আজকাল ওয়েবডেস্ক: মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে খুন হন সদ্য বিবাহিত ব্যবসায়ী, ইন্দোরের বাসিন্দা রাজা রঘুবংশী। যে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত তাঁর স্ত্রী সোনম রঘুবংশী। প্রেমিক রাজার সঙ্গে মিলে স্বামীকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি নিজেই। রাজা হত্যাকাণ্ড ঘিরে ব্যাপক শোরগোল পড়েছিল দেশজুড়ে। এবার সেই হত্যাকাণ্ডের কাহিনি অবলম্বনে তৈরি হচ্ছে সিনেমা।
চলতি সপ্তাহেই রাজা রঘুবংশীর ভাই শচীন রঘুবংশী ইন্দোরের বাড়িতে সাংবাদিক বৈঠকে এই ঘোষণা করেন। শচীন জানিয়েছেন, কীভাবে রাজাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল, সেই সত্যিটা এবার আসছে বড়পর্দায়। তৈরি হচ্ছে সিনেমা। নামও ঘোষণা করেছেন শচীন। রাজার ভাই জানিয়েছেন, সিনেমার নাম 'হানিমুন ইন শিলং'।
পরিচালককে সিনেমা বানানোর অনুমতি দিয়েছে রাজার পরিবার। শচীন জানিয়েছেন, 'যদি রাজা রঘুবংশী হত্যাকাণ্ডটি বড়পর্দায় না আসে, সাধারণ মানুষ জানতেই পারবেন না কোনটি ঠিক, কোনটা ভুল!' রাজার আরও এক ভাই বীপিন জানিয়েছেন, মেঘালয়ের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল এই ঘটনার পর। তা ঘিরেও মানুষের ভুল ধারণা ভাঙবে এই সিনেমা।
জানা গেছে, 'হানিমুন ইন শিলং' সিনেমাটি বানাচ্ছেন পরিচালক এসপি নিমবাওয়াত। পরিচালক জানিয়েছেন, সিনেমার স্ক্রিপ্ট ইতিমধ্যেই লেখা হয়ে গেছে। বলিউডের অভিনেতা, অভিনেত্রীদের সঙ্গেও কথাবার্তা চলছে। সিনেমার ৮০ শতাংশ শুটিং হবে ইন্দোরে এবং ২০ শতাংশ শুটিং হবে মেঘালয়ে। কীভাবে ভয়ঙ্কর প্রতারণার শিকার হয়ে নির্মমভাবে খুন হন রাজা, সেই গল্প সিনেমায় ফুটিয়ে তোলা হবে।
প্রসঙ্গত, গত ১১ মে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন রাজা ও সোনম। বিয়ে করেই ২০ মে মধুচন্দ্রিমায় মেঘালয়ে গিয়েছিল নবদম্পতি। ২৩ মে থেকে তাঁরা নিখোঁজ ছিলেন। ২ জুন রাজার দেহ উদ্ধার হয় মেঘালয়ের পাহাড়ি খাদ থেকে। ৮ জুন গভীর রাতে উত্তরপ্রদেশের গাজিপুর থেকে সোনম গ্রেপ্তার হন। পুলিশকে রাজাকে খুনের পরিকল্পনার কথা সোনম স্বীকার করেছেন বলেও জানা গেছে।
এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, দেখাশোনা করে বিয়ে হয়েছিল সোনম ও রাজের। কিন্তু বিয়ের পরেই শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হননি তাঁরা। সোনম শর্ত দিয়েছিলেন, কামাখ্যা মন্দিরে পুজো দিয়ে তবেই শারীরিক মিলন সম্ভব। সেই কারণেই গুয়াহাটিতে পৌঁছে কামাখ্যা মন্দিরে পুজো দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন।
রাজা রঘুবংশীকে অনিচ্ছা সত্ত্বেও বিয়ে করতে হয়েছিল। শুধুমাত্র পরিবারের চাপে। মনে মনে রাজ কুশওয়াহাকেই ভালবাসতেন সোনম রঘুবংশী। কিন্তু প্রেম পরিণতি না পাওয়ায়, পরিবারকে একের পর এক হুমকি দিয়েছিলেন। জানিয়েছিলেন, রাজাকে বিয়ে করলেও, এর জন্য ভয়ঙ্কর ফল ভুগতে হবে সবাইকে।
মেঘালয় পুলিশ জানিয়েছে, ২৪ বছরের সোনম রঘুবংশী ও ২১ বছরের রাজ এই হত্যাকাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত। সূত্রের খবর, রাজের সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল সোনমের। মেঘালয়ে ঘুরতে যাওয়ার পর রাজকে হোয়াটসঅ্যাপে লাইভ লোকেশন পাঠিয়েছিলেন তিনি। এই হত্যাকাণ্ডে আরও একাধিক তরুণ জড়িত রয়েছে। সোনম সহ অভিযুক্তদের কয়েকদিনের মধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডটি এমনভাবে সোনম ও রাজ সাজিয়েছিলেন, যেন দেখলে মনে হবে রাজাকে অপহরণ করে খুন করা হয়েছে।
