আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজের সমস্ত ভাল দিকের মধ্যে অন্যতম পিচ। প্রত্যেক টেস্ট পাঁচদিন পর্যন্ত গড়ায়। ব্যাটারদের পাশাপাশি বোলারদেরও সাহায্য করে উইকেট। কখনই পিচ একপেশে ছিল না। সাধারণত অ্যাওয়ে সফরের সময় উইকেট হোম টিমের সুবিধা অনুযায়ী করা হয়। তবে এবার তেমন ছিল না। খেলার মানকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। যার ফলে প্রত্যেক টেস্ট চিত্তাকর্ষক হয়েছে। ভাল পিচ হলে একটা টেস্ট ম্যাচ কতটা উপভোগ্য হতে পারে তার প্রমাণ অ্যান্ডারসন-তেন্ডুলকর সিরিজ। ইংল্যান্ডের পিচের প্রশংসা করলেন দিলীপ ভেঙ্গসরকর। জানান, তাঁদের থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত বাকিদের।

ভেঙ্গসরকর বলেন, 'ইংল্যান্ডের টেস্ট সংস্কৃতির প্রশংসা করতেই হবে। প্রত্যেক ম্যাচেই প্রচুর দর্শক মাঠ ভরায়। স্পোর্টিং উইকেটের জন্য সবকটা টেস্ট পাঁচদিন পর্যন্ত গড়ায়। এই সিরিজ দীর্ঘদিন মানুষের মনে থাকবে। ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে টেস্টের আগ্রহ ফিরিয়ে এনেছে। টেস্ট ক্রিকেটের গুরুত্বও বাড়িয়ে দিয়েছে। এটা প্রমাণ করছে, ভাল পিচ বানালে, টেস্ট শুধু বেঁচেই থাকবে না, রমরমিয়ে এগোবে।' চলতি বছরই ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ আছে। ভারতের প্রাক্তন তারকা চান, স্পোর্টিং উইকেট তৈরি করুক বিসিসিআই। ভেঙ্গসরকর বলেন, 'আশা করব ঘরের মাঠে আসন্ন দুটো টেস্ট সিরিজে ভারতও স্পোর্টিং উইকেট তৈরি করবে। এই বিষয়ে অধিনায়ক এবং কোচের কথা শোনা উচিত নয় বোর্ডের। যারা শুধুমাত্র সাময়িক রেজাল্টের কথা ভাবে। ম্যাচ জিতে ওরা বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের যোগ্যতা অর্জন করতে চায়।' 

টেস্টের ইতিহাসে অন্যতম প্রতিযোগিতামূলক সিরিজ। পঞ্চম দিনই সব টেস্টের ফয়সালা হয়। সিরিজ ২-২ ড্র হয়। ওভালে শেষ ম্যাচ ৬ রানে জেতে ভারত। প্রথম কয়েকদিন ব্যাটাররা পিচ থেকে সুবিধা পায়। খেলার বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বোলাররা ম্যাচে ফেরে। ক্রিকেট পণ্ডিতরা ইংল্যান্ডের পিচের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিল। তবে আইসিসি পিচ রেটিং আহামরি নয়। শুধুমাত্র হেডিংলি টেস্টের পিচ ভাল রেটিং পায়। বাকি পিচগুলোকে সন্তোষজনকের অ্যাখ্যা দেয় অ্যাপেক্স বোর্ড। প্রথম টেস্টের পিচ এবং আউটফিল্ড রেটিং খুবই ভাল। এজবাস্টনে দ্বিতীয় টেস্টে পিচ রেটিং মোটামুটি। আউটফিল্ড রেটিং খুবই ভাল। লর্ডস এবং ম্যাঞ্চেস্টারের পিচ রেটিং সন্তোষজনক। দুটো মাঠেরই আউটফিল্ড রেটিং খুব ভাল। পঞ্চম টেস্টের রেটিং এখনও প্রকাশিত হয়নি। 

প্রসঙ্গত, সিরিজ চলাকালীন ওভালের পিচ কিউরেটরের সঙ্গে তুমুল বচসায় জড়িয়ে পড়েন গৌতম গম্ভীর। অ্যান্ডারসন-তেন্ডুলকর ট্রফির শেষ টেস্টের দু'দিন আগে এই ঘটনা ঘটে। তার একদিন আগেই লন্ডনে পৌঁছয় টিম ইন্ডিয়া। সেদিন ভেন্যুতে প্রথম প্র্যাকটিস সেশন ছিল। কিন্তু ভারতীয় দলকে যে পরিকাঠামো দেওয়া হয় তাতে অসন্তুষ্ট ছিলেন গভীর। আলোচনা তর্কের পর্যায় পৌঁছয়। যাতে প্রচণ্ড চটে যান ভারতের হেড কোচ। গ্রাউন্ড স্টাফদের দিকে আঙুল তুলে চিৎকার করতে দেখা যায় তাঁকে। গম্ভীরকে বলতে শোনা যায়, 'তুমি বলতে পারো না আমাদের কী করতে হবে।' পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায়, হস্তক্ষেপ করেন ব্যাটিং কোচ শীতাংশু কোটাক। ভারতীয় কোচিং স্টাফের বাকি সদস্যরা‌ মিলে পরিস্থিতি সামাল দেয়।