আজকাল ওয়েবডেস্ক: জনপ্রিয় অভিনেত্রী হুমা কুরেশি। বৃহস্পতিবার রাতে, আচমকাই তাঁর পরিবারে বড় বিপদ। প্রিয়জনকে হারিয়ে শোকে পাথর পরিবার।
সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী তথ্য, বৃহস্পতিবার দিল্লির নিজামুদ্দিনে বাড়ির সামনেই বিবাদে জড়িয়ে পড়েন হুমার তুতো ভাই আসিফ কুরেশি। বয়স ৪২। সেই বিবাদ প্রাথমিকভাবে থেমে গেলেও, কিছুক্ষণ পরেই একেবারে অন্য মোড় নেয়। প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য, বিবাদ মূলত গাড়ি রাখাকে কেন্দ্র করে। বৃহস্পতিবার রাত এগারোটা নাগাদ জঙ্গপুরা ভোগাল বাজার লেনে অন্যান্য দিনের মতোই আসিফ নিজের দু-চাকার গাড়ি পার্ক করেন, তাও নিজের ঘরের সামনেই।
সেখানেই বিপত্তি। গাড়ি রাখার পরেই অপর এক পক্ষের সঙ্গে বিবাদ শুরু হয় আসিফের। অভিযোগ, অপর পক্ষের একজন আচমকা ধারাল অস্ত্র দিয়ে পরপর এলোপাথাড়ি কোপ বসায় আসিফের শরীরে। তৎক্ষণাৎ তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। যদিও তাতে শেষরক্ষা হয়নি। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা আসিফকে মৃত ঘোষণা করেন। জানা গিয়েছে, আসিফ পেশায় আমিষ-খাবার সরবরাহকারী। ব্যবসার কাজ করতেন মন দিয়ে। আসিফের দু' বার বিয়ে হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে পারিবারিক তথ্য হিসেবে।
আসিফের পরিবারের অভিযোগ, আগেও ওই জায়গায় গাড়ি রাখা নিয়ে বিবাদ হয়েছে। কিন্তু সেদিন পরিস্থিতি আচমকা ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। আসিফের স্ত্রী সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছেন, ‘আমার স্বামী যখন কাজ থেকে বাড়ি ফিরে আসেন, তখন প্রতিবেশীর স্কুটারটি আমাদের বাড়ির সামনে পার্ক করা ছিল। তিনি সেটি সরিয়ে নিতে বলেন। উভয়ের মধ্যে ঝগড়া শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই প্রতিবেশী অকথ্য গালিগালাজ শুরু করে দেন। তারপরেই একটি ধারাল অস্ত্র দিয়ে একের পর এক কোপ বসান।‘
সামনে এসেছে হুমার বাবা, সেলিম কুরেসির বক্তব্যও। সংবাদ মাধ্যমে মার্মান্তিক ঘটনা প্রসঙ্গে সেলিম জানিয়েছেন, আসিফ বাড়ি ফিরে দেখেন, তাঁর বাড়ির মূল দরজার সামনে অন্যের গাড়ি রাখা। তিনি ওই গাড়ি সরিয়ে নিতে বলতেই মূলত বিবাদের সূত্রপাত। তর্ক-বিতর্কের মাঝেই আচমকা একজন আসিফের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন বলে তাঁর অভিযোগ। দোষীদের কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন সেলিম।
ঘটনায় দিল্লি পুলিশ ইতিমধ্যে দু’ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। জানা গিয়েছে আসিফ খুনে যে দু' জঙ্কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ, তাদের নাম উজ্জ্বল এবং গৌতম। বয়স ১৯ এবং ১৮। খুনে ব্যবহৃত ধারাল অস্ত্রটিও উদ্ধার করেছে পুলিশ। আসিফের পরিবার এবং কিছু প্রত্যক্ষদর্শীদের আরও তথ্য সংগ্রহে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানা গিয়েছে। শুক্রবার গ্রেপ্তার করা দুই ব্যক্তিকে আদালতে তুলবে পুলিশ। প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য তেমনটাই।

ঘটনা প্রসঙ্গে দেওয়া এক বিবৃতিতে দক্ষিণ-পূর্ব পুলিশের ডেপুটি কমিশনার হেমন্ত তিওয়ারিও দুই পক্ষের মধ্যে গাড়ি পার্কিং নিয়ে বিবাদের প্রসঙ্গ জানিয়েছেন।
তবে, আসিফ-খুন প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, গাড়ি পার্কিং নিয়ে চুলোচুলি, বিবাদ, অশান্তি এমনকি খুন দিল্লির রাস্তায় নতুন নয় একেবারেই। মাস খানেক পিছিয়ে মার্চ মাসের একটি ঘটনার দিকে নজর দিলে স্পষ্ট হবে তা। পার্কিং-এর জেরে মার্চ মাসে উত্তর-পশ্চিম দিল্লিতে দুই পক্ষের বিবাদে একজন খুন এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছিলেন।
