দক্ষিণী ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির দুই মহাতারকা—একদিকে 'আরআরআর'-এর রাম চরণ, অন্যদিকে 'পুষ্পা'-র আল্লু অর্জুন। একজন মেগা-ফ্যামিলির মুখ, অন্যজন আল্লু ফ্যামিলির সেরা তারকা। দু’জনে কিন্তু খুড়তুতো ভাই, ছোটবেলা কেটেছে হায়দরাবাদের একই বাড়ির ছাদের নীচে। অথচ আজ তাঁরা প্রায় দু'দশক ধরে পরস্পরের সঙ্গে কথা বলেন না। কারণ? এক নায়িকা এবং তাঁকে ঘিরে এই দুই ভাইয়ের ত্রিভুজ প্রেম, যা বদলে দিয়েছে দুই পরিবারের সমীকরণ!

 

 

প্রায় বছর ১৮ আগে বলি অভিনেত্রী নেহা শর্মার প্রেমে পড়েন আল্লু অর্জুন। তখন নেহা তেলুগু ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন, আল্লু অর্জুনের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা নিয়ে কানাঘুষো চলছিল। এমনকী, বিয়ের পরিকল্পনাও নাকি হয়েছিল। কিন্তু ২০০৭-এ মুক্তি পেল 'চিরুতা'—রাম চরণের ডেবিউ ফিল্ম, নায়িকা নেহা শর্মা। শুটিংয়ের সময় রাম-নেহার মধ্যে প্রেমের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। এমনও খবর রটল, তাঁরা নাকি গোপনে বিয়ে করেছেন ও মধুচন্দ্রিমায় চলে গিয়েছেন!

 

এই খবর ছিল আল্লু অর্জুনের জন্য এক বিরাট ধাক্কা। প্রিয় বান্ধবীকে ভাইয়ের সঙ্গে দেখে মন ভেঙে যায় তাঁর। সেই মুহূর্ত থেকেই দুই ভাইয়ের সম্পর্কের ফাটল শুরু হয়।

 

বছর গড়ালেও সেই দূরত্ব মুছে যায়নি। ২০২৪ সালের ১৩ ডিসেম্বর 'পুষ্পা ২-এর প্রিমিয়ারে ভিড়ের চাপে এক মহিলার মৃত্যু ও তাঁর ছেলের আহত হওয়ার ঘটনায় গ্রেপ্তার হন আল্লু অর্জুন। জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর রাম চরণের অনুপস্থিতি স্পষ্ট জানিয়ে দিল—এই ঠান্ডা যুদ্ধ এখনও শেষ হয়নি।

 

 

 এক সাক্ষাৎকারে রাম চরণ গোপন বিয়ের গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “আমি তখনই বিবাহিত মানুষ। এসব মিথ্যে খবর সংসারে অশান্তি আনতে পারে। স্ত্রী উপাসনা তখন আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল, সেও জানত—সবটাই গুঞ্জন।” ২০১২ সালে উপাসনাকে বিয়ে করেন রাম, ২০২৩-এ তাঁদের কন্যাসন্তানের জন্ম হয়।

 

হৃদয়ভঙ্গের বছর কয়েক পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এক বন্ধুর বিয়েতে স্নেহার সঙ্গে প্রথম দেখা হয় অর্জুনের। সোশ্যাল মিডিয়ায় যোগাযোগ, একের পর এক গোপন ডেট—শেষ পর্যন্ত পরিবারের আপত্তি সত্ত্বেও ২০১১ সালের ১৬ জুন বিয়ে। এখন দুই সন্তানের বাবা আল্লু।

 

 

আজ রাম চরণ ও আল্লু অর্জুন দক্ষিণী সিনেমার দুই বৃহত্তম মুখ, কিন্তু তাঁদের ব্যক্তিগত সম্পর্কে জমে থাকা বরফ গলানোর ইঙ্গিত নেই। 

 

যদিও প্রায় দু'দশক পেরোতে চলল, তবু ২০০৭ সালের এই ত্রিকোণ প্রেমের গল্প রয়ে গিয়েছে দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রির গুঞ্জনের ইতিহাসে এক রোমাঞ্চকর অধ্যায় হিসেবে।