দেখেন, প্লাস্টার খসে পড়ছে। এর কয়েক মিনিটের মধ্যেই চলন্ত সিলিং ফ্যানটি পড়ুয়াদের উপরে ভেঙে পড়ে। এর দিন কয়েক আগে, জুলাই মাসের শুরুতে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে আরও একটি স্কুলের অংশ। ঘটনাটি ঘটে বলাগড়ের নিশ্চিতপুর জুনিয়ার বেসিক স্কুলে। আচমকা ঘরের ছাদ ভেঙে পড়ল হুড়মুড় করে।
স্বাধীনতার আগে তৈরী হয় স্কুলটি। যত্নের অভাবে স্বাস্থ্য খারাপ হয়েছে। সংস্কারের কাজ হয়নি অনেক দিন হয়ে গিয়েছে। স্কুলের তরফে জরাজীর্ণ স্কুল বাড়ি সংস্কারের আবেদন জানানো হয়েছে শিক্ষা দপ্তর সহ সংশ্লিষ্ট সব জায়গায়। অভিযোগ এসছে কোনও কাজ হয়নি এখনও। বাকুলিয়া ধোবাপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত নিশ্চিতপুর জুনিয়া বেসিক স্কুল। ছাদ ভেঙে পড়ার খবর পাওয়া মাত্রই স্কুলে গিয়েছিলেন বলাগড় বিডিও ও শিক্ষা দপ্তরের এস আই। সকলেই রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অভিভাবকেরা প্রশাসনের কর্তাদের সামনে পেয়ে নিজেদের ক্ষোভ উগরে দেন। স্কুল ভেঙে পড়া প্রসঙ্গে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানিয়েছিলেন, 'গত কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি হওয়ায় স্কুল ঘরের ভেতরে জল পড়ছিল। তাই ওই ঘরে কোন ক্লাস নেওয়া হচ্ছিল না। এদিন স্কুল চলাকালীন হঠাৎ করে ছাদ ভেঙে পড়ে। প্রশাসনের সমস্ত দপ্তরে আগে থেকেই স্কুল বাড়ির বেহাল দশার বিষয়টি জানানো ছিল। প্রশাসনের তরফে আশ্বস্ত করা হয়েছে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
