আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ঘিরে আবারও সাংসারিক অশান্তি চরম পর্যায়ে। বধূর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জেরে, এবার শুধু স্বামী নন, গোটা পরিবারের সদস্যদের জীবন শেষ হয়ে গেল। একসঙ্গে সকলেই আত্মঘাতী হলেন। ঘর থেকে ওই পরিবারের সকল সদস্যের দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। 

 

জানা গেছে, স্বামীর ছোটবেলার বন্ধুর সঙ্গেই বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন এক যুবতী। বিষয়টি প্রথমে টের পেয়েছিল তাঁর মেয়ে। আপত্তিকর অবস্থায় বাবার বন্ধুর সঙ্গে মাকে দেখে ফেলেছিল সে। ঘটনার ভিডিও তুলে রেখেছিল। সেই ভিডিও দেখিয়েছিল বাবাকে। এরপরই গোটা পরিবার জানতে পারে বিষয়টি। 

 

বধূকে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক থাকে বেরিয়ে আসার জন্য অনুরোধ করেছিলেন স্বামী। কিন্তু তাতে নারাজ ছিলেন বধূ। সেই সম্পর্ক ঘিরে অশান্তির মাঝেই ওই পরিবারের চারজন সদস্য একসঙ্গে আত্মহত্যা করলেন। সকলের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। 

 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের সাগর জেলায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতেরা হলেন মনোহর লোধি (৪৫), তাঁর মা ফুলরানি (৭০), মেয়ে শিবানী (১৮) ও ১৬ বছরের এক কিশোর। ২৫ জুলাই গভীর রাতে বাড়িতেই চারজন সদস্য একসঙ্গে আত্মঘাতী হন। তাঁদের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়ে তদন্ত জারি রেখেছে পুলিশ। 

 

আরও পড়ুন: 'ফোন কিনে দেবে না?', বারবার চাইলেও গলল না মায়ের মন, মনখারাপে পাহাড়ে পৌঁছেই যা করল কিশোর

 

পুলিশ আরও জানিয়েছে, মনোহরের ছোটবেলার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন সুরেন্দ্র। মনোহরের বাড়িতে তাঁর নিত্য যাতায়াত ছিল। সেই সুযোগেই মনোহরের স্ত্রী দ্রৌপদীর সঙ্গে সুরেন্দ্রর ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। ক্রমেই প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তাঁরা। বিষয়টি গোপন ছিল। মনোহরের অবর্তমানে প্রায়ই দ্রৌপদীর সঙ্গে দেখা করতে আসতেন সুরেন্দ্র। 

 

জানা গেছে, ফাঁকা বাড়িতে প্রায়ই তাঁরা যৌনতায় লিপ্ত হতেন। দিন কয়েক আগেই দু'জনকে একসঙ্গে অশ্লীল অবস্থায় দেখে ফেলেন দ্রৌপদীর মেয়ে। সেই মুহূর্তের ভিডিও তুলে রেখেছিলেন। এরপর সেই ভিডিও মনোহরকে দেখান শিবানী। এমন বিশ্বাসঘাতকতার পরে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন মনোহর। ঘটনাটি কিছুদিনের মধ্যেই মনোহরের মা জানতে পারেন। যা ঘিরেই অশান্তি শুরু হয়। মা ও ছেলে পরিবারের সুনাম নষ্ট হওয়ার আশঙ্কাতেও ভেঙে পড়েছিলেন। 

 

বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের বিষয়ে প্রথমেই দ্রৌপদীর সঙ্গে আলোচনা করেন মনোহর। এরপর সেই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার জন্য অনুরোধ করেন তাঁকে। কিন্তু সম্পর্কটি ভাঙতে নারাজ দ্রৌপদী।‌ মনোহরকে সাফ জানিয়ে দেন, সুরেন্দ্রর সঙ্গে সম্পর্ক তিনি ভাঙবেন না। যদি এই সম্পর্ক ঘিরে অশান্তি হয়, তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে পণের মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে দেবেন।

 

এরপর সুরেন্দ্রর সঙ্গে কথা বলেন মনোহর। সুরেন্দ্রকেও অনুরোধ করেন, দ্রৌপদীর সঙ্গে সম্পর্কটি ভেঙে ফেলার জন্য। কিন্তু সুরেন্দ্র রাজি ছিলেন না। স্ত্রীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ও মিথ্যে মামলার হুমকির জেরে চরম পদক্ষেপ করেন মনোহর। ছেলে, মেয়ে ও মাকে নিয়ে আত্মঘাতী হন তিনি। পুলিশ ইতিমধ্যেই দ্রৌপদী ও সুরেন্দ্রকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁরা বর্তমানে পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন। ঘটনাটি ঘিরে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। এমনকী আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগেও মামলা রুজু করেছে পুলিশ। তারা জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত জারি রয়েছে। অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্ত চলছে।