আজকাল ওয়েবডেস্ক: মহারাষ্ট্রের জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র লোনাভলা। এখানকার ভুষি ড্যামে এক মারাত্মক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার ভিডিও সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, এক ব্যক্তি ড্যামের কাছে আবদ্ধ জলাশয়ে সাঁতার কাটছেন, আর ঠিক তার পাশেই অন্য একজন প্রকাশ্যে সেই জলে মূত্রত্যাগ করছেন। ঘটনাটি নেটমাধ্যমে চরম ক্ষোভ ও উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা ভুষি ড্যাম বর্ষাকালে বহু পর্যটকের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে। এখানে জলের ধারা, সিঁড়ি বেয়ে গড়িয়ে পড়া বৃষ্টির জল ও মনোরম দৃশ্য সাধারণত মানুষকে এক অপূর্ব শান্তিপূর্ণ অভিজ্ঞতা দেয়। কিন্তু আচমকা এই ভিডিও প্রকাশের পর থেকেই অনেকেই এখন এমন উন্মুক্ত জলাধারে যাওয়ার বিষয়ে ভাবতে বাধ্য হচ্ছেন।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ড্যামের সিঁড়ির কাছাকাছি সরু একটি স্রোত বয়ে যাচ্ছে। সেখানে এক ব্যক্তি আনন্দে সাঁতার কাটছেন। ক্যামেরা সামান্য ঘুরতেই চোখ কপালে সবার৷ একই ফ্রেমে আরেকজন প্রবেশ করেন যিনি প্রকাশ্যে ওই একই জলে মূত্রত্যাগ করছেন। ভিডিও ধারণকারী ব্যক্তি এই দৃশ্য দেখে সাঁতার কাটতে থাকা ব্যক্তিকে সতর্ক করে দেন।
ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হয় এই ক্যাপশন দিয়ে, 'সামান্যও মানবিক বোধ নেই! একজন স্নান করছেন, অন্যজন সেই জলে প্রস্রাব করছেন। এই কারণেই আমি আর সুইমিং পুল বা এমন প্রাকৃতিক জলধারায় যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি।'
ভাইরাল হওয়া এই ভিডিও ইতিমধ্যেই ৬ লক্ষেরও বেশি ভিউ পেয়েছে। একইসঙ্গে প্রচুর মন্তব্য এসেছে। অনেকেই একাধারে অবাক ও হতাশ হয়েছেন এই ধরণের ঘৃণ্য আচরণ দেখে। একজন মন্তব্য করেছেন, 'নাগরিক সচেতনতা অবিশ্বাস্যভাবে নিম্নস্তরে নেমে গিয়েছে।' আরেকজন লিখেছেন, 'এমন ঘটনা বহুবার দেখেছি, যেখানে পাবলিক টয়লেটের নোংরা জল এমন ঝর্না বা নদীতে ফেলা হয়। বাইরের কোনও জলাধার কখনওই পুরোপুরি বিশ্বাস করা যায় না, যতই পরিষ্কার দেখাক না কেন।'
সূত্রে জানা গিয়েছে ঘটনাটি অন্যান্য পর্যটকদের উপস্থিতিতেই ঘটেছে। এর জেরে আরও সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। কেউ লিখেছেন, 'মানুষজন, বিশেষ করে মহিলারা সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখনও এমন কাজ!' আরেকজন বলেছেন, 'ঘৃণ্য! একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।'
আরও পড়ুনঃ ভয়াবহ হড়পা বানের তাণ্ডব উত্তরকাশীতে! নিখোঁজ শ'য়ে শ'য়ে মানুষ, চলছে উদ্ধারকাজ
আরও একজন ব্যবহারকারী ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন, 'এই দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার এটাও একটা কারণ।' অপর এক ব্যক্তি মন্তব্য করেছেন,'এই একই নোংরা আচরণ তারা বিদেশেও নিয়ে যায়, আর যখন সেসব দেশের নাগরিকরা আপত্তি তোলে, তখন ‘বর্ণবিদ্বেষ’ বলে চিৎকার করে। এটা শুধু বিদেশে নিয়ে যাওয়ার বিষয় নয়। এই ডিজিটাল যুগে এইসব ভিডিও বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে এবং আমাদের দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করে।'
এর আগেও মার্চ মাসে পুনের এক ট্রাফিক জংশনে বিএমডব্লিউ গাড়ি থেকে নেমে এক ব্যক্তি প্রকাশ্যে প্রস্রাব করেছিলেন। সেটিও ভিডিও আকারে ভাইরাল হয় এবং তাঁকে এই ঘটনার জেরে গ্রেপ্তার করা হয় পাশের সাতারা জেলায়। জানা গিয়েছে, পরে ওই ব্যক্তি প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে একটি ভিডিও প্রকাশ করেন এবং বলেন, তিনি নিজের আচরণে লজ্জিত।
