আজকাল ওয়েবডেস্ক:বিহারে বিশেষ ভোটার তালিকা সংশোধনের প্রক্রিয়া (Special Intensive Revision - SIR) নিয়ে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। এই আবহেই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন রাষ্ট্রীয় জনতা দলের নেতা তথা প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব। তাঁর অভিযোগ, ভোটার তালিকা থেকে নিজের নাম বাদ পড়েছে। নির্বাচন কমিশনের তরফে সেই দাবি নাকচ করে তেজস্বীকেই উল্টে জবাবদিহি করতে বলা হয়েছে।
শনিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে তেজস্বী দাবি করেন, কমিশনের মোবাইল অ্যাপে নিজের ইপিক নম্বর (EPIC No: RAB2916120) বসিয়ে দেখার পর “No Records Found” লেখা ওঠে। তিনি বলেন, “আমার নিজের নাম যদি না থাকে, তাহলে আমি নির্বাচনই বা কিভাবে লড়ব?”
এই মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নির্বাচন কমিশন একটি বিবৃতি দিয়ে জানায়, তেজস্বী যাদবের আসল ভোটার পরিচয়পত্র নম্বর RAB0456228, যা পাটনার বিহার পশুপালন বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি বিল্ডিংয়ের অধীনে ২০৪ নম্বর বুথে, ভোটার তালিকার ৪১৬ নম্বর সিরিয়ালে স্পষ্টতই তালিকাভুক্ত।
এছাড়াও কমিশনের তরফ থেকে তেজস্বীকে একটি কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, তাঁর সাংবাদিক সম্মেলনে প্রদত্ত EPIC নম্বরটি (RAB2916120) সরকারি রেকর্ডে নেই। কমিশনের বক্তব্য, “আপনার প্রদর্শিত কার্ডের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য অনুগ্রহ করে সেই কার্ডের মূল কপি এবং বিস্তারিত তথ্য পেশ করুন।”
এই ঘটনার পর বিজেপি প্রবল আক্রমণে নামে। দলের মুখপাত্র সাম্বিত পাত্র বলেন, “তেজস্বী যাদব কি শপথ নিয়ে মিথ্যে বলেছেন? তাঁর ২০২০ সালের নির্বাচনী হলফনামায় যে ভোটার আইডি নম্বর ছিল, তার সঙ্গে শনিবার প্রদর্শিত নম্বরটি মিলছে না। তাহলে কি তিনি দুইটি ভোটার কার্ড রেখেছেন?” পাত্র একে “শাস্তিযোগ্য অপরাধ” বলে উল্লেখ করেন।
অন্যদিকে, RJD এবং কংগ্রেস এই সমস্ত ঘটনাকে পরিকল্পিত "রাজনৈতিক চক্রান্ত" বলে দাবি করেছে। বিরোধীদের অভিযোগ, বিশেষ সংশোধনী অভিযানের নাম করে বিহারের সংখ্যালঘু ও পিছিয়ে পড়া শ্রেণির লক্ষাধিক মানুষের নাম ইচ্ছাকৃতভাবে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। বিরোধীদের মতে, ৬৫ লক্ষ নাম মুছে ফেলার নেপথ্যে রয়েছে "বিরোধী ভোটব্যাঙ্কে ভাঙন ধরানো"।
এই বিষয়ে তেজস্বী যাদব রবিবার বলেন, “এটি শুধু আমার ব্যক্তিগত প্রশ্ন নয়। লক্ষ লক্ষ গরিব, দলিত ও সংখ্যালঘুদের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। বিহারে একপ্রকার প্রশাসনিক জাতিস্মারক অভিযান চালানো হচ্ছে।”
সংসদে ও রাজ্য জুড়ে চলা আন্দোলনের মাঝে এই ঘটনা রাজনীতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে। তেজস্বীর এই অভিযোগে আগামী দিনে বিহারে রাজনৈতিক মেরুকরণ আরও তীব্র হতে পারে বলে রাজনৈতিক মহলের অভিমত।
