আজকাল ওয়েবডেস্ক: কুখ্যাত মুম্বইয়ের ট্র্যাফিক জ্যাম। চর্চা হয় দেশের সর্বত্র। এই ট্র্যাফিক জ্যামের জেরেই থেমে গেল একটা জীবন। মুম্বইয়ের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার পরও বীভৎস ট্রাফিক জ্যামের জেরে সময়মতো হাসপাতালে পৌঁছতে না পেরে প্রাণ গেল মহারাষ্ট্রের পালঘর জেলার ৪৯ বছরের ছায়া পুরভের।

ঘটনাটি একদিকে যেমন ৪৮ নম্বর জাতীয় সড়কের ভয়াবহ যানজটের ছবি স্পষ্ট করেছে, তেমনই প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে পালঘরের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোকে।

৩১ জুলাইয়ের ঘটনা। পালঘরের মধ্যকর নগরে নিজের বাড়ির কাছে দাঁড়িয়ে ছিলেন ছায়া পুরভ। তাঁর মাথার উপর হঠাৎই ভেঙে পড়ে একটি গাছের ডাল। গুরুতর আহত হন ছায়া দেবী। তাঁর পাঁজর, কাঁধ ও মাথায় আঘাত লাগে। স্থানীয় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে পাঠানো হয় মুম্বইয়ের হিন্দুজা হাসপাতালে। কারণ পালঘরে কোনও ট্রমা সেন্টার নেই।

প্রায় ১০০ কিমি দূরের হাসপাতালে পৌঁছতে সাধারণত আড়াই ঘণ্টা লাগে। দুপুর তিনটের পরপরই অজ্ঞান অবস্থায় তাঁকে অ্যাম্বুল্যান্সে তোলা হয়, স্বামী কৌশিক পুরভ ছিলেন তাঁর পাশে। কিন্তু এনএইচ-৪৮ এ তীব্র যানজট থাকায় অ্যাম্বুল্যান্স চাকা গড়ায়নি। সন্ধ্যা ছয়'টায়, তিন ঘণ্টারও বেশি পরে, অ্যাম্বুল্যান্স সামান্য এগোয়। ততক্ষণে অজ্ঞান করার ওষুধের প্রভাব কমে আসায় ছায়াদেবীর অসহনীয় যন্ত্রণা হতে থাকে।

আরও পড়ুন- বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশে ভয়ঙ্কর অবস্থা, সরকারি চাকরির অপেক্ষায় হাজার হাজার ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার-এমবিএ

শেষ চেষ্টা হিসেবে অ্যাম্বুল্যান্স ঢুকে পড়ে মীরা রোডের অরবিট হাসপাতালে, যা হিন্দুজা হাসপাতাল থেকে ৩০ কিমি আগে। সন্ধে ৭টা নাগাদ সেখানকার চিকিৎসকরা ছায়াদেবীকে পরীক্ষা করে মৃত ঘোষণা করেন।

কৌশিকবাবুর কথায়, "আর আধ ঘণ্টা আগে পৌঁছতে পারলে হয় তো আমার স্ত্রীকে বাঁচানো যেত। চার ঘণ্টা ধরে তাঁকে যন্ত্রণায় ছটফট করতে দেখেছি।"

এনডিটিভির সাথে কথা বলতে গিয়ে হতভাগ্য স্বামী কৌশিক পুরভ জানান যে, স্ত্রীকে বাঁচানোর জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু যানজট তাঁদের সমস্ত প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছে। তিনি আরও জানান, রাস্তা গর্তে ভরা  ছিল, প্রতিটা ধাক্কায় যন্ত্রণায় চিৎকার করছিলেন। উল্টো দিক থেকে গাড়ি আসায় যানজট আরও বেড়ে গিয়েছিল। আমরা কিছুই করতে পারলাম না।