আজকাল ওয়েবডেস্ক: আগরতলা থেকে ধর্মনগরগামী লোকাল ট্রেনে যাত্রাপথে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লেন ত্রিপুরা বিধানসভার অধ্যক্ষ বিশ্ববন্ধু সেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় আগরতলা রেলস্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়ার কিছুক্ষণ আগে শৌচাগারে গেলে তিনি আচমকাই জ্ঞান হারান বলে জানা গিয়েছে। তৎক্ষণাৎ তাঁকে আগরতলার ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজে (টিএমসি) নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা জানান, তাঁর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে এবং জরুরি অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন। খবর পেয়ে টিএমসি হাসপাতালে ছুটে যান মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডা. মানিক সাহা এবং বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী। প্রাথমিক চিকিৎসার পর মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়ের মাঝে অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁকে আগরতলার এক বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়, যেখানে রাতেই অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। 

অস্ত্রোপচারের সময় হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডা. মানিক সাহা, মন্ত্রী রতন লাল নাথ, টিংকু রায়, সুধাংশু দাস, সুশান্ত চৌধুরী, বিধানসভার মুখ্য সচেতক কল্যাণী রায় এবং প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। খবর পেয়ে কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন ও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি আশীষ কুমার সাহাও হাসপাতালে যান। অস্ত্রোপচার শেষে মুখ্যমন্ত্রী জানান, বিশ্ববন্ধু সেনের অপারেশন সফল হয়েছে এবং তাঁর অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল। আগামী ৭২ ঘণ্টা তাঁকে কড়া পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, বিশ্ববন্ধুর চিকিৎসার জন্য একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: ‘তৈরি থাকো,শীঘ্রই আসছি’, মুম্বইয়ে শোরুম খোলার কিছুদিনের মধ্যে টেসলার নয়া ঘোষণা সামনে আসতেই শোরগোল

বিধানসভার অধ্যক্ষের শারীরিক অবস্থার উপর নিয়মিত নজরদারি চালাচ্ছেন বোর্ডের সদস্যরা। প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে ত্রিপুরায় এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে শহরের অন্যতম প্রধান স্বাস্থ্যকেন্দ্র, সরকারি গোবিন্দ বল্লভ পন্ত (জিবিপি) হাসপাতালে। সূত্র মারফত জানা যায়, এক রোগীর দুই আত্মীয় কর্তব্যরত চিকিৎসকদের ওপর আচমকা আক্রমণ চালায়। ঘটনা জানাজানি হতেই হুলুস্থুল পড়ে যায় হাসপাতাল চত্বরে। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, আহত হন চিকিৎসক ডঃ লিটন দাস। তিনি একাধিক আঘাত পেয়েছেন বলে জানা যায়৷ তাঁকে চিকিৎসার জন্য জিবিপি হাসপাতালেই ভর্তি করা হয়। তবে অল্প সময়ের মধ্যে পর্যাপ্ত চিকিৎসা মেলায় বিপদমুক্ত হন তিনি।

সূত্রে জানা গিয়েছে, বিষাক্ত অ্যালকোহল সেবন করা বিমল সরকার নামক এক রোগীকে তাঁর দুই পুত্র, তপন সরকার ও বাপন সরকার, হাসপাতালে নিয়ে আসেন। জরুরি বিভাগে চিকিৎসা চলাকালীন সময়ে ওই দুই যুবক, ডঃ লিটন দাস ও ডঃ অভীক দেবের উপর অতর্কিতে হামলা চালান। এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে জরুরি বিভাগের প্রধান ডঃ শিশেন্দু ধর জানিয়েছেন, অভিযুক্তরা প্রথমে চিকিৎসকদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং পরে তাঁদের মারধর করে মাটিতে প্রায় শুইয়ে ফেলে দেয়। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার পরে অভিযুক্ত দুই ভাই হাসপাতালে তাঁদের বাবাকে ফেলে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। হাসপাতালের উপ-মেডিকেল সুপারিনটেনডেন্ট ডঃ কনক চৌধুরী জানান, দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে থানায় ইতিমধ্যেই নির্দিষ্ট অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পাশপাশি পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে ও অভিযুক্তদের ধরতে তল্লাশি চালায়।