আজকাল ওয়েবডেস্ক: স্থানীয় সময় সোমবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্ক সিটির ম্যানহ্যাটনে এক বহুতলে হঠাৎই বন্দুকবাজের হামলা। শহরের মধ্যে ভিড় এড়িয়ে কীভাবে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ওই ব্যক্তি বহুতলে ঢুকে পড়লেন তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। জানা গিয়েছে, ওই বহুতলের মধ্যে একটি উঁচু দালানে দাঁড়িয়ে পরপর গুলি চালান ওই বন্দুকবাজ। সেই গুলিতে পাঁচজন নিহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। যাঁদের মধ্যে একজন পুলিশ অফিসারও রয়েছেন। এছাড়াও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। হামলার পর ওই ব্যক্তি নিজেকে গুলি করে আত্মঘাতী হন বলে খবর মিলেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে। জানা গিয়েছে, ২৭ বছর বয়সী ওই বন্দুকধারীর নাম শেন তামুরা। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে এক স্কাইস্ক্র্যাপারে তামুরা নামের ওই ব্যক্তি রাইফেল নিয়ে স্থানীয় সময় সোমবার সন্ধ্যা ৬:৩০টার সময় ৪৪ তলা বিল্ডিংটিতে ঢুকে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, ওই বিল্ডিংটিতে ব্ল্যাকস্টোন, কেএমপিজি, ডয়চা ব্যাঙ্ক এবং ন্যাশনাল ফুটবল লিগের সদর দপ্তর অবস্থিত। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, কালো সানগ্লাস পরে, হাতে রাইফেল নিয়ে তামুরা নামের ওই ব্যক্তি ৩৪৫ পার্ক অ্যাভিনিউয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। নিউইয়র্ক সিটির পুলিশ কমিশনার জেসিকা ডিশ এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে জানান, ‘এই মুহূর্তে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বন্দুকধারীকে নিরস্ত করা হয়েছে’। জানা গিয়েছে, যে বহুতলে হামলা চালানো হয় সেটি নিউ ইয়র্কের অন্যতম বড় রিয়েল এস্টেট কোম্পানি রুডিন ম্যানেজমেন্টের মালিকানাধীন। এখানেই রয়েছে আয়ারল্যান্ড কনস্যুলেট জেনারেলের কার্যালয়ও। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, আতঙ্কিত কর্মীরা অফিসের দরজা সোফা ও চেয়ার দিয়ে ব্যারিকেড করে আত্মরক্ষার চেষ্টা করছেন। অন্য এক ভিডিওতে দেখা যায়, লাইন করে লোকজন মাথার ওপর হাত তুলে বাইরে বেরিয়ে আসছেন। জানা যায়, নিউ ইয়র্ক ফায়ার ডিপার্টমেন্ট সন্ধ্যা ৬:৩০টার দিকে প্রথম গুলি চালানোর ঘটনার খবর পায়, এরপরই বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
নিউইয়র্ক পুলিশ এবং মেয়র এরিক অ্যাডামস সাধারণ মানুষকে পার্ক অ্যাভিনিউ এবং লেক্সিংটন অ্যাভিনিউর মাঝের ইস্ট ৫২ স্ট্রিট এলাকা এড়িয়ে চলার অনুরোধ জানান। নিউ ইয়র্কের মেয়র পদপ্রার্থী জোহরান মামদানি, এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে লেখেন, ‘ম্যানহ্যাটনের এই ভয়াবহ গুলির ঘটনার খবর শুনে আমি শোকাহত। নিহতদের পরিবার, আহতদের এবং আশঙ্কাজনক অবস্থায় থাকা এনওয়াইপিডি অফিসারদের জন্য প্রার্থনা করছি’। ঘটনার পর তামুরার পরিচয় জানতে গিয়ে অবাক হতে হয়েছে পুলিশকে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তামুরার বিরুদ্ধে এর আগে কোনও উল্লেখযোগ্য অপরাধমূলক রেকর্ড ছিল না। তামুরার জন্ম হাওয়াই-তে হলেও পরে সে লাস ভেগাসে চলে আসে। সিএনএনের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, নেভাদায় একটি মেয়াদোত্তীর্ণ প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটরের লাইসেন্স ছিল ওই ব্যক্তির। এছাড়াও তিনি একসময় প্রতিযোগিতামূলক ফুটবল খেলোয়াড় ছিলেন। কিন্তু নিউইয়র্ক শহরের কেন্দ্রস্থলে ঘটে যাওয়া এই হামলা ফের একবার প্রশ্ন তুলে দিল নিরাপত্তা নিয়ে।
