আজকাল ওয়েবডেস্ক: মহিলা ওয়ার্ল্ড কাপের আগে বড় ধাক্কা খেল চিন্নাস্বামী স্টেডিয়াম। রাজ্যস্তরের টি-টোয়েন্টি লিগের সব ম্যাচ সরে গেল চিন্নাস্বামী থেকে। জানা গিয়েছে, কর্ণাটকের ফ্র্যাঞ্চাইজি ভিত্তিক টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট মহারাজা টি-টোয়েন্টি ট্রফি-র চতুর্থ সংস্করণের ম্যাচগুলি বেঙ্গালুরুর এম. চিন্নাস্বামী স্টেডিয়াম থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। কর্ণাটক স্টেট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন (KSCA) পুলিশি ছাড়পত্র না পাওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ইএসপিএন ক্রিকইনফো। এই সিদ্ধান্ত এসেছে এক জরুরি রিপোর্ট প্রকাশের কয়েক সপ্তাহ পর।
জাস্টিস জন মাইকেল ডি’কুনহার কমিশন গত ৪ জুন আইপিএলের আরসিবির চ্যাম্পিয়নশিপ উদযাপনে ঘটে যাওয়া পদপিষ্টের ঘটনার তদন্ত করে জানায়, চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের নকশা ও কাঠামো ‘বৃহৎ জনসমাগমের জন্য মৌলিকভাবে অনুপযুক্ত ও নিরাপদ নয়।’ উল্লেখ্য, সেই মর্মান্তিক ঘটনায় ১১ জন প্রাণ হারান ও ৫০-এরও বেশি মানুষ আহত হন। এই ঘটনার পর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে সামনে রয়েছে মহিলা ওয়ার্ল্ড কাপ, যার অন্তর্গত পাঁচটি ম্যাচ, যার মধ্যে ভারত বনাম শ্রীলঙ্কার উদ্বোধনী ম্যাচ ৩০ সেপ্টেম্বর, চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে হওয়ার কথা রয়েছে।
জানা গিয়েছে, ১১ থেকে ২৮ আগস্ট পর্যন্ত টুর্নামেন্টটি মাইসোরের শ্রীরঙ্গপট্টণ স্নারসিংহারাজা ওয়াডিয়ার ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আয়োজন করা হচ্ছে। এই প্রতিযোগিতা পুরোপুরি দর্শকবিহীন ভাবে অনুষ্ঠিত হবে বলে আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। প্রবীণ ক্রিকেট কিংবদন্তি গুণ্ডাপ্পা বিশ্বনাথ এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘মাইসোরে আগেও টুর্নামেন্ট হয়েছে এবং এটি সবসময়ই একটি ভাল ভেন্যু ক্রিকেটের জন্য। কর্ণাটক ক্রিকেটের একটি সমৃদ্ধ অঞ্চল মাইসোর। টুর্নামেন্টের নাম যেহেতু মহারাজা ট্রফি, তাই এটি সত্যিই একটি উপযুক্ত স্থান’।
প্রথম দিন (১১ আগস্ট) অনুষ্ঠিত হবে গুলবার্গা মিস্টিকস বনাম মঙ্গলুরু ড্রাগনস (বিকেলে), এবং এরপর সন্ধ্যায় গতবারের চ্যাম্পিয়ন মাইসোর ওয়ারিয়র্স বনাম বেঙ্গালুরু ব্লাস্টার্স (গতবারের রানার্স-আপ)। পুরো লিগ পর্যায় জুড়ে ডাবল-হেডার অর্থাৎ একদিনে দুটো করে ম্যাচ চলবে। ২৬ আগস্ট থেকে প্লে-অফ এবং ২৮ আগস্ট ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে। এই বছরের আসরে অংশ নিচ্ছে মোট ছয়টি দল, মাইসোর ওয়ারিয়র্স (ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন), বেঙ্গালুরু ব্লাস্টার্স, হুবলি টাইগার্স, গুলবার্গা মিস্টিকস, শিবমোগা লায়ন্স, মঙ্গলুরু ড্রাগনস। টুর্নামেন্টে অংশ নিচ্ছেন কর্ণাটকের শীর্ষ ক্রিকেটাররা, যাদের মধ্যে রয়েছেন প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ, করুণ নায়ার, মায়াঙ্ক আগরওয়াল, দেবদূত পাড়িক্কল, অভিনব মনোহর, শ্রেয়াস গোপাল ও মণীশ পাণ্ডে।
উল্লেখ্য, চলতি বছর বিরাট কোহলির রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হয়। তার পরের দিনই ঘটে যায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। দলের সেলিব্রেশনের সময় স্টেডিয়ামের বাইরে পদপিষ্ট হয়ে ১১ জনের মৃত্যু হয়। প্রাথমিক ভাবে আহতের সংখ্যা ৪৭ বলে জানা গিয়েছিল। মর্মান্তিক ঘটনায় স্বতোঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ করে কর্নাটক হাইকোর্ট। তারপর থেকেই ঘটনার দায় ঠেলাঠেলি চলছে কর্নাটক সরকার এবং কর্নাটক ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের মধ্যে। এই পরিস্থিতিতে কমিশনের এই রিপোর্টের পর সবটাই বিশ বাঁও জলে। কারণ কমিশন স্পষ্ট করে দিয়েছে, যে স্টেডিয়ামে ভিড় সামলানো, আপৎকালীন পদক্ষেপ করা এবং যানজট নিয়ন্ত্রণে রাখার দক্ষতা থাকবে, তাদেরই এই ধরনের বড় ইভেন্ট আয়োজন করা উচিত।
