আজকাল ওয়েবডেস্ক: একাধিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, যৌনতা শুধু মানসিক তৃপ্তির উৎস নয়, এটি ভালো স্বাস্থ্যের সঙ্গেও নিবিড়ভাবে জড়িত। নিয়মিত যৌনসম্পর্ক বজায় রাখলে হৃদয় সুস্থ থাকে, স্তন ও প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে, ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং হতাশার সম্ভাবনাও হ্রাস পায়। তবে আশ্চর্যের বিষয়, সাম্প্রতিক এক গবেষণা বলছে, আগের তুলনায় আমেরিকানরা এখন অনেক কম যৌনতা উপভোগ করছেন।
যৌনতা কমেছে, বিশেষত দম্পতিদের মধ্যে
"আর্কাইভস অফ সেক্সুয়াল বিহেভিয়ার" নামক প্রখ্যাত একটি জার্নালে প্রকাশিত গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, ২০১০ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে আমেরিকানরা প্রতিবছর গড়ে ৯ বার কম যৌনসম্পর্ক করেছেন, যা ২০০০ থেকে ২০০৪ সালের তুলনায় একটি স্পষ্ট পতন। এই হ্রাস সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে সেই দম্পতিদের মধ্যে, যারা বিবাহিত এবং একই ছাদের নিচে বসবাস করছেন। তাদের যৌনতার সংখ্যা প্রতি বছর ১৬ বার কমেছে।
কেন কমছে যৌনতা?
এই প্রবণতার পিছনে রয়েছে একাধিক কারণ। প্রথমত, কর্মব্যস্ততা ও দৈনন্দিন দায়িত্ব সামলাতে গিয়ে সময়ের অভাব দেখা দিচ্ছে। দ্বিতীয়ত, ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা এবং বিনোদনের অসংখ্য বিকল্প এখন অনেককেই অন্যদিকে আকৃষ্ট করছে। ফলে ব্যক্তিগত সম্পর্ক ও যৌনজীবন উপেক্ষিত হচ্ছে। তবে এ কথা বলার সময় এখনও আসেনি যে যৌনতা মানুষের জীবনে গুরুত্ব হারিয়েছে। তথ্য অনুযায়ী, এক জন প্রাপ্তবয়স্ক আমেরিকান গড়ে বছরে ৫৪ বার যৌনসম্পর্কে লিপ্ত হন — অর্থাৎ প্রতি সপ্তাহে একবারের কিছু বেশি। বিবাহিত দম্পতিদের ক্ষেত্রে এই হার ৫১ বার। গবেষকরা জানাচ্ছেন, যৌনতার সংখ্যার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো — উভয় পক্ষই তাতে সন্তুষ্ট কিনা। যৌনতা সপ্তাহে একবার হলেও, যদি উভয়ের মধ্যে মানসিক ও শারীরিক তৃপ্তি বজায় থাকে, তাহলে তা সম্পর্কের জন্য যথেষ্ট উপকারী।
আরও পড়ুন: প্রেমিকাকে চরম সুখ দিতে গিয়ে যা করলেন কামে পাগল হয়ে যাওয়া যুবক! জানলে শিউরে উঠবেন
‘সপ্তাহে একবার যৌনতা’ই সর্বোত্তম: কানাডার গবেষণা
কানাডার ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায় জানা গেছে, সপ্তাহে একবার যৌনতা একটি সম্পর্ককে সুখী রাখার জন্য পর্যাপ্ত।
যদিও সপ্তাহে একাধিকবার যৌনতা করলে সাময়িক তৃপ্তি এবং শরীরের ওপর কিছু বাড়তি ইতিবাচক প্রভাব পড়ে, তবু মানসিক সন্তুষ্টির দিক থেকে ‘সপ্তাহে একবার’ এবং ‘সপ্তাহে তিনবার’ যৌনতার মাঝে বড় কোনও ফারাক নেই।
যৌনতা কমে গেলে কী করবেন?
যৌনতার হার কমে গেলে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। গবেষকরা বলছেন, এটি একটি প্রাকৃতিক পরিবর্তন হতে পারে, তবে সঙ্গীর সঙ্গে খোলাখুলি আলোচনা করে সমাধান খুঁজে নেওয়াই শ্রেয়। নতুন পদ্ধতি, পরিবেশ পরিবর্তন, একে অপরের প্রতি আগ্রহ জাগিয়ে তোলা— এসব কিছুই যৌনজীবনে নতুন উদ্দীপনা আনতে পারে। একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা হল: যৌনতার ঘনত্বের চাইতে বেশি জরুরি — সম্পর্কের আন্তরিকতা, সম্মতি ও পারস্পরিক বোঝাপড়া।
কী বলছে গবেষণা?
২০০০–২০০৪ এর তুলনায় ২০১০–২০১৪ তে যৌনতা কমেছে বছরে গড়ে ৯ বার। বিবাহিত দম্পতিদের ক্ষেত্রে এই পতন ১৬ বার। গড়ে একজন প্রাপ্তবয়স্ক বছরে ৫৪ বার যৌনতা করেন। সপ্তাহে একবার যৌনতা মানসিক শান্তি ও সুখের জন্য যথেষ্ট। যৌনতা কমে গেলে খোলামেলা আলোচনা ও নতুনত্ব ফিরিয়ে আনার প্রয়াস জরুরি যৌনতা একটি স্বাভাবিক ও স্বাস্থ্যকর জীবনধারার অংশ। প্রযুক্তি ও ব্যস্ততার যুগে এটি হয়তো কিছুটা চাপের মুখে, তবে সচেতনতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার মাধ্যমে যৌন জীবনকে আগের মতই আনন্দময় রাখা সম্ভব। এ বিষয়ে মনোবিদ এবং যৌনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন— “যৌনতা হলো যোগাযোগের একটি রূপ। আপনি যদি আপনার সঙ্গীর সঙ্গে অন্য যেকোনো বিষয়ে কথা বলতে পারেন, তবে যৌনতাও একটি আলোচনার বিষয় হওয়া উচিত।”
