ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের দুর্ধর্ষ জলদস্যু জ্যাক স্প্যারোর পাঁচ নম্বর ছবি ‘ডেড মেন টেল নো টেলস’ মুক্তির পর কেটে গেছে আট বছরেরও বেশি সময়। ‘পাইরেটস অফ দ্য ক্যারিবিয়ান’ ফ্র্যাঞ্চাইজির ছ’নম্বর ছবিতে কি আবার দেখা মিলবে ক্যাপ্টেন জ্যাক স্প্যারো রূপী জনি ডেপের? অবশেষে মুখ খুললেন প্রযোজক জেরি ব্রাকহাইমার। এবং করে বসলেন বড়সড় মন্তব্য, যা শুনে উত্তাল দর্শকমহল। 

 

২০০৩ সালে ‘দ্য কার্স অফ দ্য ব্ল্যাক পার্ল’-এ প্রথমবার জ্যাক স্প্যারো সেজে ঝড় তুলেছিলেন জনপ্রিয় হলিউড তারকা জনি ডেপ। তারপর একে একে আসতে থাকে সেই সিরিজের  ‘ডেড ম্যানস চেস্ট’ (২০০৬), ‘অ্যাট ওয়ার্ল্ড’স এন্ড’ (২০০৭), ‘অন স্ট্রেঞ্জার টাইডস’ (২০১১) আর ‘ডেড মেন টেল নো টেলস’ (২০১৭) ছবি — আর সব ছবিতেই জনি ডেপের দস্যি রূপে মজেছে দুনিয়া।

 

 

সদ্য দেওয়া সাক্ষাৎকারে ‘পাইরেটস অফ দ্য ক্যারিবিয়ান’ ফ্র্যাঞ্চাইজির প্রযোজক ব্রাকহাইমার জানালেন, ডেপের সঙ্গে তাঁর ফের কথাবার্তা হয়েছে ‘পাইরেটস’-এর ছয় নম্বর ছবি নিয়ে। যদিও ২০১৮ সালে স্ত্রী অ্যাম্বার হার্ডের বিতর্কিত আর্টিকেল প্রকাশের পর, আর তাঁদের কুখ্যাত আদালত-যুদ্ধ চলাকালীন, ডিজনি সস্তা জনি ডেপের সঙ্গে এই সিরিজের সম্পর্ক ছিন্ন করে। পরে অবশ্য অভিনেতার কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে এই সিরিজে তাঁকে ফেরার প্রস্তাব দেয় ডিজনি। যদিও জনি ডেপ তাতে কোনও মন্তব্য করেননি। অন্তত প্রকাশ্যে। 

 

প্রযোজকের ভাষায়, “যদি গল্পটা জনির পছন্দ হয়, আমার দৃঢ় বিশ্বাস তিনি রাজি হবেন ফের এই চরিত্রে অভিনয় করতে... তাই সবই নির্ভর করছে চিত্রনাট্যের উপর।”উল্লেখ্য, ২০১৯ সাল থেকেই ষষ্ঠ ছবির আলোচনা চলছে, কিন্তু নির্মাতারা এখনও আনুষ্ঠানিক কিছু ঘোষণা করেননি। তবে ব্রাকহাইমারের আশা, পাইরেট সিরিজের এটি রিবুট প্রজেক্ট হলেও ক্যাপ্টেন জ্যাক স্প্যারোর ঝলক মিলবে।

 

যদিও  ২০২২ সালের মানহানি মামলায় আদালতে ডেপ স্পষ্ট বলেছিলেন— “তারা যদি ৩০০ মিলিয়ন ডলার দিলেও আমি ফিরব না।” তাঁর মতে, “যাঁদের জন্য আমি প্রাণপাত করে কাজ করেছি, তাঁদের কাছে গভীরভাবে প্রতারিত বোধ করেছিলাম।”
‘ডেড মেন টেল নো টেলস’-এ ডেপের সঙ্গে ছিলেন জিওফ্রে রাশ, অরল্যান্ডো ব্লুম ও কিয়ারা নাইটলি। কিন্তু এবার কি সত্যিই দস্যি টুপিটা আবার মাথায় তুলবেন জনি? ভক্তরা অপেক্ষায়।


পর্দার সামনে নয়, বরং পর্দার পিছনে ছবি পরিচালনায় মনোযোগ দিয়েছেন আপাতত। তাঁর পরিচালিত ‘মদি’ মুক্তি পেয়েছে গত বছর। ইটালির শিল্পী আমেদিও মদিগ্লিয়ানির জীবনীর উপর নির্মিত এই ছবি। তা হলে কি আর কোনও দিনই অভিনেতা হিসেবে জনি ডেপের দেখা মিলবে না? প্রায় ২৫ বছর পরে পরিচালকের আসনে নিজেকে ফিরে পেয়ে খুশি জনি ডেপ। সূত্রের খবর, অদূর ভবিষ্যতে জনি পর্দায় ফিরতে পারেন। উপযুক্ত সময় এলে আবারও অভিনয়ে ফিরতে পারেন পর্দার ‘জ্যাক স্প্যারো’।


অভিনয় জীবনের বাইরে ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও বার বার শিরোনামে এসেছেন জনি ডেপ। প্রাক্তন স্ত্রী অ্যাম্বার হার্ডের সঙ্গে আইনি জটিলতায় দীর্ঘ দিন যুঝছিলেন অভিনেতা। গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ। তবে সব শেষে আইনি গেরো কাটিয়ে মামলা জিতেছিলেন মার্কিন অভিনেতা। তার পরে স্বমহিমায় ফিরেছেন হলিউডে। ‘জ্যঁ দু ব্যারি’ ছবির হাত ধরে আবারও বুঝিয়ে দিয়েছিলেন তাঁর অভিনয়ের দক্ষতা। জনির তারকাসুলভ প্রত্যাবর্তন জায়গা করে নিয়েছিল দর্শক ও সমালোচকদের মনে।